Pages

Free counters!
FollowLike Share It

Sunday 5 October 2014

সাংবিধানিক ভারতের নির্মাতা বাবাসাহেব ডঃ আম্বেদকর ও মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল  পুস্তক সমীক্ষাঃজগদীশ রায়

সাংবিধানিক ভারতের নির্মাতা বাবাসাহেব ডঃ আম্বেদকর ও মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল 
পুস্তক সমীক্ষাঃজগদীশ রায়

Jagadish Roy

মহাপ্রাণ যোগেন্র্েনাথ মন্ডল-এর উপর থিসিস করেছেন নাগপুরের ডঃ সঞ্জয় গাজভিয়ে । তিনি মহাপ্রাণ সম্পর্কে বলেছেন- সাংবিধানিক ভারতের নির্মাতা বাবাসাহেব ডঃ আম্বেদকর ও মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল –ডঃ সঞ্জয় গাজভিয়ে ।
আবার নাগপুর উনিভারসিটির অধ্যাপক ডঃ প্রদীপ আগলাবে বলেছেন- 
বাবাসাহেব ডঃ আম্বেদকর সামাজিক রাজনৈতিক শৈক্ষনিক ধার্মিক ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন আনার জন্য ঐতিহাসিক আর ক্রান্তিকারী কাজ করেছেন; সেই মহান ক্রান্তিকারী কাজ করার জন্য যে মহামানব বাবাসাহেবকে সহযোগীতা করেছেন, সেই মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের আবদান খুব মহত্ত্বপূর্ণ । যদি মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের এই সহযোগীতা বাবাসাহেব না পেতেন, তাহলে তিনি সংবিধান তৈরী করতে পারতেন না । ঐতিহাসিক সত্য ।
- ডঃ প্রদীপ আগলাবে ।
বাবাসাহেব যদি সংবিধান সভায় যেতে না পারতেন তাহলে এই দেশের সংবিধান ব্রাহ্মণদের পক্ষেই লেখা হ’ত । তাই যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল আম্বেদকরী আন্দোলনে যে সহযোগীতা করেছেন এবং মূলনিবাসীদের উদ্ধারের জন্য যে কাজ করেছেন সেটা অসাধারণ কাজ । - ডঃ প্রদীপ আগলাবে।
বাঙ্গলা বিভাজন যাতে না হয় তার জন্য ১৯৪৭ সালে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল বাংলার বিভিন্ন জায়গায় বাংলা বিভাজনের বিরুদ্ধে লোকদের জাগৃত করার কাজ করেন । খড়িবাড়ি(দার্জিলিং) , জলপাইগুড়ী, দিনাজপুর, হরিনারায়নপুর, খোলাপোতা গ্রাম(২৪ পরগনা ) কলকাতা, বর্ধমান, বীরভুম, হুগলী ইত্যাদি জায়গায় বাংলা বিভাজনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন । যেকোন পরিস্থিতিতে তিনি বাংলাকে বিভাজিত হ’তে বন্ধকরার চেষ্টা করেছিলেন ।
বাংলা বিভাজনের পক্ষে কংগ্রেস আর উচ্চবর্নীয়রা কেন ছিল সেটা জানা খুব দরকার । 
প্রথমকারনঃ- বাংলা প্রান্তে মুসলিম এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেনীর(বিশেষ করে নমঃশুদ্র) লোকদের সংখ্যা সর্বাধিক ছিল । সেখানে মুসলিম লীগের সরকার ছিল। যদি বাংলার বিভাজন না হয় তাহলে মুসলিম আর পিছিয়ে পড়া শ্রেনীর সত্তা চিরস্থায়ী হবে। সেখানে উচ্চবর্ণীয়দের কোন অধিকার থাকবে না । 
দ্বিতীয় কারনঃ- বাংলার খুলনা, যশোর, ফরিদপুর, বরিশাল এই এলাকা থেকে বাবা সাহেবকে নির্বাচিত করে সংবিধান সভায় পাঠানো হয় । তাই বাংলা বিভাজন করে বাবাসাহেব যে ক্ষেত্র থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সেখান থেকে বাবাসাহেবের সদস্য পদ খারিজ করার উদ্দেশ্যে বাংলা ভাগ করে ছিল । 
তৃতীয়কারনঃ- যে নমঃ(শুদ্র)রা বাবাসাহেবকে সংবিধান সভায় নির্বাচিত করে পাঠিয়েছেলেন তাদেরকে সাজা দেওয়ার জন্য যাতে তারা আজীবন মুসলমানদের আধীন থাকে, এই শিক্ষা দেওয়ার জন্য বাংলা ভাগ করেছিল । 
কিছুলোক এটা মনে করে যে, যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল ১৯৫০ সালে ভারতে এসে কোন কাজ করেননি । তিনি বাবা সাহেবের আন্দোলন থেকে পৃথক হয়ে গেছেন ! 
এবিষয়ে ডঃ গাজভীয়ে প্রমান দিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে, যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল ভারতে আসার পর পূর্ব পাকিস্থান থেকে আসা নির্বাসিতদেরকে পুর্নবসন দেওয়ার কাজ করেন । তিনি এই কাজ করার জন্য “পশ্চিমবঙ্গ তফশিলি জাতি ও উপজাতি পরিষদ গঠন করেন । ধর্মান্তরিত বৌদ্ধ ও তফশিলি জাতির লোকরা যাতে তাদের সংরক্ষনের সুযোগ পায় তার জন্য খুব চেষ্টা করেন । 
যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের জীবনের কর্মধারাই হচ্ছে-ব্যাতিক্রমি । তিনি যেকাজ করেন বা করেছেন সেটা দ্বিতীয় বার কেঊ করার সাহসও দেখাতে পারেননি । তাঁর প্রধান কাজ গুলির মধ্যে একটা হচ্ছে- ৬ জানুয়ারী ১৯৩৬ সালে বাংলার বিধান সভায় নির্বাচনের জন্য সাধারণ সিটে প্রতি দ্বন্দ্বিতা । আর প্রতিদ্বন্দ্বি এক অসাধারণ ব্যাক্তি । যিনি জমিদার অশ্বিনী কুমার দত্তের ভাইপো কংগ্রেসের প্রার্থী সরল দত্ত । শত চেষ্টা করেও কংগ্রেস যখন যোগেন্দ্রনাথের বিজয়কে রুদ্ধ করতে পারল না তখন এক ঘটনা গান্ধীর কাছে কাঁটা ‘ঘা’-এ নুনের ছিটা লাগল । তিনি যোগেন্দ্রনাথের ব্যাপারে বাংলার কংগ্রেস কমিটিকে একটা পত্র লেখেন-“প্রকৃত সেবকে তার সফলতার জন্য কোন বিশেষ চিহ্নের দরকার হয়না। তার নির্বাচনী চিহ্ন তো বাস্তবে তার দ্বারা জনতাকে ‘সেবা করা আর প্রেম করা’।” For the Success of real public worker no tread mark is required real service and love for the masses are only trade mark .
যোগেন্দ্রনাথের সর্বোত্তম ও অনন্য সাধারণ কৃতিত্ত্ব তো সবাই জানেন যে, তাঁর সংগ্রামী প্রচেষ্টার জন্যই তিনি বাবাসাহেবকে সংবিধান সভায় পাঠিয়ে সক্ষম হয়ে ছিলেন । এখানেও তিনি ব্যাতিক্রমি কাজ একটা করেছেন যে, তিনি একক সদস্য হয়ে বাবা সাহেবের পক্ষে আরও ৫টি ভোট সংগ্রহ করেছিলেন, এবং সেটা কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে । যে ঘটনা ভারতের ইতিহাসে বিরল ঘটনা ।

No comments:

Post a Comment