Pages

Free counters!
FollowLike Share It

Saturday 4 October 2014

মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন কলকাতায় আওয়ামী লীগ নেতারা যা করতেন-ইতিহাসের সাক্ষী

মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন কলকাতায় আওয়ামী লীগ নেতারা যা করতেন-ইতিহাসের সাক্ষী

কোলকাতার ৫৮ বালিগঞ্জ বাড়িটি ছিল প্রবাসী সরকারের আবাসিক কার্যালয়। ওই ভবনেই বসবাস ও দাপ্তরিক কাজ করতেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ এবং অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি নজরুল ইসলাম। প্রয়োজনের তুলনায় ছোট এ বাড়িটিতে সারাক্ষন “জয় বাংলা”র লোকের ভিড় লেগেই থাকত। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা আওয়ামীলীগ দলীয় এমপি, নেতা, আমলা, কর্মী, আত্মীয়স্বজন, আমত্য, চামচা সবার জন্য এ বাড়িটি ছিল অবারিত। ঢালাওভাবে ভাত-গোশত দিয়ে ভুড়ি ভোজ এমনকি নিশি যাপনেও কোনো কার্পণ্য ছিল না। অভ্যাগতদের প্রত্যেকের হাতে দেখা যেত একটা নতুন ব্রিফকেস কিংবা ছোট এট্যাচী, কোন কোন নেতার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ। আহার নিদ্রা, এমনকি প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদনের সময়ও এসব ব্যাগ কাছছাড়া করতো না কেউ। এমন একটি ঘটনায় সেনা কর্মকর্তারা একজন অতিথির ব্রিফকেস পরীক্ষা করে ১২ লাখ পাকিস্তানী রুপী (বর্তমান মূল্য প্রায় ৪৩ কোটি টাকা) উদঘাটিত হয়। ঘটনার আকস্মিকতায় কর্নেল ওসমানীর জেরার মুখে ভদ্রলোকটি টাকার কথা চেপে যান। পরে উদ্ধারকৃত বিপুল টাকা প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে জমা করে দেয়া হয়। মূলত: দেশ ছাড়ার আগে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা পূর্ব বাংলার ব্যাংক ট্রেজারীগুলো সব উজাড় করে অর্থ ও সোনাদানা নিয়েই পাড়ি জমান ভারতবর্ষে। আহমদ ছফা এ জাতীয় আরেকটি ঘটনার কথা বর্ণনা করেন এভাবে, “এই সোনা তো বাংলাদেশের জনগনের সম্পত্তি।…যে তিনজন আমরা সোনা নিয়ে এসেছিলাম তারমধ্যে একজন এমপি’র আপন ছোট ভাই। আরেকজন স্থানীয় আওয়ামীলীগ প্রেসিডেন্টের শালা। তারা এখন কোথায় আছে কি করছে, কিছু জানিনে। অথচ এদিকে শুনতে পাচ্ছি সেই সোনা ইতোমধ্যে ভাগভাটোয়ারা হয়ে গেছে।.....সত্যিই তো এরকম একজন মানুষ দেড় মন সোনা বয়ে নিয়ে এসেছে শুনলে এখনকে বিশ্বাস করবে? (অলাতচক্র, পৃষ্ঠা ৬২)।

বিভিন্ন শরনার্থী শিবির পরিচালনার দায়িত্বে ভারত সরকারের লোকের পাশাপাশি আওয়ামী নেতারাও ছিলেন। এসব নেতাদের বেশীরভাগই পরিবার পরিজন সমেত বেশ আয়েশী জীবন যাপন করতেন। এমনকি অভিজাত দোকান, সুরিখানা ও নাইটক্লাবগুলো জয়বাংলার লোকে ছিল জমজমাট। তখন পশ্চিম বাংলায় “জয় বাংলা”র লোক মানেই বাড়তি খাতির। এ নিয়ে ৮নং সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল লিখেছেন,“আমি যখন তাদেরকে দেখেছি কোলকাতার অভিজাত এলাকার হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে জমজমাট আড্ডায় ব্যস্ত। একাত্তরের সেই গভীর বর্ষায়ত দিনরাতে কোলকাতার অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোতে বসে গরম কফির কাপে চুমুক দিতে গিয়ে হাটুতক কাদা জলে ডোবান্ত মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শিবিরগুলোতে অবস্থানরত হাজার হাজার তরুনের বেদনাহত চেহারাগুলো তারা একবারও দেখেছে কিনা তা আজও আমার জানতে ইচ্ছা করে। আমার জানতে ইচ্ছে করে কোলকাতার পার্ক স্ট্রীটের অভিজাত নাইট ক্লাবগুলোতে ‘বীয়ার’ হুইসকি পানরত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের মনোমুকুরে একবারও ভেসে উঠেছে কিনা সেই গুলিবিদ্ধ কিশোর কাজলের কথা যে মৃত্যুর পূর্বক্ষণ পর্যন্ত চীৎকার করে ঘোষণা করেছে ‘জয় বাংলা’। আমার জানতে ইচ্ছে করে আরো আরো অনেক কিছু। কিন্তু জানতে ইচ্ছে করলেই তো আর জানা যায় না।” কলকাতা ও আগরতলার নাইট ক্লাব ও বেশ্যালয়ে প্রবাসী নেতাদের অনেকেরই নিয়মিত আসা যাওয়া ছিল। প্রবাসী সরকারের একজন মন্ত্রী সোনাগাছির বেশ্যালয়ে মারামারি করে কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে অবশেষে মুজিবনগর সরকারের কাছে হস্তান্তরিত হয়। আহমদ ছফা ঘটনাটিকে এভাবে বর্ণনা করেছেন, “যে সকল মানুষকে দেশে থাকতে শ্রদ্ধা করতাম, কলকাতায় অনেকের আচরণ দেখে সরল বাংলায় যাকে বলে কিংকর্তব্যবিমুঢ়- তাই হতে হচ্ছে। এখনও তোমরা স্যার ডাকছ তার বদলে শালা বললেও অবাক কিছু ছিল না। এখানকার একটা সাপ্তাহিক খবরটা ছেপেছে। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের একজন মন্ত্রী নাকি সোনাগাছিতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। জানেন তো স্যার, সোনাগাছি কি জন্য বিখ্যাত?…পুলিশ অফিসারের জেরার মুখে ভদ্রলোককে কবুল করতেই হল, তিনি ভারতে প্রবাসী সরকারের একজন মন্ত্রী। পুলিশ অফিসার তখন বললেন, তাহলে স্যারের গুডনেমটা বলতে হয়। মন্ত্রী বাহাদুর নিজের নাম প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে ভেরিফাই করে দেখে যে বক্তব্য সঠিক। পুলিশ অফিসারটি দাঁতে জিভ কেটে বললেন, স্যার কেন মিছিমিছি সোনাগাছির মত খারাপ জায়গায় নিজেকে নাহক ঝুট-ঝামেলার মধ্যে পড়বেন। আর ভারত সরকারের আতিথেয়তার নিন্দে করবেন। আগে ভাগে আমাদের স্মরণ করলেই পারতেন, আমরা আপনাকে ভিআইপি-র উপযুক্ত যায়গায় পাঠিয়ে দিতাম (ছফা, ১৯৯৩, পৃষ্ঠা ২০-২১)। এসব নেতাদের কীর্তিকলাপ নিয়ে যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র ঘৃনা উঠে এসেছে আহমদ ছফার কলমে, “কলকাতা এলে মাথায় খুন চেপে বসে। ইচ্ছা জাগে এই ফর্সা কাপড় পরা তথাকথিত নেতাদের সবকটাকে গুলি করে হত্যা করি। এ্যায়াসা দিন নেহি রয়েগা। একদিন আমরা দেশে ফিরে যাব। তখন সব কয়টা বানচোতকে গাছের সঙ্গে বেঁধে গুলি করে মারব। দেখি কোন বাপ সেদিন তাদের উদ্ধার করে। কলকাতার নরম বিছানায় ঘুমিয়ে পোলাও-কোর্মা খাওয়ার মজা ভাল করে ‍দেখিয়ে দেব” (ছফা, ৮১)।

“স্টপ জেনোসাইড” খ্যাত চলচ্চিত্রকার কাজী জহির রায়হান যুদ্ধকালে পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে গিয়ে উদ্বাস্তু শিবিরে আওয়ামীলীগ নেতাদের অপকর্মের অনেক ফুটেজ ও ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেন, যা দিয়ে তিনি ডকুমেন্টারী বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যুদ্ধপরবর্তী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট পাপিষ্ঠরা এসব কারনে জহির রায়হানকে গায়েব করে দেয়, তার লাশটিও খুঁজে পাওয়া যায় নি। জহির রায়হান সংবাদ সম্মেলন করে এসব চিত্র প্রকাশের হুমকি দিয়েছিলেন। আর এ হুমকির পরই তাঁর অন্তর্ধানের ঘটনা ঘটে। জহির রায়হানের ভাই শহীদুল্লাহ কায়সার যুদ্ধকালে ১৪ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর দ্বারা অপহৃত হন। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারী ভাইকে খোঁজার নাম করে জহির রায়হানকে ডেকে নেয় স্বাধীন বাংলার প্রশাসন পরিচিতরা। এরপর থেকে জহির নিখোঁজ। তার লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুজিব সকারের পুলিশ ও মিরপুর এলাকা নিয়ন্ত্রকারী বাহিনী জহির রায়হানের পরিবারকে সাহায্য করার পরিবর্তে এড়িয়ে যেতেন। জহির রায়হানের নিখোঁজ হওয়া প্রসঙ্গে ৯নং সেক্টর কমান্ডার মেজর এম.এ. জলিল লিখেছেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের আওয়ামীলীগ নেতাদের কুকীর্তি ফাঁস করে দিতে চাওয়ায় নিখোঁজ হন সাংবাদিক জহির রায়হান। ভারত অবস্থানকালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের অনেক কিছুই জানতে চেয়েছিলেন স্বনামধন্য সাহিত্যিক এবং চিত্র নির্মাতা কাজী জহির রায়হান। তিনি জেনেছিলেন অনেক কিছু, চিত্রায়িতও করেছিলেন অনেক দুর্লভ দৃশ্যের। কিন্তু অতসব জানতে বুঝতে গিয়ে তিনি বেজায় অপরাধ করে ফেলেছিলেন। স্বাধীনতার ঊষালগ্নেই তাকে সেই অনেক কিছু জানার অপরাধেই প্রাণ দিতে হয়েছে। ভারতের মাটিতে অবস্থান কালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের চুরি, দুর্নীতি, অবৈধ ব্যবসা, যৌন কেলেংকারী, বিভিন্ন রূপ ভোগ-বিলাস সহ তাদের বিভিন্নমূখী অপকর্মের প্রমাণ্য দলীল ছিল- ছিল সচিত্র দৃশ্য। আওয়ামী লীগের অতি সাধের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজী জহির রায়হানের এতবড় অপরাধকে স্বার্থান্বেষী মহল কোন যুক্তিতে ক্ষমা করতে পারে? তাই বেঁচে থেকে স্বাধীনতার পরবর্তী রূপ দেখে যাওয়ার সুযোগ আর হয়নি জহির রায়হানের। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩ নম্বর আসামী স্টুয়ার্ড মুজীবেরও ঘটেছিল এই পরিণতি। এই দায়িত্বশীল নিষ্ঠাবান তেজোদীপ্ত যুবক স্টুয়ার্ড মুজীব ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে এবং পরে ৮ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছে। তার মত নির্ভেজাল ত্বরিতকর্মা একজন দেশপ্রেমিক যুদ্ধা সত্যিই বিরল। প্রচন্ড সহস ও বীরত্বের অধিকারী স্টুয়ার্ড মুজীব ছিল শেখ মুজিবের অত্যন্ত প্রিয় অন্ধভক্ত। মাদারীপুর থানার অন্তর্গত পালং অধিবাসী মুজীবকে দেখেছি বিদ্যুতের মতই এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত ছুটোছুটি করতে। কি করে মুক্তিযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করা যায়, ভারতের কোন নেতার সাথে যোগাযোগ করলে মুক্তিযুদ্ধের রসদ লাভ করা যায় কেবল সেই চিন্তা এবং কর্মেই অস্থির দেখেছি স্টুয়ার্ড মুজীবকে। মুজীব ভারতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেক কুকীর্তি সম্পর্কেই ছিল ওয়াকিফহাল। এতবড় স্পর্ধা কি করে সইবে স্বার্থান্বেষী মহল। তাই স্বাধীনতার মাত্র সপ্তাহ খানিকের মধ্যেই ঢাকা নগরীর গুলিস্তান চত্তর থেকে হাইজ্যাক হয়ে যায় স্টুয়ার্ড মুজীব। এভাবে হারিয়ে যায় বাংলার আর একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। (পৃষ্ঠা ৫৫, ৫৬)

জহির রায়হানের হারিয়ে যাওয়া নিয়ে তার সহধর্মীনি চিত্রনায়িকা সুচন্দা বলেন,”জহির বেঁচে থাকা অবস্থায় সর্বশেষ প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়ে এক বক্তব্যে বলেছিলেন­, যারা এখন বড় বড় কথা বলেন, নিজেদের বড় বড় নেতা মনে করেন, তাদের কীর্তি কাহিনী, কলকাতায় কে কী করেছিলেন, তার ডকুমেন্ট আমার কাছে রয়েছে। তাদের মুখোশ আমি খুলে দেবো।’ এই কথা তিনি মুখ দিয়ে প্রকাশ্যে বলে ফেলার পরই তার উপর বিপদ নেমে আসে। এই বলাটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো।” জহির রায়হানের বোন নাসিমা কবির যখন নিখোঁজ জহির রায়্হারের খুঁজে বড় বড় নেতাদের কাছে রাত দিন পাগলের মত ছুটে গেছেন। ১৯৭২ সালে পত্রিকা গুলোতে বেশ লেখালেখি শুরু হয়। যে রফিকের ফোন পেয়ে জহির রায়হান ঘর থেকে বের হয়ে যেন, সেই রফিককে একদিন হঠাৎ করে সপরিবারে আমেরিকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। জহির রায়হানের বড় বোন নাসিমা কবিরকে ডেকে নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সরাসরি বললেন - ”জহিরকে নিয়ে বেশি চিৎকার করলে তুমিও নিখোঁজ হয়ে যাবে” (দৈনিক আজকের কাগজ,৮ ডিসেম্বর ১৯৯৩)। অর্থাৎ শেখ মুজিব নিজেও জহির রায়হানের গুমকারীদের সঙ্গে আপোষ করেছিলেন!

কেবল জহির রায়হানই নয়, যুদ্ধকালে প্রবাসী সরকারের বিভিন্ন নেতাদের দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে শেখ মুজিবের কাছে ট্রাইবুনাল গঠন করার বিচার ও তাদেরকে দল থেকে বহিস্কারের দাবীও তোলে স্বাধীন বাংলা যুব কমান্ড। মুজিব নগর সরকারের ১০০ কোটি রূপী (বর্তমান মূল্য প্রায় ৩৫,৭০০ কোটি টাকা) খরচের কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি (ইত্তেফাক ১৫ আগষ্ট ১৯৭২)। প্রবাসী সরকারের কর্তাব্যক্তি এবং নেতাদের দুর্নীতি ও নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডের নানা প্রমানাদি চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে - জনতার আদালতে বিচারের সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি।

http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/5197/Mazhar13/53758#.VCvGzVeAmSp

http://chairmanbd.blogspot.co.uk/2014/04/blog-post_3000.html

__._,_.___

Darkest dussehra for Indian People

Darkest Dussehra for Indian people!
In this dangerous times ,we have no option but to differentiate the genuine initiative of the prime minister with all his limitation to support him so that he could break away the shackles of Hindu nation agenda.
Palash Biswas

Darkest Dussehra for Indian people!
Religious wartime nationalism invoked unprecedented which is followed by unprecedented violence on the earth on fire.

What a scenario?

Four-year-old Lucky Kumari and two-year-old Lado stand outside their home in Patna's Azad Colony, staring at an uncertain future. For the sisters, a fun-filled outing with family on Friday amid Dussehra festivities turned into a terrible tragedy in a matter of hours as a stampede outside the Gandhi Maidan killed over 40 people, including their mother. Their father is battling for his life at the Intensive Care Unit (ICU) of the Patna Medical College and Hospital.

The tragical Patna stampede might be yet another accident with religious flavour.We had a major water tsunami not very long ago in the Himalayas,mind you.

Whatever may be the faith,whatever might be the religion,it is a matter of personal privacy with some social bondage as it had been for thousands of years.Major events like the Kumbha with millions of participants had been managed quite peacefully for centuries.

But then the religious rituals meant religious rituals and it had nothing to do with power politics.

But then the religious rituals meant religious rituals and it had nothing to do with identity politics.

But then the religious rituals meant religious rituals and it had nothing to do with ambush marketing.

But then the religious rituals meant religious rituals and it had nothing to do with event management.

But then the religious rituals meant religious rituals and it had nothing to do with desi or Videsi companies.

All types of myths,religious icons,totems,rituals and occasions are events managed with marketing strategy for the sustenance of the ruling hegemony connected to the global illuminati zionist.

I have been explaining all these years in my speeches and writing how hindutva agenda is an ingredient part of destructive reforms,the genocide culture.

I have explained it earlier why the Indian retailers must die.

No,not only the retailers,but all those who are not members of India incs aligned with multi national companies and US interests may not survive at all and they have no idea about this despite being so connected.

Mergers and acquisitions involving domestic companies jumped to the highest level since 2011 to $26.1 billion during the first nine months this year.

What does it mean?

While RIL began oil production from its KG-D6 block in September 2008 and gas output in April 2009, ONGC, which has made 11 oil and gas discoveries in KG-D5 block, is at least four years away from first gas

What does it mean?

Power generation in the country during April-June was 22 per cent higher than in the same period last year. This was also when there were several reports of coal stocks with power plants close to critical levels.
What does it mean?

Falling for the fourth week in a row, India's foreign exchange reserves fell by $1.415 billion to $314.181 billion in the week to September 26 on account of a hefty drop in non-US currency assets.
What does it mean?

Gold should be put to work for the Indian economy, creating jobs, developing skills, generating exports and revenues, the World Gold Council (WGC) said on Saturday unveiling its Vision 2020 for the industry.
What does it mean?
Just read:
New Delhi: E-commerce major Amazon's chief executive, Jeffrey P Bezos, called on Prime Minister Narendra Modi on Friday.

"Jeffrey P. Bezos, President, Chairman and CEO of Amazon.com, called on the Prime Minister, Narendra Modi today," an official release said.

Mr Bezos have been visiting Indian cities this week. Amazon, the world's largest e-tailer, has already committed $2 billion investment in the country.

Earlier this week, he had said that Amazon is evaluating setting up a data centre in India to tap into the multi-billion cloud opportunity.

"We are always evaluating new locations. We have AWS (Amazon Web Services) . We started it long time ago and it has grown into a very large business, separate from our consumer business," Mr Bezos had said.

"We are building new data centres and are looking where we should put them and evaluating these in India as well," he had said.

For Amazon, which launched its marketplace in India last year, the country is one of its fastest growing markets and is on track to touch $1 billion in gross sales.

Mr Bezos had said the pace at which internet penetration was increasing in India was stunning and that was one of the tailwinds for the growth of e-commerce.

"India is unbelievably energising; the people are focused on learning and extremely inventive," he had said.

In this dangerous times ,we have no option but to differentiate the genuine initiative of the prime minister with all his limitation to support him so that he could break away the shackles of Hindu nation agenda.

Though they spoke different.The Voice remained the same.Though the prime minister is trying his best to break the shackles of RSS branded Hindutva,I am afraid,it would end in the same way as first time Black President of United States mandated twice Barack Obama completes his second term under a long long shadow of ruling satanic illuminati zionist.Though Modi is trying to take over RSS having finished his party and seems all set to become the Hitler of India playing BR Ambedkar inclusive,the first Shudra OBC prime minister may not be able to liberate India from the destructive corporate global hindutva agenda and has to meet the fate of the first black president of United States of America.

The joint Indo US statement on the summit released by white house speaks on consent only,speaks on bilateral relations,strategic relations,trade and defence,but it might not disclose the personal details of the talk of the twin leaders in interactive position and no way,we may know whether they tried to resolve the stand off they face within.

We may not resist either the global orders of overwhelming reforms or the emerging global hindutva as majority of Indian communities,classes and demographies have been already recruited as Hindutva cadres all on the name of identity and religion.

In this dangerous times ,we have no option but to differentiate the genuine initiative of the prime minister with all his limitation to support him so that he could break away the shackles of Hindu nation agenda.

Mind you,the global trends seem to be most volatile as Barack Obama is trapped in yet another oil war.

US President Barack Obama has strongly condemned the "brutal murder" of British national Alan Henning, and vowed to bring to justice those who were responsible for it.

"The United States strongly condemns the brutal murder of United Kingdom citizen Alan Henning by the terrorist group ISIL," Obama said yesterday.

Henning worked to help improve the lives of the Syrian people and his death is a great loss for them, for his family and the people of the UK, he said.

"Standing together with our UK friends and allies, we will work to bring the perpetrators of Alan's murder  as well as the murders of Jim Foley, Steven Sotloff and David Haines  to justice," he added.

"Standing together with a broad coalition of allies and partners, we will continue taking decisive action to degrade and ultimately destroy ISIL," Obama said.

The 47-year-old from Manchester in northwest England had volunteered to help drive an aid convoy to Syria for a Muslim charity, and was kidnapped 10 months ago.

This is the fourth such video released by the Islamic State group.

Oct 04 2014 : The Economic Times (Delhi)
One Voice, Different Stages

Nagpur
Our Political Bureau


PATTING EACH OTHER RSS chief praises Modi, says there is a sense of optimism about new govt's policies, Modi praised back too; Bhagwat also calls for ban on beef exports; says Islamic terrorism blowback of western greed
Bhagwat Slams India's `Lust for Chinese Goods'
RSS chief Mohan Bhagwat has demanded a ban on beef exports from India, slammed Indians' lust for cheap Chinese imports and called Islamic terrorism a blow back of western greed in an ad dress to cadres that surprised many with its largely concilia tory tone but raised the hack les of several others with its live telecast on state TV.
In his annual Vijayadashami speech at ReshimBagh headquar ters of the RSS, Bhagwat on Friday touched upon topics ranging from ecology to cow slaughter to Islamic jihad as he lauded the Modi-led BJP government's performance and hinted at four states ­ Kerala, Tamil Nadu, West Bengal and Assam ­ as being possible focus areas for the Sangh's future political activities.
Bhagwat's address this year was being especially watched for his observations on the BJP government's performance and also cues on its future social and economic policies. Also being closely watched was for any signs of triumphalism especially after the active role Sangh cadres played to bring the BJP to power and whether it would use its influence with the government to re-assert India's Hindu identity . The RSS chief has in recent speeches asserted India's identity as a Hindu nation and said that all Indians are Hindus.
Bhagwat didn't mention any border incursions by the Chinese unlike his last year's speech, but he slammed Indian consumer's attitudes towards encouraging China which affected any possibility of increase in “self-reliance“ and “Swadeshi“ consumption. “Our tendency of buying daily need goods, even buying foreign made-especially Chinese--statues of our Gods and Goddesses, simply because they are cheaper in price, needs to be abandoned,“ he said.
The RSS leader said there was a sense of optimism prevalent in the country on account of the new government's policies. “The government should now ensure that these policies maintain their momentum in a determined and well organized manner. We need to wait for some more time, with a sense of hope and faith,“ he said.
Suhas Palshikar, veteran political scientist, who have been tracking Sangh Parivar politics, said there was hardly anything new in Bhagwat's speech. “There always is a certain variation, but the issues of cow slaughter, Bangladeshi immigrants etc have their usual community-oriented message,“ said “These are mentioned not as a hint to the government or the BJP , but to the cadres. Through these issues, the RSS would like to exert pressure on the party and the government,“ Palshikar said.







Oct 04 2014 : The Economic Times (Delhi)
We're on Mars, You Can Rule the Earth: Modi to Indians

New Delhi:
Our Political Bureau


TWO SPEECHES, ONE DISCOURSE Modi's first radio address & RSS chief's Dussehra speech attempt to goad countrymen to take big strides with supreme confidence
Two of the country's most powerful figures ­ Prime Minister Narendra Modi and RSS chief Mohan Bhagwat ­addressed the nation on Friday , the many unprecedented characteristics of their speeches laying down new political markers in both form and substance amid laments and protests.
Prime Minister Narendra Modi, for long a regular tenant of television screens, gave his first sound-only address to the na tion on All In dia Radio, kicking off what he said will be monthly or fortnightly radio addresses to the people under the `Talking from the Heart' banner. It was the first time in decades that a prime minister has used only the radio to address people, and predictably the speech was picked by most television channels.
The 15-minute radio address also saw Modi adopt a different style, one that was more conversational and personal and in sharp contrast to his recent addresses at Red Fort in New Delhi and New York's Madison Square Garden. Modi sought to inspire 1.2 billion Indians to do their part and get the economy moving. Modi encouraged citizens to reach him through all channels available with suggestions to improve the state of the nation. He even named some people who had written to him with suggestions, a rare instance of a prime minister acknowledging ordinary citizens by name in a national address.
While Thursday saw Modi embrace one of Mahatma Gandhi's core tenets of cleanliness as part of his Swachh Bharat campaighn, on Friday, he sought to co-opt another one ­ khadi. Modi exhorted people to buy at least one khadi product a year, an act, he said, would help better the lot of millions of poor people.
It was at this point that his speech aligned with that of Mohan Bhagwat, Sar Sangchalak of the Rashtriya Syayamsevak Sangh (RSS), the intellectual fountainhead of the Sangh parivar of which Modi and the BJP are part. Bhagwat, who delivered his annual Vijay Dashami and spoke a few hours before Modi in Nagpur, created history as his speech was for the first time telecast live by state-broadcaster Doordarshan, attracting howls of protests from the BJP's opponents and some commmentators.
The RSS chief praised the Modi government for initiatives on national security, economy and international relations in a short period. “We don't have a magic wand to change, but the government seems committed,“ the RSS chief said in his address to the cadres that spanned disparate topics such as banning beef exports to in ternational relations to rekin dling a sense of national pride.
Bhagwat said Modi's recent visit to the US has sent positive signals and has ushered a new enthusi asm among people of the country.
“A new ray of hope has entered in the hearts of the people. The en tire country was feeling proud of the visit and the subsequent talks with the US government,“ he said, adding the world needs India.
His address, while criticized by opposition parties such as the Congress and the Communists and also the Sangh's ideological opponents, found endorsement from Modi, a former swayamsevak who was deputed to BJP in the late 1980s.i “Mohan Bhagwat ji talked about important national issues in his speech. The issues of social ret form that he raised are very rele vant today,“ Modi said on Twitter.









A multi-faceted relationship
But Prime minister's US trip reveals limits of summit meetings
Business Standard Editorial Comment  |  New Delhi  

October 1, 2014 L

Prime Minister Narendra Modi's trip to the United States can be called a success because of the manner in which it has helped the ties between the two countries blossom into a multi-faceted relationship of a kind that does not exist with any other country, ranging as it does from investments, infrastructure collaboration, urban development, technology, trade, space, health co-operation and skills development to climate change and energy. He has also succeeded in keeping interest in India's potential at an elevated level, and the optimism that surrounds the existence of a government with a majority and, thus, the ability to take tough decisions has not dwindled. In terms of ensuring concrete results and forward movement in this multi-faceted bilateral relationship, however, the trip could have achieved a lot more.

For instance, the security aspects of the joint statement issued after the meeting between Mr Modi and United States President Barack Obama were largely aspirational, although security co-operation is unquestionably the strongest leg of the relationship at the moment. The United States affirmed that India is "ready for membership" of the Nuclear Suppliers Group; and there was a strong statement about freedom of navigation, including in the South China Sea. However, the nature of any maritime co-operation was not really spelt out. Counter-terrorism provided the most specific commitment. Intriguingly, of the five terror groups mentioned, while Al Qaeda was first, three India-focused ones occupied the next three slots, with the United States' Afghan bugbear, the Haqqani Network, bringing up the rear. The happy serendipity of the United States Treasury Department finally making a long-planned move on the financing of Pakistan-based terror groups added to the sense that here, at least, there was some commonality of interests.

If, however, there is an overall impression of stasis, this is because there is little chance of major breakthroughs at such summit meetings. It is unwise to expect major visits to move relationships forward. The actual spadework has to be done through massive official-to-official contact on a regular basis, particularly in areas that have become irritants to the overall relationship. On this trip, for example, consider the various areas in which progress might have been hoped for, and which were in fact discussed, according to the joint statement. India will have hoped for some sort of concession when it comes to the treatment of immigration of high-skilled Indians, or Indian companies that rely on temporary workers to be profitable in the United States. None was forthcoming. The United States, in turn, got nothing but a working group - to meet annually - on intellectual property. India did not get the "totalisation agreement" on social security payments non-resident Indians want; the United States did not get the bilateral treaty on investment protection that its companies want.

Clearly, Mr Modi's own presence can not substitute for the hard preparatory work required, and the compromises that need to be made on the minutiae in order to get the big, headline-grabbing breakthroughs. The biggest lesson from the prime minister's summit is that the real work is at home. The United States trip was perhaps politically necessary for Mr Modi. But repair of the relationship must begin with greater reform at home.
http://www.business-standard.com/article/opinion/a-multi-faceted-relationship-114100101341_1.html
Modi, Obama take defence ties to advanced stage
US to boost investments in India capital markets
BS Reporter  |  New Delhi  

October 2, 2014

Prime Minister Narendra Modi wound up his five-day visit to the US on Tuesday night with an agreement with US President Barack Obama to renew the 2005 Framework forUS-India Defense Relationship for another 10 years taking strategic ties between both countries to an advanced stage. India and US also agreed to set up an institutional mechanism to boost investment into Indian capital marketsand infrastructure, increase trade between the two countries fivefold to $500 billion and resolve issues related tointellectual property rights through talks.

During the first ever summit level meeting between both leaders that went on for over 110 minutes, Modi and Obama decided to give a fresh lease of life to the Political-Military Dialogue in an effort to develop a robust platform for co-production of defence items.

"To facilitate deeper defense cooperation, they welcomed the decision to renew for ten more years the 2005 Framework for the U.S.-India Defense Relationshipand directed their defense teams to develop plans for more ambitious programs and activities. The two leaders also agreed to reinvigorate the Political-Military Dialogue and expand its role to serve as a wider dialogue on export licensing, defense cooperation and strategic cooperation," said the joint statement.

Additionally, both sides also decided to boost maritime security to ensure freedom of navigation and movement of shipping and commercial activity.

"To achieve this objective, the two sides considered enhancing technology partnerships for India's Navy including assessing possible areas of technology cooperation. They also agreed to upgrade their existing bilateral exercise MALABAR."

The two sides also agreed to jointly address the issue of terror by dismantling the havens of Al Qaida and Dawood Ibrahim, wanted for masterminding the 1993 serial bomb blasts in Mumbai.

To boost investment by institutional investors and corporate entities, Modi and Obama promised to establish a joint investment initiative, led by the Indian finance ministry and the US Department of Treasury. The initiative will focus on capital market development and financing infrastructure.

Besides, an infrastructurecollaboration platform will be established. The platform, to be convened by the finance ministry and the commerce department, would enhance participation of US companies in infrastructure projects in India, said a joint statement, issued after strategic talks between Modi and Obama.

The statement didn't mention any targeted investment related to infrastructure development. While Japan had agreed to invest $35 billion in this segment in India through five years, China had promised $20 billion.

Through the next five years, India needs about $1 trillion for infrastructure development, 40 per cent of which is to come from the private sector, according to a study by the Confederation of Indian Industry.

In 2013-14, US inflows of foreign direct investment (FDI) into India were the fifth-highest ($806 million), after Mauritius, Singapore, the UK and Japan. However, this was lower than over $ one billion that India received from US in 2009-10, 2010-11 and 2011-12 each.

Before leaving for Frankfurt en route to New Delhi , Modi also addressed the US-India Business Council (USIBC, urging top US companies to expand their base in India before "it is too late".

USIBC told him it had identified investment of $41 billion by its members in India, through the next three years.

Modi told USIBC in the next six months, he would effect all that was necessary to ease the business environment in India.

On Wednesday night, Modi returned to the national Capital on a Special Air India plane after a five-day visit to the US. Union Minister Ram Vilas Paswan and a few of his ministerial colleagues were present at the Palam Technical area to receive Modi, in a departure from normal practice where ministers no longer line up to see off or receive the Prime Minister during his foreign trips .

Modi and Obama committed themselves to promoting an environment attractive for companies to invest and manufacture, through the Trade Policy Forum. Amid differences over intellectual property rights, the two sides promised to set up an intellectual property working group, as part of the forum.

Modi invited US industry to be the lead partner in developing smart cities in Ajmer, Visakhapatnam and Allahabad. India plans to develop 100 smart cities, for which an allocation of Rs 7,060 crore was proposed in the Union Budget.

The two sides also established a contact group on civil nuclear energy cooperation to deliver electricity from US-built nuclear power plants in India.

"They looked forward to advancing the dialogue to discuss all implementation issues, including, but not limited to, administrative issues, liability, technical issues and licensing to facilitate the establishment of nuclear parks, including power plants, with Westinghouse and GE-Hitachi technology," the joint statement said.

Obama affirmed India met the requirements of the missile technology control regime and was ready for membership to the Nuclear Suppliers Group (NSG). He also supported India's membership to the Wassenaar Arrangement and the Australia Group.

To tackle climate change, India and the US signed a memorandum of understanding (MoU) to provide up to $1 billion to aid India's transition to a low-carbon and climate-resilient energy economy. The MoU was signed between Export-Import Bank and the Indian Renewable Energy Development Agency.

Other initiatives include a new programme to scale up renewable energy integration into India's power grid and setting up the Clean Energy Finance Forum to promote investment and trade in clean-energy projects.

Both leaders said they were committed to working towards a successful outcome of the 2015 UN Framework Convention on Climate Change in Paris.

Given the current logjam in World Trade Organization (WTO) talks, owing to India's tough stance on food security, the two sides directed their officials to hold talks with each other, as well as with other WTO members, on steps in this regard.

With the threat of the Islamic State looming large, Obama and Modi underlined the need for continued global efforts to combat and defeat terrorism.

"The leaders stressed the need for joint and concerted efforts, including the dismantling of safe havens for terrorist and criminal networks to disrupt all financial and tactical support for networks such as Al Qaida, Lashkar-e Taiba, Jaish-e-Mohammad, the D-Company (the network of Dawood Ibrahim) and the Haqqanis," the joint statement said.

The two leaders reiterated their call to Pakistan to bring the perpetrators of the November 28 terrorist attack in Mumbai to justice.
'THANK YOU AMERICA...'

... is what Prime Minister Narendra Modi said, as he concluded his five-day visit. A snapshot of the agreements between the countries
To intensify cooperation in maritime security; important as China's maritime ambitions expand

Both leaders express concern about rising tensions over maritime territorial disputes

Obama promises to enhance India's voice and vote in international financial institutions

USAID to support the national urban development mission and Clean India campaign

Both sides discuss role US can play in modernising India's railway network

Modi and Obama to hold public-private discussions in early 2015 on new areas of cooperation, including advanced manufacturing

To strengthen US-India Partnership to Advance Clean Energy

To ease travel between the two countries, India to introduce visa-on-arrival for US citizens in 2015

Obama to support Modi achieve his goal of preparing young Indians for 21st century jobs

Leaders commit to partner on the Digital India initiative

To launch new phase of programme to develop affordable vaccines for dengue, malaria and tuberculosis

New pact likely soon to support the Nasa-Isro Synthetic Aperture Radar mission, to be launched in 2021

http://www.business-standard.com/article/economy-policy/modi-obama-take-defence-ties-to-advanced-stage-114100200029_1.html

India says US agrees to its stand on IPR
Says bilateral forum, mentioned in Obama-Modi statement, already exists
BS Reporter  |  New Delhi  

October 4, 2014

"The US agreeing to discuss IPR issues through the bilateral mechanism of the Trade Policy Forum is in fact a re-affirmation of India's stand that issues need bilateral discussion and not unilateral action," the department of industrial policy and promotion said in an official statement.

However, the department clarified that there already existed the Innovation and Creativity Focus Group in the forum since 2010 to consult not less than twice a year on improving IPR protection. Besides, the group is expected to foster innovation, creativity and collaboration between US and Indian innovators.

The DIPP, a department in the commerce and industry ministry, said the joint statement iterated what had existed in the earlier forum.

It added IPR issues were critical for both countries and India had been repeatedly raising the issue of copyright piracy and misappropriation of traditional knowledge with the US.

The official statement said India had consistently pointed out that its IPR regime was compliant with the agreement on Trade Related Aspects of Intellectual Property Rights (TRIPs) and that any issues had to be discussed in the forum.

The Indo-US joint statement on the IPR issue would only strengthen the bilateral institutional mechanism, the statement added. Earlier this year, the US Trade Representative's much-awaited Annual Special 301 Report had maintained a status quo on India, by keeping it on a "priority watch list" for an allegedly lax IPR regime but refrained from labelling it a "priority foreign country", which might have led to sanctions.

However, the report expressed growing concerns over India's IPR protection and enforcement. The report had said Indian laws and their enforcement would be closely monitored by initiating an "out of cycle" review. India has been on the priority watch list since 1989, when the Special 301 was first released. Special 301 is a trade and industry practices report maintained by the USTR in which the US designates certain countries under two categories, priority foreign country and priority watch list. This is for IPR violators and offenders. The first designation is for the worst offenders that could face trade sanctions. India was earlier designated a priority foreign country in 1994. India has, however, consistently been urging the US to hold bilateral talks to resolve IPR issues, instead of taking unilateral steps. In today's statement as well, the DIPP said, "India has refused to be subjected to unilateral action proposed by the US under the Special 301 report."

US companies, especially pharmaceutical firms, have been pressuring the administration to take strict action against India over its IPR policy.

The US was particularly miffed with the Supreme Court's judgment in April 2013 rejecting the patent application by Swiss company Novartis for its cancer drug, Glivec. Prior to this, American companies were upset when the controller general of patents, designs and trademarks granted a compulsory licence to Natco Pharma to sell a generic version of Bayer-Onyx's cancer drug, Nexavar.

SPECIAL 301
Special 301 is a trade and industry practices report of the USTR that designates certain countries for IPR violations. India does not accept report as it is unilateral
India wants US to resolve differences over IPR through bilateral talks

But the US had kept India on priority watch list allegedly due to lax regime

Tag of priority foreign country might have led to sanctions

India was designated a priority foreign country in 1994

India-US statement talks of resolving issues by setting up bilateral mechanism under Trade Policy Forum

India says mechanism already exists; the US has agreed to bilateral talks to resolve IPR differences, instead of unilateral action

http://www.business-standard.com/article/economy-policy/india-says-us-agrees-to-its-stand-on-ipr-114100400062_1.html
Oct 04 2014 : The Times of India (Ahmedabad)
Political row erupts after DD telecasts RSS chief's speech

New Delhi
TIMES NEWS NETWORK


Oppn: Misuse Of State Machinery
Public broadcaster Doordarshan's live telecast of RSS chief Mohan Bhagwat's customary Vijaydashmi speech triggered a controversy on Friday , with the political class and social commentators calling it a dangerous trend of state patronage of majoritarian politics.
In RSS's Foundation Day address, Bhagwat was beamed live nationally as he touched upon issues like illegal immigration from Bangladesh, jihadi activities and threats to Hindus. Even universal concerns like terror, when spoken about by RSS, acquire a sensitive edge. The opposition parties, which did not expect the Modi government to openly patronize the RSS like this, reacted with alarm. The Congress and Left parties hit out at the DD broadcast, while some public intellectuals described it as “misuse of state machinery“.
But brushing aside the criticism, Narendra Modi hailed Bhagwat's address and the issues raised by him as “very relevant“. The PM also tweeted an online link to the summary of the speech from his personal Twitter handle, indicating that he was not apologetic about his government's decision to put the RSS chief 's speech live on Doordarshan. BJP , too, backed the decision, while the broadcaster said it had covered the speech as a news event.
Calling it as setting a “dangerous trend“, Congress spokesman Sandeep Dikshit said, “This is not an organization which is completely neutral. It is a controversial orga nization.“ He asked what would happen if other religious outfits like Jamaat-e-Islami or Church of North India sought similar coverage from DD. Another Congress spokesman Abhishek Singhvi said this reinforced the fear that the country was ruled “from and for Nagpur“ -a shorthand for Hindutva agenda. For the first time in years, an RSS chief ’s annual Vijaydashmi speech contained no criticism of the Union government and instead had generous doses of praise. The 64-year-old sarsanghachalak Mohan Bhagwat, without mentioning the name of Prime Minister Narendra Modi, said the new government was moving in the right direction in “making the Bharat of our dreams”.
“The people brought a drastic change in the government.
This change is not even six months old but positive signs from time to time give hope of the emergence of Bharat on the international horizon,” Bhagwat said, adding, “It appears the people’s desire for a secure and progressive life will soon start reflecting in governance.” Holding the Western nations responsible for the spread of international terrorism, Bhagwat said the “selfish interests” of the West had led to the growth of newer incarnations of terrorism across the world.
Slamming the US for the West Asian crisis and the rise of ISIS, he said some countries are “expanding their empires” in the name of globalization.
Bhagwat indicated a larger role for the RSS in the come days, asking people not to depend on the government to do every thing and said socio-cul tural organizations like the RSS could be put to greater use, particularly in areas of encouraging the use of Swadeshi and containing Left-wing violence.
The RSS chief said policy initiatives in the first 100 days by the government on the economy, security, international relations and several other areas have raised hopes of the common man. Oct 3 marked the 89 th anniversary of the organization.
“The government must now ensure these policies maintain their momentum in a determined and well-organized manner. We need to wait for some more time, with a sense of hope and faith,” the Sarsanghachalak said. He praised the Modi government for improving the country’s image during his US visit and congratulated the scientists for the successful mission to Mars.
The RSS chief ’s Vijaya Dashmi speech is the most important public event in the organization’s calendar and provides a policy direction to its supporters. Last year, Bhagwat had exhorted the people to come out and vote (“poll turnout must be 100%”) and urged lakhs of swayamsevaks to pitch in with mobilizing opinion. Incidentally, the voting percentage in the general elections touched 80% in several states.
Union transport and rural development minister Nitin Gadkari, Maharashtra BJP chief Devendra Fadnavis and several party MLAs sat through the speech that lasted more than an hour, and was preceded by a drill and martial arts demonstration by hundreds of swayamsevaks.
In the past, every RSS chief has targetted the government’s failures on issues ranging from security dangers from China, to FDI threatening local traders.





Oct 04 2014 : The Times of India (Ahmedabad)
Pvt firms to make UAVs for defence
Sidhartha
New Delhi


Govt To Issue 6 Licences | B'lore Co To Benefit Most | Civilian Use Not Allowed
It's raining UAVs in India. After years of delay , the government is set to issue at least half-a-dozen licences for manufacturing unmanned aerial vehicles (UAVs) to private players, although civilian use still remains a closed area.
Sources in the government told TOI that the department of telecommunications, which was the main stumbling block, has agreed to allow the UAV manufacturers to use the spectrum band allocated to defence forces, paving the way for issuing licences. During the UPA regime, it was the defence ministry which was holding up proposals as it did not want the private sector to enter the defence production arena, even if no foreign investment was permitted.
But, a change of guard at the Centre and the BJP government’s push to cut the import bill by allowing private partici pation in the defence sector seems to have paved the way for a consensus between the ministries, at least on the issue of UAVs. The sources said that last month, the licensing committee decided on seven licences, several of which will go to littleknown names. Bangalore-based Dynamatic Technology is expected to bag the biggest block of licences from the panel, comprising representatives from several ministries, clearing a plan to allow it to make 10,000 unmanned aerial systems and vehicles.
Among the bigger players is Ashok Leyland, whose proposal to manufacture 600 UAVs along with armoured vehicles, unmanned ground vehicles, was pending with the government.
There are others that have smaller orders. For instance, Taneja Aerospace & Aviation is expected to be given a licence to manufacture only 10 UAVs, while Avaana Software & Services can make 200. Then, there is Basant Aerospace, SasMos HET Tech, Swallow Systems and Om UAV Systems, which are likely to get permission to manufacture up to 100 units each for the defence. Sources said there are close to a dozen other proposals for manufacturing UAVs that are pending, including those from Punj Lloyd, Mahindra Aero Structures, Piramal Systems & tech, Idea Forge, Aman Aviation & Aerospace Solutions, OIS Aerospace, Kadet Defence, Deepti Electronics and Spectrum Infotech.
Several companies, whose proposals have been cleared, will only get licences when their FDI proposals are cleared by the Foreign Investment Promotion Board, said an official, adding that the process may take around two to three months.




মতুয়া জীবন কেমআন হওয়া উচিৎ


মতুয়া জীবন কেমআন হওয়া উচিৎ-১

মতুয়া জীবন কেমআন হওয়া উচিৎ-১ -কালিদাস বারুরী
 শ্রী শ্রী হরিচাঁদ কল্পতরু আগমনের দু-শোটি বছর পার করে এসেছি। এবার আত্ম  সমীক্ষা। দীর্ঘ মতুয়া জীবনচক্রে ত্রুটি বিচ্যুতির চুলচেরা অঙ্ক কষে পাশ ফেলের ফলাফল জেনে নেবার সময় এসেছে । আলোচনা পর্বটি বিচক্ষণ দৃষ্টি দিয়ে হরি-গুরুচাঁদীয় বিপ্লবী শিক্ষা সামাজিক চরিত্রায়নে আমরা নিজেদেরকে কতটুকু সংগঠিত করতে পেরেছি তারই বিচার্য বিষয় ।
     শ্রী শ্রী হরিচাঁদ অভেদাত্মা রাজর্ষি গুরুচাঁদ ঠাকুর প্রবর্তিত মতুয়া ধর্ম দর্শন সমাজের সর্বস্তরের বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া বৃহৎ সংখ্যক মানুষের অগ্রগতির দিক ও দিশা তাতে কোন সন্দেহ নেই । মুষ্টিমেয় এক শ্রেনীর ধুরন্ধর স্বার্থান্বেষী মানুষের কুটকৌশলী দেবদোহায়ী  বর্ণবাদদুষ্ট সামাজিক চাপ-শোষণ বঞ্চনা ও নির্যাতনে পদপিষ্ট হয়ে কাতারে কাতারে বঙ্গের মানুষ যেমন ধর্মান্তরিত হয়েছে তেমনই উদেশ্য প্রণোদিত হীনমন্য প্রবর্তকহীন হিন্দুধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে অগ্রগতির দিক ও দিশা তাতে কোন সন্দেহ নেই ।  মুষ্টিমেয় এক শ্রেণীর ধুরন্ধর স্বার্থান্বেষী মানুষের কূটকৌশলী দেবদোহায়ী বর্ণবাদদুষ্ট সামাজিক চাপ-শোষণ বঞ্চনা ও নির্যাতনে পদপিষ্ট হয়ে কাতারে কাতারে বঙ্গের মানুষ যেমন ধর্মান্তরিত হয়েছে তেমনই উদেশ্য প্রণোদিত হীনমন্য প্রবর্তকহীন হিন্দুধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে শিক্ষা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার থেকে হাজার যোজন দূরে সরিয়ে রেখেছে ।
     এমনি এক যুগ সন্ধিক্ষণে পতিত পাবন শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব(১৮১২-১৮৭৮) । শিক্ষা-জ্ঞান জীবে প্রেম, কর্ম-সাম্য এবং স্বাধীন আধ্যাত্মিক তত্ব ও দর্শন সংম্পৃত্ত "মতুয়া ধর্ম" উপহার দিলেন মৃতপ্রায় পতিত জাতিকে । ভেঙ্গে দিলেন ব্রাহ্মণ্য  ষড়যান্ত্রিক মানুষ দলনীতি বিধি বিধান । যুগ পুরুষ হরিচাঁদ ভারতের নবীনতম ঐতিহাসিক ধর্ম ও কর্মের স্রষ্টা ও দ্রষ্টা । ঘৃণক আর দোলকদের ফতোয়াকে অগ্রাহ্য করে শুরু করলেন বহুজন মুক্তির আপোষহীন সংগ্রাম ।
     তাঁর প্রবর্তিত প্রেমভক্তির পূর্ণ মায়া মমতা ভরা মত ও পথ 'মতুয়া ধর্মের' ছায়াছত্রতলে  লক্ষ কোটি মানুষ পেল মুক্তি মোক্ষ, জীবনের বিকাশ-শক্তিতে চেতনা । মন্ত্র দিলেন নিজ নাম, 'হরিবোল' ।
     ভক্তি ভাবের পশরা সাজিয়ে ভক্ত আর ভগবানের কথা লিখেছেন মহানন্দ হালদার এবং রসরাজ তারকচন্দ্র ।
               "নাহি চেনে কোন দেবী, ঘট পট বিম্বা ছবি ।
                জানে, মনে প্রাণে শুধু হরিচাদে ।।'
                দীক্ষা নেই করিবে না তীর্থ পর্যটন ।
                মুক্তি স্পৃহাশূন্য নেই সাধন ভজন ।
                 যাগ-যজ্ঞ তন্ত্র মন্ত্র দীক্ষা
                 কোন কিছুর নাহি প্রয়োজন ।
                 'হরিনাম মহামন্ত্র জান সর্বজন ।।"
     ঠাকুরের বাণীর মধ্যে লুকিয়ে আছে আমার জীবনের দিক নির্ণয়ের নিশানা এবং ঠিকানা । যাঁর কৃপা ও করুণায় আমি শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিন প্রতিষ্ঠা পেয়েছি -সেই করুণার সাগর পরিত্রাতা হরিচাঁদ ভিন্ন আমার জীবনে অন্য কোন দেব দেবী , ঘট পট পূজা নেই, থাকতে পারে না । দীক্ষা নেই, তীর্থ পর্যটন নেই, যাগ-যজ্ঞ, তন্ত্র-মন্ত্র কিছুই নেই । একমাত্র হরিচাঁদই আমার উপাস্য ।
     দীক্ষা-শিক্ষা মন্ত্রের অসারতার কথাও তিনি জোরের সঙ্গে ঘোষণা করলেন-
                     "দীক্ষা মন্ত্র দেয় গুরু কর্ণে মুখ রাখি ।
                      হরিনাম মন্ত্র বিনা, সব মন্ত্র ফাঁকি ।।"
তা সত্ত্বেও মতুয়াদের মধ্যে দীক্ষা মন্ত্রের প্রচলন সর্বত্র দেখতে পাই । হরিচাঁদ  দৃঢ়তার সঙ্গে ভক্তদের সাবধান করলেন এবং অভয় দিয়ে বললেন-
                      "হরিনাম  মন্ত্র বিনা, সব মন্ত্র ফাঁকি।"
     -অর্থাৎ হরিনাম-ই একমাত্র মহৌষধ-এর উপরে কোন ঔষধ নেই ।
     তিনি পূর্ণ ভরসা দিয়ে বললেন-"আমার নাম অর্থাৎ 'হরিনাম' উচ্চারণে জীবনীয় শক্তি ও মুক্তি পাবে, আর কিছুর প্রয়োজন নাই । তা সত্ত্বেও অধিকাংশ মতুয়া পরিবারে বেশ ঘটা করে বিভিন্ন দেব-দেবী পূজার প্রচলন বিদ্যমান। পাশাপাশি কৃষ্ণনাম যজ্ঞ সহ অন্যান্য অনেক(ব্রাহ্মণ্যবাদী) গুরু পূজাও বিদ্যমান । কাউকে আঘাত দেওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়, আমার প্রশ্ন "বিশ্বাসের" । আমার 'বিশ্বাস' যদি বহুমুখি হয় সে ক্ষেত্রে আমার ভক্তি-শ্রদ্ধা-পূজা সবই বহুমুখি হবে এবং জনে জনে বিভক্ত হতে থাকবে । ফলে হরি পূজা পূর্ণতা লাভ করবে না । আমার 'বিশ্বাস' ও একমাত্র'হরি' কেন্দ্রীক হবে না, আমার উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ একজনের উপরে আমি বিশ্বাস রাখতে পারছি না, ভুলে গেছি তিনিই আমার উদ্ধারকর্তা । বর্তমান প্রতিষ্টা তিনিই আমাকে দিয়েছেন । লক্ষী, সরস্বতী ,কালী, দুর্গা, রামকৃষ্ণ,অনুকুল,   নিগমানন্দ, জগদানন্দ এঁনারা আমার উদ্ধারকর্তা নন । অতএব মতুয়াদের ভাবতে হবে, দ্বি-চারিতা হচ্ছে না তো ? যেখানে হরিঠাকুর নিজের স্বরূপ প্রকাশ করে বলেন-
                        "পূর্ণ আমি হরিচাঁদ অপূর্ণের পিতা
                        সাধনা আমার কন্যা, আমি জন্মদাতা ।"
এতবড় প্রমাণ আর ভরসা থাকা সত্তেও মতুয়াদের বহুমুখি হওয়া  মানেই তো হরিচাঁদে  বিশ্বাসের অভাব । পক্ষান্তরে মনগড়া ব্যবসা বিত্তিক দেব-দেবী ও মূর্তি পূজায় অগাধ বিশ্বাস, এর অর্থ ব্রাহ্মণ্য নীতি -বিধি বিধানে আমার বেশী বিশ্বাস । অথচ এই বিধানের বি রুদ্ধাচারণ করে শ্রীহরি বললেন-
                        "তিন বেলা সন্ধ্যা কর আর সন্ধাহ্নিক ।
                        স্নান পূজা সন্ধাহ্নিক মোর নাহি ঠিক ।।
                        কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলে খাই ।
                        বেদ বিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই ।।"
প্রশ্ন থেকে যায়-
            আমি কি মতুয়া হতে পেরেছি ? আমি কি মতুয়া বিধি বিধান মেনে চলছি ? আমি কি একমাত্র শ্রীহরিতে বিশ্বাস রাখতে পেরেছি ? আমি কি পরিবারে হরি-গুরুচাদের ধর্ম-দর্শন প্রতিষ্টা করতে পেরেছি? আমি কি হীনমন্য হিন্দু ধর্মের প্রতিবাদী 'মতুয়া' ধর্মাবলম্বী হতে পেরেছি ? আমি কি ভেদাভেদহীন "স্বয়ং সম্পুর্ণ মতুয়া ধর্মকে" জনমানসে প্রতিষ্ঠা কল্পে প্রচারে ও প্রসারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে পেরেছি ?
       
      যদি না পেরে থাকি তবে আর সময় নষ্ট না করে এখনই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে যথার্থ মতুয়া হওয়ার লক্ষ্যে । এটা করতে পারলেই মুক্তি ও প্রাপ্তি । মহাশক্তি ও স্বস্তির পথ সুগম হবেই হবে ।

(২)   (মতুয়া ধর্মে নারীর মর্যাদা ও অধিকার)
       নারী মাত্রই মাতৃসমা । শ্রদ্ধা-ভক্তি ভালবাসা বা স্নেহের পাত্রী । মতুয়া ধর্মে ব্রাহ্মণ্য নীতি  বিধি অনুযায়ী নারী জাতিকে মর্যাদাশীল পরনির্ভরশীল 'নরকের দ্বার' করে রাখা হয় নাই । নারী ও পুরুষের সমান অধিকার, একথা মতুয়াধিপতি হরি গুরুচাঁদ ধর্মীয় ও মানবীয় ব্যাখ্যায় প্রথম জাতিকে প্রকাশ্যে দিবালোকের অক্সিজেন যোগান দিয়ে হরি-গুরুচাঁদ গড়লেন এক নয়া ইতিহাস । মায়েদের হাতে ধুপ-দ্বীপ-শঙ্খ দিয়ে, দিলেন পূজার অধিকার, ধর্মের অধিকার । নারী শিক্ষা বিদ্যালয় গড়ে, দিলেন শিক্ষার অধিকার । ঘটল মাতৃত্বের পূর্ণ বিকাশ । হরি-গুরুচাঁদ কল্পবৃক্ষে সোনার মানুষ, সাধু -সাধক, শিক্ষিত যুবক-যুবতীর ফসল ফলল । নারী জাতিকে মতুয়া কি নজরে দেখবেন তাও বলে দিলেন প্রাণারাম-
                   "পর নারী মাতৃজ্ঞানে দূরেতে থাকিবে ।
                   পরিহাস বাচালতা কভু না করিবে ।।
                   মেয়ে পুরুষেতে বসি একপাতে খায় ।
                  মেয়েদের এঁটো খায় পদধুলা লয় ।।
                   ----------------------------
                  পুরুষ ঢলিয়া পড়ে মেয়েদের পায় ।
                  এক নারী ব্রহ্মচারী সৎচরিত্র রবে ।
                  ------------------------------
                  নিজ নারী ভিন্ন অন্য নারীতে গমন ।
                  মহাপাপী ব্যভিচারী সেই একজন ।।
প্রশ্ন থেকে যায়,-
      আমরা নারী জাতিকে মাতৃজ্ঞানে সম্মান করি তো ? আমি নিজ নারী সহ ব্রহ্মচারীর ন্যায়
সৎ চরিত্র বহন করছি তো ? আমি হরিনামামৃত পান করে দেহের ইন্দ্রিয় নিজের করায়াত্বে এনেছি তো ?আমি নারী মাত্রই 'মা' সম্বোধন করি তো ? মায়েদের সুখ-দুঃখের সমান  ভাগীদার হই তো?
      যদি না করে থাকি তবে আমার মতুয়া জীবন বৃথা ।মনে রাখবেন, হরি-গুরুচাঁদ প্রবর্তিত  ধর্ম-দর্শন অতি উচ্চমার্গের । একে জীবনদায়ী ঔষধ মেনে গ্রহন করতে পারলে আমি নিশ্চিত করে বলছি, আপনার উন্নয়নের জন্য আপনাকে ভাবতে হবে না ।
                   "সর্বধর্ম লঙ্ঘি এবে করিলেন স্থূল ।
                   শুদ্ধ মানুষেতে আর্তি এই হয় মূল ।।"

                      (প্রেমবন্ধনের দৃঢ়তা কেন এত ঠুনকো ?)
     শ্রীহরি বাসরে সরল অনাড়ম্বর জীবন সঞ্জাত 'হরিবোল' নামে ভাবোন্মোত্ত মতুয়াদের মমত্ত্বের ও সমত্বের প্রেমপ্রক্ষালনি অশ্রুসজল বাহু বেষ্টিত ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে দৃশ্যায়ন, আকর্ষণীয় প্রেমভক্তি ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায় । কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে বলছি, এই ভাব ও সম্পর্ক স্ব-স্ব এলাকায় দেখা যায় না । সেখানে সগোত্রীয় হয়েও মেলামেশায় বহুলাংশে ফারাক । হিংসা-দ্বেষ,  দ্বিধা-দ্বন্দ্ব হাম বড়াই ভাবের অবাধ বিচরণ । চোখা চোখা বিশেষণ (গালাগালি) প্রয়োগে পারদর্শিতা যথেষ্ট । বাহু যুদ্ধেও পিছিয়ে নাই । মুখ দেখাদেখি বন্ধ থাকে , প্রতিশোধ স্পৃহা ঘুম কেড়ে নেয় । পড়শিদের ভীতি প্রদর্শনে ভীত নয় । অথচ এরাই হরিবাসরে হরিনামের অমৃত ভাব ও প্রেমের বন্যা বইয়ে দেয় । পদধুলি সংগ্রহে কাড়াকাড়ি হয় । কোলাকুলি অশ্রুবন্যায় হরিবাসর প্রেমের সাগর হয়ে ওঠে । ভাবি এই বন্ধন চিরস্থায়ী নয় কেন ? এই প্রেম সর্বত্র সর্বদা সমানভাবে সংঘবদ্ধ হয় না কেন ? যেখানে দয়াধীশ ভবিষ্যৎ বাণী দিয়েছেন-
                  "সর্বজাতি সমন্বয় হবে তাঁর মতে ।
                  ভাই ভাই হয়ে সব চলিবে সে পথে ।।"

                                 (গুরুগিরি)
                 অনেকে গুরুগিরি করেন । গুরুগিরি ব্যবসা করেন, সংসার চালান, দীক্ষা দেন, শিষ্য তৈরীতে পারদর্শিতা দেখান । যে সাধন- ভজন অধ্যাবসায় দক্ষতা থাকা দরকার-ইদানিং গুরুদের মধ্যে তেমন উপযুক্ত একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না । গোপাল সাধু, তারক  গোঁসাই, লোচন, অশ্বিনী, নাটু, ব্রজনাথ ডাঃ তারিনী বলের মতো সাধক পুরুষ আছে কি ? এঁনারা জীবন দিয়ে জাতির উন্নতির জন্য গুরুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে গেছেন । বর্তমান গুরুকূল পরিবার পোষা গুরুগিরি ছেড়ে "হাতে কাম মুখে নাম" করলে উভয়ের মঙ্গল । নচেৎ মহান মতুয়া ধর্ম অদূর ভবিষ্যতে বহুধা বিভক্ত হবে সন্দেহ নেই । নিছক ব্যক্তি স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সমগ্র জাতির কল্যাণ চিন্তা করাই শ্রেষ্ঠ পথ ।

                   "জাতির উন্নতি লাগি, হও সবে স্বার্থত্যাগি,
                   জাতি ধর্ম জাতি মান, জাতি মোর ভগবান,
                          জাতি ছাড়া অন্য চিন্তা নাই ।"
বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে গুরুচাঁদ ঠাকুরের এই আত্মসচেতনী উদার আহ্বান বাণী । তিনি ছত্রিশটি  বিচ্ছিন্ন জাতিকে একত্রিত করে যে পথ ও পাথেয় দিয়ে মতুয়া ধর্মকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরেছেন, নিছক ব্যক্তি স্বার্থে এই মহান ধর্মের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না । ঠাকুরের আসনে ঠাকুরকেই বসান । গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে হৃদয় মন্দির হরি গুরুকে প্রতিষ্ঠা করুন।  তাঁর নাম মনন করুন তাতে নিজের দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে তো হবেই । গুরুর আসনে ভুল করে গরুকে বসাবেন না । গুরু-গুরুই হয় আর গরু-গরুই হয় । গরু কখনো গুরু হতে পারে না ।
                "মতুয়ার এক গুরু ভিন্ন গুরু নাই ।
                ভিন্ন ভিন্ন দল কেহ করো না গোসাঁই ।।"
পাগল দলপতিদের যত্র-তত্র ছুতো-নাতায় আস্ফালন করা বা ক্রোধ প্রদর্শন শোভনীয় নয় । 'বিজ্ঞতা' প্রদর্শন অপেক্ষা'বিজ্ঞ' হয়ে ওঠা শ্রেষ্ঠ পথ । আমার কি করা উচিৎ, ঠান্ডা মাথায়  চিন্তা করে শুভ বিবেকী সিদ্ধান্ত আমাকেই নিতে হবে ।

(৩)(মতুয়া পদ্ধতিতে (শ্রাদ্ধ নয়) শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান, বিবাহ ও ঠাকুর পূজার প্রচলন করা ।)
   বৈশ্যসাহা কন্যার সঙ্গে মুসলমান যুবক তিনকড়ি মিঞাঁর বিয়ে দিয়ে সেদিন গুরুচাঁদ ঠাকুর যে সেতু বন্ধন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন এবং ব্রাহ্মণ্যবাদকে পদদলিত করে বিজয় নিশান উড়িয়ে আমাদের বোঝালেন, "তোমরাও মতুয়া ধর্ম-দর্শন মেনে নিজেদের ক্রিয়াকাজ নিজেরাই সম্পন্ন কর" । অর্থাৎ সংস্কৃত ভাষায় রচিত দুর্বোধ্য পদ্ধতি বিসর্জন দিয়ে শুদ্ধ সহজ বাংলা ভাষায় রচিত (শ্রাদ্ধ নয়) শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান, বিবাহ ও ঠাকুর পূজা ইত্যাদি ক্রিয়াকাজ প্রতি ঘরে ঘরে তোমরা চালু কর ।

অথচ এই কাজটিও আমরা সঠিক ভাবে সর্বত্র চালু করতে পারিনি বরং এখনও অধিকাংশ মতুয়া পরিবার ব্রাহ্মণ্য নীতিতেই বিশ্বাসী । আমরা অনেক গল্পভরা কথা বলি কিন্তু স্বীকার করতে হবে, গুরুচাঁদ ঠাকুরের যাবতীয় নির্দেশের মধ্যে একটি নির্দেশও আজ পর্যন্ত আমরা সঠিক ভাবে পালন করতে পারিনি ।

(ঠাকুর নির্দেশিত মত-পথ ও আদর্শকে কিভাবে পালন করতে হবে । )
     প্রসঙ্গক্রমে গুরুচাঁদ ঠাকুরের একটি নির্দেশ বাণী
যেমন-
                  "সবাকারে বলি আমি যদি মানো মোরে ।
                   অবিদ্বান পুত্র যেন নাহি থাকে ঘরে ।।"
প্রশ্ন থেকে যায়-
     আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মান্য করতে পেরেছি ? আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে অন্তর দৃষ্টি দিয়ে বুঝতে পেরেছি ? আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশ মত চলছি ? আমরা কি তাঁর দেওয়া রাজনীতি, সমাজনীতি,শিক্ষানীতি সংস্কার নীতি অর্থনীতি রূপায়ণ করার জন্য নিজেদেরকে সংগঠিত করতে পেরেছি ?
     যদি গুরুচাঁদের গুরুভার বহন না করে থাকি তবে আমি মতুয়া হলাম কি করে  ? একটাই সমাধান,আসুন আমরা প্রথমে মতুয়া হই, তার পর মেতে উঠি হরি-গুরুচাঁদের প্রদর্শিত এবং নির্দেশিত কর্মকান্ড পরিপূরণে ও রূপায়ণে ।
     পরিচ্ছন্নতা মতুয়া ধর্মের একটি বিশেষ অঙ্গ । বাহ্য ও অন্তরঙ্গ শারীরিক পরিচ্ছন্নতা সহ পরিপাটি বসন ভূষণ ব্যবহার পবিত্রতার পরিচায়ক । দেহশ্রীকারক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বেশভূষা পরিধান করা মতুয়াধিরাজ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশ । এই নির্দেশ পালনের মধ্যে মনে প্রাণে শুদ্ধ নিঃষ্কলুষ শ্রী মন্ডিত ভক্তের ভক্তিযুক্ত আত্মনিবেদন আত্মপ্রসাদ লাভ করে সন্দেহ নাই । বহুক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতার অভাব আছে । গৃহাদি দেবতার মন্দির ভেবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিৎ ।
              "ধন চাই বসন ভূষণ চাই, হতে চাই জজ ম্যাজিস্ট্রেট ।
                 ----------------------------------------
                সবখানে থাকা চাই, তা ভিন্ন উপায় নাই ।
                রাজ বেশে সাজ রাজ সাজে ।।
                ------------------
               গৃহে কিংবা শ্রীহরি কীর্তনে ।
                পরিচ্ছন্ন বেশ -ভূষা পর যতনে ।।
               আপন গৃহকে কর শ্রীলক্ষ্মী আগার ।
               ধর্ম-কর্ম মিলেমিশে ভব পারাবার ।।"
            হরিকীর্তন আসরে আমরা নির্দিধায় পান-তামাক-বিড়ি সেবন করি । সম্মুখে শ্রীহরির প্রতিকৃতি বা ছবি থাকে । বিড়ির ধুম্ররাশি ঘুরপাক খেতে খেতে শ্রীহরির অঙ্গে মিশে যায় । আমার হুঁশ নাই । এটা কি ঠিক ? শ্রীহরি-গুরুচাঁদ যদি আমার জীবন দেবতা হন তবে তাঁদের সামনে ধুম পান করা লজ্জাস্কর এবং নিন্দনীয় নয় কি ? ঠাকুরকে যদি ছবি বানিয়ে ফেলি বা ছবি ভাবি তবে আমার কিছু বলার নেই ।তবে তিনি অজর অমর অক্ষয় যুগপ্রহরী, আমার চতুর্দিকে বিরাজ করছেন-এমনটি ভাবলে তিনি আমার কাছে জীবন্ত প্রতিমূর্তি হয়ে আমাকে সর্বদা রক্ষা করবেন সন্দেহ নাই । তদুপরি ধুমপানে আসরের পবিত্রতা নষ্ট হয় এবং অ-ধুমপায়ীদের অসহ্য কষ্ট হয় । তাঁরা দূরে দাঁড়িয়ে থাকেন । অতএব নেশা পরিত্যাগ করাই বিধেয় ।
      প্রায় সর্বত্র হরিকীর্তন আসরে, পাগল-গোসাঁই ও দলপিতিদের গান সর্বস্ব হয়ে ওঠে । প্রথমত গাঙ্গুলি অযথা দীর্ঘায়িত করে  বহু সময় নষ্ট হয়, তদুপরি গায়কদের অপটু অতি দীর্ঘ্যস্বর যুক্ত কাটা কাটা সুর ও লয়ে শব্দার্থ বা মূল শব্দ আদৌ বোধগম্য হয় না । ধৈর্যচ্যুতি ঘটায় । বর্তমান বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে সময়ের এবং বোধচয়নার মূল্যায়ন একান্ত প্রয়োজন । ত ও পথ প্রত্যেকের সঠিক ভাবে জানা প্রয়োজন । এতে মতুয়া ধর্মের প্রচার ও প্রসার বাড়বে এবং গানগুলি ছোট করে সহজ বোধগম্যযুক্ত সুর ও তালে গীত হউক এবং আসরে গানের সংখ্যা   হ্রাস করে বক্তাদের সুযোগ দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন । কারন হরি-গুরুচাঁদ প্রদর্শিত ম জনমানসে সঠিক তথ্য ও তত্ত্ব জ্ঞান করা যাবে । শুধু তাই নয়, হরিচাঁদের প্রেম, জ্ঞান, আর সাম্য স্বাধীনতার 'তত্ত্বদর্শন' সবাই সঠিক ভাবে জানতে ও বুঝতে পারলে তাদের জীবন প্রবাহ হরিপ্রেম মাধুর্যে গঠন করতে পারবেন । এতে, দেশ-জাতি ও সমাজের প্রভুত কল্যাণ হবে, জোর দিয়ে বলছি । (চলবে)

-কালিদাস বারুরী
 শ্রী শ্রী হরিচাঁদ কল্পতরু আগমনের দু-শোটি বছর পার করে এসেছি। এবার আত্ম  সমীক্ষা। দীর্ঘ মতুয়া জীবনচক্রে ত্রুটি বিচ্যুতির চুলচেরা অঙ্ক কষে পাশ ফেলের ফলাফল জেনে নেবার সময় এসেছে । আলোচনা পর্বটি বিচক্ষণ দৃষ্টি দিয়ে হরি-গুরুচাঁদীয় বিপ্লবী শিক্ষা সামাজিক চরিত্রায়নে আমরা নিজেদেরকে কতটুকু সংগঠিত করতে পেরেছি তারই বিচার্য বিষয় ।
     শ্রী শ্রী হরিচাঁদ অভেদাত্মা রাজর্ষি গুরুচাঁদ ঠাকুর প্রবর্তিত মতুয়া ধর্ম দর্শন সমাজের সর্বস্তরের বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া বৃহৎ সংখ্যক মানুষের অগ্রগতির দিক ও দিশা তাতে কোন সন্দেহ নেই । মুষ্টিমেয় এক শ্রেনীর ধুরন্ধর স্বার্থান্বেষী মানুষের কুটকৌশলী দেবদোহায়ী  বর্ণবাদদুষ্ট সামাজিক চাপ-শোষণ বঞ্চনা ও নির্যাতনে পদপিষ্ট হয়ে কাতারে কাতারে বঙ্গের মানুষ যেমন ধর্মান্তরিত হয়েছে তেমনই উদেশ্য প্রণোদিত হীনমন্য প্রবর্তকহীন হিন্দুধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে অগ্রগতির দিক ও দিশা তাতে কোন সন্দেহ নেই ।  মুষ্টিমেয় এক শ্রেণীর ধুরন্ধর স্বার্থান্বেষী মানুষের কূটকৌশলী দেবদোহায়ী বর্ণবাদদুষ্ট সামাজিক চাপ-শোষণ বঞ্চনা ও নির্যাতনে পদপিষ্ট হয়ে কাতারে কাতারে বঙ্গের মানুষ যেমন ধর্মান্তরিত হয়েছে তেমনই উদেশ্য প্রণোদিত হীনমন্য প্রবর্তকহীন হিন্দুধর্মীয় ব্যবস্থাপনায় বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে শিক্ষা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার থেকে হাজার যোজন দূরে সরিয়ে রেখেছে ।
     এমনি এক যুগ সন্ধিক্ষণে পতিত পাবন শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব(১৮১২-১৮৭৮) । শিক্ষা-জ্ঞান জীবে প্রেম, কর্ম-সাম্য এবং স্বাধীন আধ্যাত্মিক তত্ব ও দর্শন সংম্পৃত্ত "মতুয়া ধর্ম" উপহার দিলেন মৃতপ্রায় পতিত জাতিকে । ভেঙ্গে দিলেন ব্রাহ্মণ্য  ষড়যান্ত্রিক মানুষ দলনীতি বিধি বিধান । যুগ পুরুষ হরিচাঁদ ভারতের নবীনতম ঐতিহাসিক ধর্ম ও কর্মের স্রষ্টা ও দ্রষ্টা । ঘৃণক আর দোলকদের ফতোয়াকে অগ্রাহ্য করে শুরু করলেন বহুজন মুক্তির আপোষহীন সংগ্রাম ।
     তাঁর প্রবর্তিত প্রেমভক্তির পূর্ণ মায়া মমতা ভরা মত ও পথ 'মতুয়া ধর্মের' ছায়াছত্রতলে  লক্ষ কোটি মানুষ পেল মুক্তি মোক্ষ, জীবনের বিকাশ-শক্তিতে চেতনা । মন্ত্র দিলেন নিজ নাম, 'হরিবোল' ।
     ভক্তি ভাবের পশরা সাজিয়ে ভক্ত আর ভগবানের কথা লিখেছেন মহানন্দ হালদার এবং রসরাজ তারকচন্দ্র ।
               "নাহি চেনে কোন দেবী, ঘট পট বিম্বা ছবি ।
                জানে, মনে প্রাণে শুধু হরিচাদে ।।'
                দীক্ষা নেই করিবে না তীর্থ পর্যটন ।
                মুক্তি স্পৃহাশূন্য নেই সাধন ভজন ।
                 যাগ-যজ্ঞ তন্ত্র মন্ত্র দীক্ষা
                 কোন কিছুর নাহি প্রয়োজন ।
                 'হরিনাম মহামন্ত্র জান সর্বজন ।।"
     ঠাকুরের বাণীর মধ্যে লুকিয়ে আছে আমার জীবনের দিক নির্ণয়ের নিশানা এবং ঠিকানা । যাঁর কৃপা ও করুণায় আমি শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিন প্রতিষ্ঠা পেয়েছি -সেই করুণার সাগর পরিত্রাতা হরিচাঁদ ভিন্ন আমার জীবনে অন্য কোন দেব দেবী , ঘট পট পূজা নেই, থাকতে পারে না । দীক্ষা নেই, তীর্থ পর্যটন নেই, যাগ-যজ্ঞ, তন্ত্র-মন্ত্র কিছুই নেই । একমাত্র হরিচাঁদই আমার উপাস্য ।
     দীক্ষা-শিক্ষা মন্ত্রের অসারতার কথাও তিনি জোরের সঙ্গে ঘোষণা করলেন-
                     "দীক্ষা মন্ত্র দেয় গুরু কর্ণে মুখ রাখি ।
                      হরিনাম মন্ত্র বিনা, সব মন্ত্র ফাঁকি ।।"
তা সত্ত্বেও মতুয়াদের মধ্যে দীক্ষা মন্ত্রের প্রচলন সর্বত্র দেখতে পাই । হরিচাঁদ  দৃঢ়তার সঙ্গে ভক্তদের সাবধান করলেন এবং অভয় দিয়ে বললেন-
                      "হরিনাম  মন্ত্র বিনা, সব মন্ত্র ফাঁকি।"
     -অর্থাৎ হরিনাম-ই একমাত্র মহৌষধ-এর উপরে কোন ঔষধ নেই ।
     তিনি পূর্ণ ভরসা দিয়ে বললেন-"আমার নাম অর্থাৎ 'হরিনাম' উচ্চারণে জীবনীয় শক্তি ও মুক্তি পাবে, আর কিছুর প্রয়োজন নাই । তা সত্ত্বেও অধিকাংশ মতুয়া পরিবারে বেশ ঘটা করে বিভিন্ন দেব-দেবী পূজার প্রচলন বিদ্যমান। পাশাপাশি কৃষ্ণনাম যজ্ঞ সহ অন্যান্য অনেক(ব্রাহ্মণ্যবাদী) গুরু পূজাও বিদ্যমান । কাউকে আঘাত দেওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়, আমার প্রশ্ন "বিশ্বাসের" । আমার 'বিশ্বাস' যদি বহুমুখি হয় সে ক্ষেত্রে আমার ভক্তি-শ্রদ্ধা-পূজা সবই বহুমুখি হবে এবং জনে জনে বিভক্ত হতে থাকবে । ফলে হরি পূজা পূর্ণতা লাভ করবে না । আমার 'বিশ্বাস' ও একমাত্র'হরি' কেন্দ্রীক হবে না, আমার উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ একজনের উপরে আমি বিশ্বাস রাখতে পারছি না, ভুলে গেছি তিনিই আমার উদ্ধারকর্তা । বর্তমান প্রতিষ্টা তিনিই আমাকে দিয়েছেন । লক্ষী, সরস্বতী ,কালী, দুর্গা, রামকৃষ্ণ,অনুকুল,   নিগমানন্দ, জগদানন্দ এঁনারা আমার উদ্ধারকর্তা নন । অতএব মতুয়াদের ভাবতে হবে, দ্বি-চারিতা হচ্ছে না তো ? যেখানে হরিঠাকুর নিজের স্বরূপ প্রকাশ করে বলেন-
                        "পূর্ণ আমি হরিচাঁদ অপূর্ণের পিতা
                        সাধনা আমার কন্যা, আমি জন্মদাতা ।"
এতবড় প্রমাণ আর ভরসা থাকা সত্তেও মতুয়াদের বহুমুখি হওয়া  মানেই তো হরিচাঁদে  বিশ্বাসের অভাব । পক্ষান্তরে মনগড়া ব্যবসা বিত্তিক দেব-দেবী ও মূর্তি পূজায় অগাধ বিশ্বাস, এর অর্থ ব্রাহ্মণ্য নীতি -বিধি বিধানে আমার বেশী বিশ্বাস । অথচ এই বিধানের বি রুদ্ধাচারণ করে শ্রীহরি বললেন-
                        "তিন বেলা সন্ধ্যা কর আর সন্ধাহ্নিক ।
                        স্নান পূজা সন্ধাহ্নিক মোর নাহি ঠিক ।।
                        কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলে খাই ।
                        বেদ বিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই ।।"
প্রশ্ন থেকে যায়-
            আমি কি মতুয়া হতে পেরেছি ? আমি কি মতুয়া বিধি বিধান মেনে চলছি ? আমি কি একমাত্র শ্রীহরিতে বিশ্বাস রাখতে পেরেছি ? আমি কি পরিবারে হরি-গুরুচাদের ধর্ম-দর্শন প্রতিষ্টা করতে পেরেছি? আমি কি হীনমন্য হিন্দু ধর্মের প্রতিবাদী 'মতুয়া' ধর্মাবলম্বী হতে পেরেছি ? আমি কি ভেদাভেদহীন "স্বয়ং সম্পুর্ণ মতুয়া ধর্মকে" জনমানসে প্রতিষ্ঠা কল্পে প্রচারে ও প্রসারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে পেরেছি ?
       
      যদি না পেরে থাকি তবে আর সময় নষ্ট না করে এখনই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে যথার্থ মতুয়া হওয়ার লক্ষ্যে । এটা করতে পারলেই মুক্তি ও প্রাপ্তি । মহাশক্তি ও স্বস্তির পথ সুগম হবেই হবে ।

(২)   (মতুয়া ধর্মে নারীর মর্যাদা ও অধিকার)
       নারী মাত্রই মাতৃসমা । শ্রদ্ধা-ভক্তি ভালবাসা বা স্নেহের পাত্রী । মতুয়া ধর্মে ব্রাহ্মণ্য নীতি  বিধি অনুযায়ী নারী জাতিকে মর্যাদাশীল পরনির্ভরশীল 'নরকের দ্বার' করে রাখা হয় নাই । নারী ও পুরুষের সমান অধিকার, একথা মতুয়াধিপতি হরি গুরুচাঁদ ধর্মীয় ও মানবীয় ব্যাখ্যায় প্রথম জাতিকে প্রকাশ্যে দিবালোকের অক্সিজেন যোগান দিয়ে হরি-গুরুচাঁদ গড়লেন এক নয়া ইতিহাস । মায়েদের হাতে ধুপ-দ্বীপ-শঙ্খ দিয়ে, দিলেন পূজার অধিকার, ধর্মের অধিকার । নারী শিক্ষা বিদ্যালয় গড়ে, দিলেন শিক্ষার অধিকার । ঘটল মাতৃত্বের পূর্ণ বিকাশ । হরি-গুরুচাঁদ কল্পবৃক্ষে সোনার মানুষ, সাধু -সাধক, শিক্ষিত যুবক-যুবতীর ফসল ফলল । নারী জাতিকে মতুয়া কি নজরে দেখবেন তাও বলে দিলেন প্রাণারাম-
                   "পর নারী মাতৃজ্ঞানে দূরেতে থাকিবে ।
                   পরিহাস বাচালতা কভু না করিবে ।।
                   মেয়ে পুরুষেতে বসি একপাতে খায় ।
                  মেয়েদের এঁটো খায় পদধুলা লয় ।।
                   ----------------------------
                  পুরুষ ঢলিয়া পড়ে মেয়েদের পায় ।
                  এক নারী ব্রহ্মচারী সৎচরিত্র রবে ।
                  ------------------------------
                  নিজ নারী ভিন্ন অন্য নারীতে গমন ।
                  মহাপাপী ব্যভিচারী সেই একজন ।।
প্রশ্ন থেকে যায়,-
      আমরা নারী জাতিকে মাতৃজ্ঞানে সম্মান করি তো ? আমি নিজ নারী সহ ব্রহ্মচারীর ন্যায়
সৎ চরিত্র বহন করছি তো ? আমি হরিনামামৃত পান করে দেহের ইন্দ্রিয় নিজের করায়াত্বে এনেছি তো ?আমি নারী মাত্রই 'মা' সম্বোধন করি তো ? মায়েদের সুখ-দুঃখের সমান  ভাগীদার হই তো?
      যদি না করে থাকি তবে আমার মতুয়া জীবন বৃথা ।মনে রাখবেন, হরি-গুরুচাঁদ প্রবর্তিত  ধর্ম-দর্শন অতি উচ্চমার্গের । একে জীবনদায়ী ঔষধ মেনে গ্রহন করতে পারলে আমি নিশ্চিত করে বলছি, আপনার উন্নয়নের জন্য আপনাকে ভাবতে হবে না ।
                   "সর্বধর্ম লঙ্ঘি এবে করিলেন স্থূল ।
                   শুদ্ধ মানুষেতে আর্তি এই হয় মূল ।।"

                      (প্রেমবন্ধনের দৃঢ়তা কেন এত ঠুনকো ?)
     শ্রীহরি বাসরে সরল অনাড়ম্বর জীবন সঞ্জাত 'হরিবোল' নামে ভাবোন্মোত্ত মতুয়াদের মমত্ত্বের ও সমত্বের প্রেমপ্রক্ষালনি অশ্রুসজল বাহু বেষ্টিত ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে দৃশ্যায়ন, আকর্ষণীয় প্রেমভক্তি ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায় । কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে বলছি, এই ভাব ও সম্পর্ক স্ব-স্ব এলাকায় দেখা যায় না । সেখানে সগোত্রীয় হয়েও মেলামেশায় বহুলাংশে ফারাক । হিংসা-দ্বেষ,  দ্বিধা-দ্বন্দ্ব হাম বড়াই ভাবের অবাধ বিচরণ । চোখা চোখা বিশেষণ (গালাগালি) প্রয়োগে পারদর্শিতা যথেষ্ট । বাহু যুদ্ধেও পিছিয়ে নাই । মুখ দেখাদেখি বন্ধ থাকে , প্রতিশোধ স্পৃহা ঘুম কেড়ে নেয় । পড়শিদের ভীতি প্রদর্শনে ভীত নয় । অথচ এরাই হরিবাসরে হরিনামের অমৃত ভাব ও প্রেমের বন্যা বইয়ে দেয় । পদধুলি সংগ্রহে কাড়াকাড়ি হয় । কোলাকুলি অশ্রুবন্যায় হরিবাসর প্রেমের সাগর হয়ে ওঠে । ভাবি এই বন্ধন চিরস্থায়ী নয় কেন ? এই প্রেম সর্বত্র সর্বদা সমানভাবে সংঘবদ্ধ হয় না কেন ? যেখানে দয়াধীশ ভবিষ্যৎ বাণী দিয়েছেন-
                  "সর্বজাতি সমন্বয় হবে তাঁর মতে ।
                  ভাই ভাই হয়ে সব চলিবে সে পথে ।।"

                                 (গুরুগিরি)
                 অনেকে গুরুগিরি করেন । গুরুগিরি ব্যবসা করেন, সংসার চালান, দীক্ষা দেন, শিষ্য তৈরীতে পারদর্শিতা দেখান । যে সাধন- ভজন অধ্যাবসায় দক্ষতা থাকা দরকার-ইদানিং গুরুদের মধ্যে তেমন উপযুক্ত একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না । গোপাল সাধু, তারক  গোঁসাই, লোচন, অশ্বিনী, নাটু, ব্রজনাথ ডাঃ তারিনী বলের মতো সাধক পুরুষ আছে কি ? এঁনারা জীবন দিয়ে জাতির উন্নতির জন্য গুরুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে গেছেন । বর্তমান গুরুকূল পরিবার পোষা গুরুগিরি ছেড়ে "হাতে কাম মুখে নাম" করলে উভয়ের মঙ্গল । নচেৎ মহান মতুয়া ধর্ম অদূর ভবিষ্যতে বহুধা বিভক্ত হবে সন্দেহ নেই । নিছক ব্যক্তি স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সমগ্র জাতির কল্যাণ চিন্তা করাই শ্রেষ্ঠ পথ ।

                   "জাতির উন্নতি লাগি, হও সবে স্বার্থত্যাগি,
                   জাতি ধর্ম জাতি মান, জাতি মোর ভগবান,
                          জাতি ছাড়া অন্য চিন্তা নাই ।"
বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে গুরুচাঁদ ঠাকুরের এই আত্মসচেতনী উদার আহ্বান বাণী । তিনি ছত্রিশটি  বিচ্ছিন্ন জাতিকে একত্রিত করে যে পথ ও পাথেয় দিয়ে মতুয়া ধর্মকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরেছেন, নিছক ব্যক্তি স্বার্থে এই মহান ধর্মের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না । ঠাকুরের আসনে ঠাকুরকেই বসান । গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে হৃদয় মন্দির হরি গুরুকে প্রতিষ্ঠা করুন।  তাঁর নাম মনন করুন তাতে নিজের দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে তো হবেই । গুরুর আসনে ভুল করে গরুকে বসাবেন না । গুরু-গুরুই হয় আর গরু-গরুই হয় । গরু কখনো গুরু হতে পারে না ।
                "মতুয়ার এক গুরু ভিন্ন গুরু নাই ।
                ভিন্ন ভিন্ন দল কেহ করো না গোসাঁই ।।"
পাগল দলপতিদের যত্র-তত্র ছুতো-নাতায় আস্ফালন করা বা ক্রোধ প্রদর্শন শোভনীয় নয় । 'বিজ্ঞতা' প্রদর্শন অপেক্ষা'বিজ্ঞ' হয়ে ওঠা শ্রেষ্ঠ পথ । আমার কি করা উচিৎ, ঠান্ডা মাথায়  চিন্তা করে শুভ বিবেকী সিদ্ধান্ত আমাকেই নিতে হবে ।

(৩)(মতুয়া পদ্ধতিতে (শ্রাদ্ধ নয়) শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান, বিবাহ ও ঠাকুর পূজার প্রচলন করা ।)
   বৈশ্যসাহা কন্যার সঙ্গে মুসলমান যুবক তিনকড়ি মিঞাঁর বিয়ে দিয়ে সেদিন গুরুচাঁদ ঠাকুর যে সেতু বন্ধন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন এবং ব্রাহ্মণ্যবাদকে পদদলিত করে বিজয় নিশান উড়িয়ে আমাদের বোঝালেন, "তোমরাও মতুয়া ধর্ম-দর্শন মেনে নিজেদের ক্রিয়াকাজ নিজেরাই সম্পন্ন কর" । অর্থাৎ সংস্কৃত ভাষায় রচিত দুর্বোধ্য পদ্ধতি বিসর্জন দিয়ে শুদ্ধ সহজ বাংলা ভাষায় রচিত (শ্রাদ্ধ নয়) শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান, বিবাহ ও ঠাকুর পূজা ইত্যাদি ক্রিয়াকাজ প্রতি ঘরে ঘরে তোমরা চালু কর ।

অথচ এই কাজটিও আমরা সঠিক ভাবে সর্বত্র চালু করতে পারিনি বরং এখনও অধিকাংশ মতুয়া পরিবার ব্রাহ্মণ্য নীতিতেই বিশ্বাসী । আমরা অনেক গল্পভরা কথা বলি কিন্তু স্বীকার করতে হবে, গুরুচাঁদ ঠাকুরের যাবতীয় নির্দেশের মধ্যে একটি নির্দেশও আজ পর্যন্ত আমরা সঠিক ভাবে পালন করতে পারিনি ।

(ঠাকুর নির্দেশিত মত-পথ ও আদর্শকে কিভাবে পালন করতে হবে । )
     প্রসঙ্গক্রমে গুরুচাঁদ ঠাকুরের একটি নির্দেশ বাণী
যেমন-
                  "সবাকারে বলি আমি যদি মানো মোরে ।
                   অবিদ্বান পুত্র যেন নাহি থাকে ঘরে ।।"
প্রশ্ন থেকে যায়-
     আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মান্য করতে পেরেছি ? আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরকে অন্তর দৃষ্টি দিয়ে বুঝতে পেরেছি ? আমরা কি গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশ মত চলছি ? আমরা কি তাঁর দেওয়া রাজনীতি, সমাজনীতি,শিক্ষানীতি সংস্কার নীতি অর্থনীতি রূপায়ণ করার জন্য নিজেদেরকে সংগঠিত করতে পেরেছি ?
     যদি গুরুচাঁদের গুরুভার বহন না করে থাকি তবে আমি মতুয়া হলাম কি করে  ? একটাই সমাধান,আসুন আমরা প্রথমে মতুয়া হই, তার পর মেতে উঠি হরি-গুরুচাঁদের প্রদর্শিত এবং নির্দেশিত কর্মকান্ড পরিপূরণে ও রূপায়ণে ।
     পরিচ্ছন্নতা মতুয়া ধর্মের একটি বিশেষ অঙ্গ । বাহ্য ও অন্তরঙ্গ শারীরিক পরিচ্ছন্নতা সহ পরিপাটি বসন ভূষণ ব্যবহার পবিত্রতার পরিচায়ক । দেহশ্রীকারক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বেশভূষা পরিধান করা মতুয়াধিরাজ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশ । এই নির্দেশ পালনের মধ্যে মনে প্রাণে শুদ্ধ নিঃষ্কলুষ শ্রী মন্ডিত ভক্তের ভক্তিযুক্ত আত্মনিবেদন আত্মপ্রসাদ লাভ করে সন্দেহ নাই । বহুক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতার অভাব আছে । গৃহাদি দেবতার মন্দির ভেবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিৎ ।
              "ধন চাই বসন ভূষণ চাই, হতে চাই জজ ম্যাজিস্ট্রেট ।
                 ----------------------------------------
                সবখানে থাকা চাই, তা ভিন্ন উপায় নাই ।
                রাজ বেশে সাজ রাজ সাজে ।।
                ------------------
               গৃহে কিংবা শ্রীহরি কীর্তনে ।
                পরিচ্ছন্ন বেশ -ভূষা পর যতনে ।।
               আপন গৃহকে কর শ্রীলক্ষ্মী আগার ।
               ধর্ম-কর্ম মিলেমিশে ভব পারাবার ।।"
            হরিকীর্তন আসরে আমরা নির্দিধায় পান-তামাক-বিড়ি সেবন করি । সম্মুখে শ্রীহরির প্রতিকৃতি বা ছবি থাকে । বিড়ির ধুম্ররাশি ঘুরপাক খেতে খেতে শ্রীহরির অঙ্গে মিশে যায় । আমার হুঁশ নাই । এটা কি ঠিক ? শ্রীহরি-গুরুচাঁদ যদি আমার জীবন দেবতা হন তবে তাঁদের সামনে ধুম পান করা লজ্জাস্কর এবং নিন্দনীয় নয় কি ? ঠাকুরকে যদি ছবি বানিয়ে ফেলি বা ছবি ভাবি তবে আমার কিছু বলার নেই ।তবে তিনি অজর অমর অক্ষয় যুগপ্রহরী, আমার চতুর্দিকে বিরাজ করছেন-এমনটি ভাবলে তিনি আমার কাছে জীবন্ত প্রতিমূর্তি হয়ে আমাকে সর্বদা রক্ষা করবেন সন্দেহ নাই । তদুপরি ধুমপানে আসরের পবিত্রতা নষ্ট হয় এবং অ-ধুমপায়ীদের অসহ্য কষ্ট হয় । তাঁরা দূরে দাঁড়িয়ে থাকেন । অতএব নেশা পরিত্যাগ করাই বিধেয় ।
      প্রায় সর্বত্র হরিকীর্তন আসরে, পাগল-গোসাঁই ও দলপিতিদের গান সর্বস্ব হয়ে ওঠে । প্রথমত গাঙ্গুলি অযথা দীর্ঘায়িত করে  বহু সময় নষ্ট হয়, তদুপরি গায়কদের অপটু অতি দীর্ঘ্যস্বর যুক্ত কাটা কাটা সুর ও লয়ে শব্দার্থ বা মূল শব্দ আদৌ বোধগম্য হয় না । ধৈর্যচ্যুতি ঘটায় । বর্তমান বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে সময়ের এবং বোধচয়নার মূল্যায়ন একান্ত প্রয়োজন । ত ও পথ প্রত্যেকের সঠিক ভাবে জানা প্রয়োজন । এতে মতুয়া ধর্মের প্রচার ও প্রসার বাড়বে এবং গানগুলি ছোট করে সহজ বোধগম্যযুক্ত সুর ও তালে গীত হউক এবং আসরে গানের সংখ্যা   হ্রাস করে বক্তাদের সুযোগ দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন । কারন হরি-গুরুচাঁদ প্রদর্শিত ম জনমানসে সঠিক তথ্য ও তত্ত্ব জ্ঞান করা যাবে । শুধু তাই নয়, হরিচাঁদের প্রেম, জ্ঞান, আর সাম্য স্বাধীনতার 'তত্ত্বদর্শন' সবাই সঠিক ভাবে জানতে ও বুঝতে পারলে তাদের জীবন প্রবাহ হরিপ্রেম মাধুর্যে গঠন করতে পারবেন । এতে, দেশ-জাতি ও সমাজের প্রভুত কল্যাণ হবে, জোর দিয়ে বলছি । (চলবে)