Pages

Free counters!
FollowLike Share It

Monday, 1 September 2014

স্মার্ট সিটি ও বুলেট ট্রেন প্রকল্পের হাত ধরে যে ব্যাপক হারে ভারতে জাপানী পুঁজি আমদানি হতে চলেছে,তাঁর বন্দোবস্তে নিজেদের বখরা বুঝে নিতেই আমবানিদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই জাপান সফর কিন্তু হল না। আগামী সপ্তাহে মদন মিত্রকে ডাক পাঠাতে পারে সিবিআই মোদির ভাষণ স্কুলে? ফরমানে রাজ্যের ‘না’ পলাশ বিশ্বাস মোদীর ‘হিটলারি’ ফতোয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষামহল

স্মার্ট সিটি ও বুলেট ট্রেন প্রকল্পের হাত ধরে যে ব্যাপক হারে ভারতে জাপানী পুঁজি আমদানি হতে চলেছে,তাঁর বন্দোবস্তে নিজেদের বখরা বুঝে নিতেই আমবানিদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই জাপান সফর কিন্তু হল না। আগামী সপ্তাহে মদন মিত্রকে ডাক পাঠাতে পারে সিবিআই মোদির ভাষণ স্কুলে? ফরমানে রাজ্যের ‘না’ পলাশ বিশ্বাস মোদীর ‘হিটলারি’ ফতোয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষামহল

31 Aug 2014, 09:37

শিক্ষক দিবসে প্রতিটি স্কুলে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনানোর ফতোয়ায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ রাজ্যের শিক্ষা মহল৷ কেউ বলেছেন, এটা হিটলারি সিদ্ধান্ত৷ কারও মতে, এটা ফ্যাসিবাদেরই নামান্তর৷ আজকালের প্রতিবেদন: স্কুলে স্কুলে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচার করতে পারবে না রাজ্য৷‌ এ ব্যাপারে কেন্দ্র যে নির্দেশ দিয়েছে তা মানবে না রাজ্য৷‌ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি শনিবার বলেন, ওই নির্দেশ মানার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই৷‌ সুতরাং আমরা জানিয়ে দেব আমরা নির্দেশ মানতে পারছি না৷‌ সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে সব রাজ্যে একটি নির্দেশ এসেছে৷‌ তাতে বলা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে প্রধানমন্ত্রী দিল্লির স্কুল ছাত্রদের সামনে একটি ভাষণ দেবেন৷‌ দুপুর পৌনে তিনটে থেকে পাঁচটা পর্যম্ত তিনি পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন৷‌ এই অনুষ্ঠান সব ছাত্রছাত্রীদের দেখাতে হবে বলে ফতোয়া এসেছে৷‌ বলা হয়েছে যে-সব স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ ও টিভি আছে সে-সব স্কুলে অনুষ্ঠান দেখানো কোনও সমস্যা নয়৷‌ কিন্তু যে-সব স্কুলে তা নেই, সেখানে বিশেষ জেনারেটরের মাধ্যমে, টিভি এনে স্কুল পড়ুয়াদের তা দেখাতে হবে৷‌ যদি তা না সম্ভব হয় তা হলে বেতারে তা শোনাতে হবে৷‌ কারণ দূরদর্শন ও বেতার দুটিতেই সেই অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে৷‌ কিন্তু রাজ্যের বহু স্কুলে টিভি নেই৷‌ এমনকী বিদ্যুৎ সংযোগ নেই এমন স্কুলের অভাব কম নয়৷‌ সে ক্ষেত্রে এ ধরনের ফতোয়া মানা অসম্ভব৷‌ বহু স্কুল আছে যেখানে শৌচাগার নেই, পানীয় জলের যথাযথ ব্যবস্হা নেই, ব্ল্যাকবোর্ড নেই৷‌ সুতরাং এই ফতোয়ার কোনও অর্থ হয় না৷‌ কী করে সেই সব স্কুলে জেনারেটরের মাধ্যমে এত অল্প সময়ে এই নির্দেশ কার্যকর করা সম্ভব? তবে পার্থ চ্যাটার্জি এখন বহরমপুরে আছেন, তিনি কলকাতায় ফিরে নির্দেশটি ভাল করে দেখবেন৷‌ তার পর রাজ্যের সিদ্ধাম্ত কেন্দ্রকে জানানো হবে৷‌ দিল্লি, ৩০ আগস্ট (পি টি আই)–দাঙ্গার জন্য সরাসরি সংখ্যালঘুদেরই দায়ী করলেন বি জে পি-র লড়াকু নেতা যোগী আদিত্যনাথ৷‌ যোগীর দাবি, যেখানেই ওরা সংখ্যায় ১০ শতাংশের বেশি হয় দাঙ্গা বাধে৷‌ আর ৩৫ শতাংশের বেশি হলে সেখানে অমুসলিমদের আর ঠাঁই-ই হয় না৷‌ উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে বি জে পি-র হয়ে প্রচারে আসা তিন নেতার মধ্যে যোগী ছিলেন অন্যতম৷‌ নিজের এই প্ররোচনামূলক ভাষণের সমর্থনে গোরখপুরের এই সাংসদ বলেন, যদি আক্রমণ করা হয় বা জোর করে ধর্মাম্তরণের চেষ্টা হয়, হিন্দুরা একই ভাষায় প্রত্যুক্তর দেবে৷‌ ‘আপ কি আদালত’ অনুষ্ঠানে রজত শর্মাকে তিনি দাঙ্গা বাধার তিনটি কারণের কথাও জানান৷‌ বলেন, তিন ধরনের জায়গা আছে, যেখানে দাঙ্গা হয়৷‌ যেখানে ১০ থেকে ২০ শতাংশ সংখ্যালঘু আছে, সেখানে ছোটখাট সঙঘর্ষ হয়৷‌ যেখানে ওরা ২০-৩৫ শতাংশ, সেখানে গুরুতর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়, আর ৩৫ শতাংশের বেশি হলে সেখানে অমুসলিমদের কোনও জায়গাই নেই৷‌ সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে যোগীর হুঁশিয়ারি– তুমি (সংখ্যালঘু) যদি আমাদের একজনকে খুন করো, তাহলে এটা আশা করো না, তোমরা নিরাপদে থাকবে৷‌ যদি অপর পক্ষ শাম্তিতে না থাকে, তাহলে আমরা তাদের কীভাবে শাম্তিতে থাকতে হয় শিখিয়ে দেব৷‌ যোগীর দুটো জ্বালাময়ী বক্তৃতার সিডি প্রকাশ হয়ে পড়ার পরই তা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে৷‌ যোগীর বক্তব্য, যা বলেছি, তা পরিস্হিতি সাপেক্ষে৷‌ প্রসঙ্গত আসে ‘লাভ জিহাদ’৷‌ যোগী একে ভারতের বিরুদ্ধে এক আম্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বলেন৷‌ জানিয়েছেন, হিন্দুত্ববাদীরা মেয়েদের এই ধর্মাম্তর ঠেকাবে৷‌ ঠিক ছিল,ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুকেশ আমবানি ও আজিম প্রেমজিকে সঙ্গে নিয়ে জাপান সফরে যাবেন। বাংলাদেশে জাপানী পুঁজির যে রমরমা,ভারতে অটো সেক্টার এবং ইলেক্ট্রানিকের বাইরে তাঁর দেখা নেই।ভারতে তেল ওগ্যাস সহ সর্বক্ষেত্রেই আমবানিদের রমরমা।বিশেষকরে ইন্ফ্রাতে।বিশেষকরে মেট্রো রেলওয়ে নির্মাণ  এখন আমবানিদের একচেটিয়া কারবারে দাঁড়িয়েছে। স্মার্ট সিটি ও বুলেট ট্রেন প্রকল্পের হাত ধরে যে ব্যাপক হারে ভারতে জাপানী পুঁজি আমদানি হতে চলেছে,তাঁর বন্দোবস্তে নিজেদের বখরা বুঝে নিতেই আমবানিদের প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে এই জাপান সফর।এমনটাই হবার কথা ছিল যা হয়ে ওঠেনি। আনন্দবাজারের খবরঃ স্বাগত। নরেন্দ্র মোদীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা শিনজো আবের। শনিবার। জাপানের কিয়োটোয়। ছবি: এএফপি ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে নরেন্দ্র মোদীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। আবার গন্তব্য শিল্পের অন্যতম তীর্থ জাপান। তাই জাপান সফরে মোদীর সঙ্গী হতে হুড়োহুড়ি ছিল শিল্পমহলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই প্রতিনিধি দলে যোগ দিলেন না মুকেশ অম্বানী। বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে ধারণা রাজনৈতিক শিবিরের। মোদীর সঙ্গে মুকেশের ঘনিষ্ঠতা সুবিদিত। দেশের প্রথম সারির শিল্পপতি ও গুজরাতি ব্যবসায়ী হিসেবে বরাবরই গুজরাতের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন মুকেশ। উপস্থিত থাকতেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লগ্নি টানার উদ্দেশ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও। মুকেশ ও গৌতম আদানির মতো শিল্পপতিদের স্বার্থেই মোদী কাজ করেন বলে বার বার দাবি করেছেন আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল-সহ বিরোধীরা। লোকসভা ভোটের সময়ে মোদীকে মুকেশ-সহ শিল্পপতিরা নানা ভাবে সাহায্য করেছেন বলে দাবি নানা শিবিরের। তাই জাপানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশে মোদীর সফরে মুকেশের না যাওয়া অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, যেতে পারবেন না বলে দুঃখপ্রকাশ করে বার্তা পাঠিয়েছেন মুকেশ। তবে না যাওয়ার কারণ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অফিসাররা। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তাঁর কিছু বলার নেই। রাজনৈতিক সূত্রে খবর, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নির্ধারণ-সহ কয়েকটি বিষয়ে মোদী সরকার তাঁকে অনেক বেশি সহায়তা করবে বলে আশা করেছিলেন মুকেশ। রিলায়্যান্স অন্যায় ভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে। কিন্তু কেবল তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার কৌশল নিতে চান না বলে গোড়া থেকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আর এক ব্যবসায়ী হলেন গৌতম আদানি। তাঁর বিরুদ্ধে কিন্তু মোদী জমানাতেই সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কোনও অভিযোগ উঠলে আইন যে নিজের পথেই চলবে সেই বার্তাও দিতে চেয়েছেন মোদী। অনেকের মতে, প্রত্যাশিত সাহায্য না পেয়েই হয়তো জাপান সফরে না গিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছেন মুকেশও। তবে মুকেশ না গেলেও জাপানে মোদীর সফরসঙ্গী হবেন আদানি, সুনীল ভারতী মিত্তল, শশী রুইয়া, আজিম প্রেমজির মতো শিল্পমহলের প্রথম সারির অনেক ব্যক্তিত্বই। তাঁরা   আগামী কাল বিকেলে টোকিও পৌঁছবেন। সে দিনই কিয়োটো থেকে টোকিও যাবেন প্রধানমন্ত্রীও। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার যে মেলবন্ধন দেখা যায় কিয়োটোতে তা বারাণসীতেও করে দেখাতে চান মোদী। তাই তাঁর উপস্থিতিতে আজ ‘অংশীদার শহর’ হল কিয়োটো ও বারাণসী। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন জাপানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত দীপা ওয়াধওয়া ও কিয়োটোর মেয়র দাইসাকু কাডোকাওয়া। বিশেষ সৌজন্য দেখাতে আজ মোদীকে অভ্যর্থনার জন্য কিয়োটো আসেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। জাপানি প্রথা মেনে মাছকে খাবার খাওয়ান দু’জনে। পরে মোদীর সম্মানে একটি নৈশভোজেরও আয়োজন করেন আবে। তাঁকে বিবেকানন্দকে নিয়ে লেখা কিছু বই ও গীতা উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এই সফরে জাপানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে ধারণা বিদেশ মন্ত্রকের অফিসারদের। পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ করার বিষয়ে বিশেষ ভাবে স্পর্শকাতর হিরোশিমা-নাগাসাকির দেশ জাপান। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, সামরিক পরমাণু প্রকল্প চালু রেখেই আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু জ্বালানি সংক্রান্ত চুক্তি করেছে ভারত। জাপানের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চুক্তি চায় দিল্লি। কিন্তু আর কোনও পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটানো হবে না, এই মর্মে প্রতিশ্রুতি চায় টোকিও। ভারতের পরমাণু চুল্লিগুলিতে আরও বেশি আন্তর্জাতিক নজরদারিও চায় তারা। জাপানি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও চলতি সফরে চূড়ান্ত ফয়সালার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। টোকিওতে সফরের দ্বিতীয় পর্বের জন্য এখন অপেক্ষায় দু’পক্ষই। শনিবার পাঁচ দিনের সফরে জাপানে যান নরেন্দ্র মোদি। গত মে মাসে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এটিই তার প্রথম বড় ধরনের বিদেশ সফর। খবর এনডিটিভি অনলাইনের। জাপান সফরে গিয়ে মোদি (৬৩) সর্বপ্রথম দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে ঐতিহাসিক শহর কিয়োটতে ব্যক্তিগত সাক্ষাত করেন। এরপর টোকিওতে এশিয়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন নরেন্দ্র মোদি। এদিকে কয়েকটি কারণে তার এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চীনকে বিবেচনায় রেখে জাপানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্য নিয়ে মোদি এই সফর করছেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, মোদির জাপান সফর তাঁর পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি রচনা করতে পারে। তাঁর এই সফরকালে জাপানের সঙ্গে একটি বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা চুক্তিসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। এছাড়া এ সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে সেটি প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদন ও ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে একটি ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। উভয় দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা যোগাযোগও বাড়বে। মোদির লক্ষ্য ভারতের অবকাঠামো খাতে জাপান যেন আরও বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার মোদি তাঁর টুইটারে লেখেন, ‘জাপানের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূণ সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। আমরা দুটো গণতান্ত্রিক দেশ বিশ্বে শান্তি ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ টোকিওর ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞ তাকেহিকো ইয়ামামোতো বলছেন, ‘দুই দেশের সরকারের প্রধানের মধ্যে নীতিগত ইস্যুতে মিল থাকায় আশা করা যায় জাপান ও ভারত উভয়দেশই উপকৃত হবে। দুই নেতাই চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন’। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থান রোধে সিপিএমের সঙ্গে জোট বাধার ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। সিবিআই জাল গুটিয়ে একে একে শাসক দলের প্রভাব শালীদের পাকড়াও করছে,তারই সমানতালে বিজেপি বিরোধী জেহাদে সুর চড়াছ্ছেন মমতা ব্যানার্জী।রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বলেন, বিজেপির প্রভাব রুখতে তার দল বামদের জন্য দরজা খোলা রেখেছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির মোকাবেলায় এবং পরিস্থিতির প্রয়োজনে সিপিএমের তরফে যে কোন প্রস্তাবকে তিনি স্বাগত জানাবেন। প্রসঙ্গতঃসারদা মামলায় এবার সিবিআইয়ের নজরে মন্ত্রী মদন মিত্র। আগামী সপ্তাহের যে কোনও দিন পরিবহণ মন্ত্রীকে সমন ধরাতে চলেছে সিবিআই। মন্ত্রীর আপ্ত  সহায়ক বাপি করিম ও সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনকে জেরা করে  কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে প্রায়ই যেতেন মদন মিত্র।  এরপরই মদন মিত্রকে সমন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই। একইসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীকে। মিঠুন-মদনের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে ডাকা হতে পারে আরও তিন প্রভাবশালী ব্যক্তিকেও। দেশটির জি গ্রুপের বাংলা সংবাদ চ্যানেল ২৪ ঘণ্টাকে শুক্রবার দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মমতা এ কথা বলেছেন। খবর ডিএনএ অনলাইনের। সম্পতি বিহারের ১০টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে দুই দশকেরও বেশি সময়ের বৈরিতা ভুলে একজোট হয়েছিলেন নিতীশ কুমার ও লালু প্রসাদ যাদব। সেই মহাজোটে ছিল কংগ্রেসও। শেষ পর্যন্ত ছয়টি আসনে জিতে মহাজোট বিজেপির অগ্রগতি আপাতত রুখে দিতে পেরেছে। এই ‘বিহার মডেল’ নিয়েই ওই সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়েছিল মমতাকে। নিতীশ-লালু এবং কংগ্রেসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেছেন, আমাদের এখানেও তেমন পরিস্থিতি এলে ভাবব। আমরা তো আগে এসইউসির সঙ্গে চলেছি। আরও দুই-একটা ছোট দলও ছিল আমাদের সঙ্গে। তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, কেউ এগিয়ে এলে কথা বলা যেতেই পারে। গণতন্ত্রে কথা বলা সব সময়ই ভাল। কথা বন্ধ করতে নেই। কেউ অচ্ছুত নয়। কোন্ অপশন ভাল, কোন্ অপশন শান্তির এবং উন্নয়নের সেটা দেখতে হবে। তার মানে কি পরিস্থিতির প্রয়োজনে তিনি সিপিএমের সঙ্গেও যেতে পারেন? মমতা এর উত্তরে বলেন, সে কথা তো বলিনি। তবে যদি কেউ প্রস্তাব নিয়ে আসে, তা হলে আলোচনা হতেই পারে। আমাদের দলে আলোচনা করতে হবে। আমরা সব সময় আলোচনার পক্ষে। তিনি বলেছেন, আমি রাজ্যে বিজেপির উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পাঁচটি আসনে জিতে দেখাক আগে। অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্য বিজেপির সঙ্গে জোট করেছিলাম। তবে বিজেপি এখন আর বাজপেয়ীকে সম্মান করে না আর নতুন নেতৃত্ব জানেও না কিভাবে জনগণের মন জয় করতে হয়। তবে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য তথা বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, তারা এত সহজে তৃণমূল নেত্রীকে বন্ধু ভাবতে যাচ্ছেন না। রাজ্যে বিজেপিকে ডেকে এনেছিলেন তিনিই। আর এখন রাজ্যজুড়ে যে সন্ত্রাস চলছে, বিরোধীদের উপরে যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে, এভাবে গণতন্ত্র বিপন্ন হলে কখনওই ধর্মনিরপেক্ষতাকে রক্ষা করা যায় না। তিনি এবং তার দল যা করছে, তাতে বিজেপিরই সুবিধা হচ্ছে। আজকালের প্রতিবেদন: বি জে পি-কে ঠেকাতে দরকারে বামেদের সঙ্গেও জোট৷‌ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার কোনও প্রশ্নই ওঠে না বলে মনে করেন বামপম্হীরা৷‌ তাঁদের স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া, সারদার ধকল আর সি বি আইয়ের চাপে উনি কমজোরি হয়ে পড়েছেন৷‌ এত দুর্বল হয়ে পড়েছেন যে বাঁচার জন্য কাউকেই আর অচ্ছুত মনে করছেন না৷‌ উল্লেখ্য, শুক্রবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, বিহারে বি জে পি-কে আটকাতে যেভাবে লালুপ্রসাদ ও নীতীশ কুমার হাত মিলিয়েছেন তা বেশ ভাল কাজ হয়েছে৷‌ এ জন্যই বি জে পি-কে ওভাবে পরাস্ত করা গেছে৷‌ এ রাজ্যেও বি জে পি-কে আটকাতে প্রয়োজনে তিনি বামপম্হীদের সঙ্গেও জোট করবেন৷‌ শনিবার উত্তরবঙ্গে এক অনুষ্ঠানে উপস্হিত ছিলেন সি পি এম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত৷‌ তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, তিনি বাম-তৃণমূল জোট-জল্পনা নিয়ে কথা খরচেই নারাজ৷‌ বলেন, ‘সারদা-কাণ্ডের ধকল আর সি বি আই তদম্তের চাপে উনি (মমতা ব্যানার্জি) কমজোরি হয়ে পড়ছেন৷‌ সি বি আই তদম্তে একের পর এক যেভাবে সত্যি বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে, তাতে তিনি ভয় পেয়ে গেছেন৷‌ এত দুর্বল হয়ে পড়েছেন যে বাঁচার জন্য কাউকে আর অচ্ছুত মনে করছেন না৷‌ এক সময় বামপম্হীদের বিরোধিতা করার জন্য তাঁর কাছে এই বি জে পি অচ্ছুত ছিল না৷‌ সি পি এম-বিরোধিতার জন্য তাঁর কাছে অচ্ছুত ছিল না মাওবাদীরাও৷‌ এখন নিজেকে বাঁচাতে বামেদেরও অচ্ছুত মনে করছেন না৷‌ তাই এ-সব কথাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না৷‌ তবে জোট নিয়ে কী বলতে চেয়েছেন, সে ব্যাপারে অবশ্যই দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু প্রয়োজনে উত্তর দেবেন৷‌’ এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও সমালোচনা করেন তিনি৷‌ বলেন, মুখে বিকাশ, কাজে বিনাশ৷‌ বৃন্দা বলেন, সরকারের ১০০ দিন পার৷‌ এবার দার্জিলিঙের সাংসদ পরিষ্কার করে জানান গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে আছেন কি না৷‌ তিনি জানান, বি জে পি কী চায় সেটা ৩ মাসের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের ১২ বিধানসভার উপনির্বাচন ঘিরে যে-যে ঘটনা ঘটে গেছে, তা থেকে বোঝা গেছে৷‌ বৃন্দা কারাত জানান, গত ৩ মাসে উত্তরপ্রদেশে ৬০০ ঘটনা ঘটেছে৷‌ সবই সাম্প্রদায়িক ঘটনা৷‌ এর মধ্যে ৪০০ ঘটনা ঘটেছে ওই ১২টি বিধানসভা এলাকায়৷‌ এতেই পরিষ্কার, বি জে পি সাম্প্রদায়িকতাকে উৎসাহ দিচ্ছে৷‌ এদিন এই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বামপম্হীদের লাগাতার বিরোধিতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সি পি আই সর্বভারতীয় নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত৷‌ জোট সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, উনি নিজের দলের অবস্হান ও রাজনীতির স্বার্থে এ-সব বলছেন৷‌ সাম্প্রদায়িক বি জে পি-র বিরুদ্ধে আমরা আমাদের মতো করেই লড়ব৷‌ তৃণমূলকে দরকার হবে না৷‌ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ডাঃ সূর্যকাম্ত মিশ্র মাঝে মধ্যেই মনে করিয়ে দেন আর এস এস-এর জন্মের সময় থেকেই এই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দেশে যদি কেউ লাগাতার বিরোধিতা করে থাকে তো এই বামপম্হীরা করেছে৷‌ আর এই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক বি জে পি-কে তিনিই প্রথম হাত ধরে নিয়ে এসেছিলেন৷‌ ১৯৯৮ সালে এই বি জে পি-র হাত ধরেছিলেন৷‌ বাংলার মানুষ নিশ্চয়ই সে কথা ভুলে যাননি৷‌ এদিন এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লক সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, উনি এমন একটা ভিত্তিহীন কথা বলেছেন যা আলোচনার অযোগ্য৷‌ বামপম্হীদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সমঝোতা করা তো আদৌ সম্ভব নয়৷‌ এ নিয়ে কী মম্তব্য করব? আর এস পি রাজ্য সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামীরও একই মত৷‌ তিনি বামপম্হীদের ওপর তৃণমূল কংগ্রেসের লাগাতার সন্ত্রাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন৷‌ বলেন, এ নিয়ে মম্তব্য করার আগে বুঝে নিতে হবে কে এই প্রস্তাব করছেন৷‌ মমতা ব্যানার্জি ও তাঁর দলের সন্ত্রাস ও খুনের রাজনীতি এই ৩ বছরে অজস্র বামপম্হীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে৷‌ হাজার হাজার বামপম্হী কর্মী-সমর্থক সপরিবারে ঘরছাড়া৷‌ মমতা ব্যানার্জির সুবিধেবাদী রাজনীতিই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তির জন্ম দিয়েছে ও বাড়াচ্ছে৷‌ ফলে, তাঁর সঙ্গে জোট করে বি জে পি-র বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে না৷‌ আমরা বামপম্হীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই জারি রেখেছি ও রাখব৷‌ সিবিআইয়ের রাডারে এবার মন্ত্রী মদন মিত্র। সারদা মামলায় মদন মিত্রকে  জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই।  সম্প্রতি  মন্ত্রীর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিমকে দু দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। জেরায় বাপি জানান, প্রায়ই সারদা মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে যেতেন মদন মিত্র । এরআগে একই দাবি করেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনও। এবার তাঁর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক জেরায় মদন মিত্রর নাম করায় মন্ত্রীকে সমন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই। মন্ত্রীর পছন্দমাফিক জায়গাতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। তবে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগেছেন মদন মিত্রও। মদন মিত্রের পাশাপাশি,সারদা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীকেও। সাংসদ হওয়ার আগেই সারদার ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। এজন্য প্রতিমাসে কুড়ি লক্ষ টাকা করে পেতেন তিনি। মিঠুন অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ায় কলকাতায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে। এজন্য তৃণমূল সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে  সিবিআইয়ের একটি টিম মুম্বই উড়ে যাচ্ছে। ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর ছাড়া সারদায় মিঠুন চক্রবর্তীর আরকোনও ভূমিকা ছিল কিনা সেটাও খতিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সারদা মামলায় এরআগেও মিঠুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। অন্যদিকে,সারদাকাণ্ডে তাঁর  ভূমিকা খতিয়ে দেখতে  শনিবার দিনভর অসমের সঙ্গীতশিল্পী সদানন্দ গগৈ ও ব্যবসায়ী রাজেশ বাজাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। ২০১০ এ সারদার ৩টি অ্যাড ফিল্ম তৈরি করেছিলেন সদানন্দ গগৈ। ৩টি ফিল্মের জন্য ৪ কোটি টাকা পেয়েছিলেন তিনি।অসমের এক মন্ত্রীর সঙ্গে বিস্কুট কোম্পানিও খুলেছিলেন সুদীপ্ত।সেটির অ্যাড ফিল্মও তৈরি করেছিলেন সদানন্দ। শুধুমাত্র অ্যাড ফিল্ম তৈরি নাকি সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তাঁর আর কোনও  সম্পর্ক ছিল তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।  এদিন চতুর্থবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রাজেশ বাজাজকেও ।  এনই অসম টিভি চ্যানেল কেনার সময় সুদীপ্ত সেন ও মাতঙ্গ সিংয়ের মধ্যে মধ্যস্থতা করেছিলেন রাজেশ বাজাজ। ওয়েব ডেস্ক: সারদা কাণ্ডের তদন্তে আজ ফের জেরা করা হচ্ছে অসমের ব্যবসায়ী রাজেশ বাজাজকে। এর আগে চারদফা তাঁকে জেরা করেছে সিবিআই। অসমে এনই (NE) চ্যানেল কেনাবেচা নিয়ে সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মাতঙ্গ সিংয়ের চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন রাজেশ বাজাজ। আঠাশ কোটি টাকায় NE অসম বিক্রির চুক্তি হয়েছিল। যদিও, টাকা দেওয়ার পরেও চ্যানেলের মালিকানা তিনি পাননি বলে তদন্তকারীদের কাছে অভিযোগ করেছেন সুদীপ্ত সেন। অন্যদিকে মাতঙ্গ সিংয়ের দাবি, সুদীপ্ত সেনের টাকা ফেরতের জন্য তিনি চেক দিয়েছিলেন রাজেশ বাজাজকে। সিবিআই সূত্রে খবর, অসমের সংবাদমাধ্যমে সারদার লগ্নি নিয়ে সুদীপ্ত সেন, মাতঙ্গ সিং এবং রাজেশ বাজাজের বয়ানে প্রচুর অসঙ্গতি রয়েছে। তা দূর করতেই বারবার জেরা করা হচ্ছে রাজেশ বাজাজকে। সারদা মামলায় এবার সিবিআইয়ের নজরে মন্ত্রী মদন মিত্র। আগামী সপ্তাহের যে কোনও দিন পরিবহণ মন্ত্রীকে সমন ধরাতে চলেছে সিবিআই। মন্ত্রীর আপ্ত  সহায়ক বাপি করিম ও সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনকে জেরা করে  কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে প্রায়ই যেতেন মদন মিত্র।  এরপরই মদন মিত্রকে সমন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই। একইসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীকে। মিঠুন-মদনের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে ডাকা হতে পারে আরও তিন প্রভাবশালী ব্যক্তিকেও। সিবিআইয়ের রাডারে এবার মন্ত্রী মদন মিত্র। সারদা মামলায় মদন মিত্রকে  জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই।  সম্প্রতি  মন্ত্রীর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিমকে দু দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। জেরায় বাপি জানান, প্রায়ই সারদা মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে যেতেন মদন মিত্র । এরআগে একই দাবি করেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনও। এবার তাঁর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক জেরায় মদন মিত্রর নাম করায় মন্ত্রীকে সমন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই। মন্ত্রীর পছন্দমাফিক জায়গাতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। তবে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগেছেন মদন মিত্রও। মদন মিত্রের পাশাপাশি,সারদা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীকেও। সাংসদ হওয়ার আগেই সারদার ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। এজন্য প্রতিমাসে কুড়ি লক্ষ টাকা করে পেতেন তিনি। মিঠুন অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ায় কলকাতায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে। এজন্য তৃণমূল সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে  সিবিআইয়ের একটি টিম মুম্বই উড়ে যাচ্ছে। ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর ছাড়া সারদায় মিঠুন চক্রবর্তীর আরকোনও ভূমিকা ছিল কিনা সেটাও খতিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সারদা মামলায় এরআগেও মিঠুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। অন্যদিকে,সারদাকাণ্ডে তাঁর  ভূমিকা খতিয়ে দেখতে  শনিবার দিনভর অসমের সঙ্গীতশিল্পী সদানন্দ গগৈ ও ব্যবসায়ী রাজেশ বাজাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। ২০১০ এ সারদার ৩টি অ্যাড ফিল্ম তৈরি করেছিলেন সদানন্দ গগৈ। ৩টি ফিল্মের জন্য ৪ কোটি টাকা পেয়েছিলেন তিনি।অসমের এক মন্ত্রীর সঙ্গে বিস্কুট কোম্পানিও খুলেছিলেন সুদীপ্ত।সেটির অ্যাড ফিল্মও তৈরি করেছিলেন সদানন্দ। শুধুমাত্র অ্যাড ফিল্ম তৈরি নাকি সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তাঁর আর কোনও  সম্পর্ক ছিল তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।  এদিন চতুর্থবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রাজেশ বাজাজকেও ।  এনই অসম টিভি চ্যানেল কেনার সময় সুদীপ্ত সেন ও মাতঙ্গ সিংয়ের মধ্যে মধ্যস্থতা করেছিলেন রাজেশ বাজাজ। আজকালের প্রতিবেদন: সি বি আই ভুল করছে৷‌ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করছে৷‌ শনিবার এই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র৷‌ তিনি বলেন, সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সি বি আই-কে ব্যবহার করা হচ্ছে৷‌ সম্পূর্ণ ভুল পথে চলছে তারা৷‌ আসলদের খোঁজ না করে ভুল মানুষদের হয়রানি করা হচ্ছে৷‌ তিনি অভিযোগ করে বলেন, যাঁরা এঁদের চালাচ্ছেন তাঁরা সি বি আই-কে ভুল পথে চালিত করছেন৷‌ মদনবাবু বলেন, এটাই রাজনীতি৷‌ রাজনৈতিক কারণেই এটা করা হচ্ছে৷‌ অবশ্য যুদ্ধ, রাজনীতি আর প্রেমে সবই করা যায়৷‌ কোনওটাই বেঠিক নয়৷‌ কিন্তু সবার ওপর মানুষ৷‌ তাঁরাই শেষ কথা বলবেন৷‌ সি বি আই-কে ক্রিটিকাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি৷‌ বলেছেন, সি বি আই ডাকলে যাবেন৷‌ প্রয়োজনে সাহায্য করবেন৷‌ কিন্তু দলের সঙ্গে কথা বলে তার পর৷‌ তবে সত্যি কোনও দিন চাপা থাকে না৷‌ চক্রাম্ত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যেকে সত্যিতে পরিণত করা যাবে না৷‌ সারদা-কাণ্ডে নানা তথ্যের সন্ধান পেতে গত কয়েকদিন ধরে তাঁর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিমকে দফায় দফায় ডেকে কথা বলছে সি বি আই৷‌ এ নিয়ে মদনবাবু এদিন বলেন, ৩ বছর ওর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই৷‌ চাপে পড়ে ভুল বলে ফেলেছে হয়ত৷‌ ওকে কেন বারবার কথা বলতে ডাকা হচ্ছে সেটা সি বি আই বলতে পারবে৷‌ বাপি বলেছে আমার কথায় মন্দির গড়তে ১ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছিল৷‌ এক কোটি কেন একটা আধলাও দেননি সুদীপ্ত সেন৷‌ মাঝে ওঁদের সংস্হার অনেক লোক মাইনে পাচ্ছিল না৷‌ গিয়েছিলাম৷‌ বলেছিলাম এতগুলো লোকের টাকা দিচ্ছেন না কেন৷‌ ভাল করে কাজ করুন৷‌ আইন মেনে কাজ করলে বিধায়ক হিসেবে সাহায্য করব৷‌ চ্যালেঞ্জ করছি, কেউ একটা কাগজ দেখাক যে আমি সারদা কর্মী ইউনিয়নের সভাপতি ছিলাম৷‌ বিরোধীদের উদ্দেশে তাঁর মম্তব্য, কামারহাটি কেন্দ্র ছেড়ে দিচ্ছি৷‌ সবাই এক হয়ে আসুন৷‌ দেখি কত বুকের পাটা৷‌ জিতে দেখান৷‌ মেসি ম্যাচ নিয়ে ৫ কোটি নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা খণ্ডন করে মদনবাবু বলেছেন ক্রীড়া সংগঠনগুলোকে দেওয়ার জন্য টিকিট পর্যম্ত আমাদের কিনে নিতে হয়েছিল৷‌ সি বি আই-কে ধন্যবাদ তাদের জন্য অনেকে আমার নাম জানল৷‌ সি বি আই-কে কটাক্ষ করে মদনবাবু বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ২৬০০ কোটি কোথায় গেল জানতে চেয়েছে৷‌ তা না করে ওরা এ-সব করে বেড়াচ্ছে৷‌ পিয়ালী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বলা হচ্ছে তিনি ৫০ হাজার টাকা মাইনে পেতেন৷‌ কিন্তু তাঁর বাবা-মা আমাকে এসে বলেছেন ১৪ হাজারের কিছু বেশি টাকা পেত৷‌ তাঁদের মেয়েকে নিয়ে নানা কথা বলা হচ্ছে, এটা কবে বন্ধ হবে, তা তাঁরা জানতে চেয়েছেন৷‌ উল্লেখ্য, বাপি প্রায় বছর তিনেক মদনবাবুর আপ্ত সহায়ক ছিলেন৷‌ আজকালের প্রতিবেদন: কোচবিহার, ৩০ আগস্ট– কোচবিহারের চিটফান্ড রয়্যাল ইন্টারন্যাশনালের ফ্ল্যাট বিক্রি ও চিটফান্ড সংস্হার সি এম ডি এবং ডিরেক্টরকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি৷‌ প্রশাসনের দুই আধিকারিক শনিবার দিনহাটায় চিটফান্ড আমানতকারী সুরক্ষা সমিতির সভায় এই অভিযোগ করেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক বিধায়ক উদয়ন গুহ৷‌ উদয়ন গুহের অভিযোগ, রাহুল গ্রুপ অফ কোম্পানিজ ও রয়্যাল ইন্টারন্যাশনালের পাল্লায় পড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বস্বাম্ত হয়েছেন৷‌ এই চিটফান্ডের সঙ্গে শাসক দলের নেতা ও প্রশাসনিক আধিকারিকেরা যুক্ত৷‌ তিনি এই দুই কোম্পানিকে সি বি আইয়ের তদম্তের আওতায় আনার দাবি জানান৷‌ উদয়ন গুহ এদিন অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করেননি৷‌ সি বি আই তদম্ত হলে তিনি সি বি আই-কে সব জানাবেন বলে জানান৷‌ উদয়নের অভিযোগ, কোচবিহার শহরের বিশ্ব সিংহ রোডে টাইটানিক বিল্ডিং ছিল৷‌ বাড়িটি রয়্যালের বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন বিক্রি করা হয়েছে৷‌ এই বাড়ি বিক্রির সঙ্গে শাসক দলের তিন নেতা ও দুই প্রশাসনিক আধিকারিক প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত বলে তিনি অভিযোগ করেন৷‌ উদয়ন গুহের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, উদয়ন গুহদের আমলেই চিটফান্ডগুলির বাড়বাড়ম্ত৷‌ বাম নেতারাই বলতে পারবেন এই চিটফান্ডগুলির সঙ্গে কারা কারা জড়িত৷‌ এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই৷‌ আর তা ছাড়া এই চিটফান্ড নিয়ে তদম্ত শুরু হয়েছে৷‌ তদম্তেই সব প্রকাশ পাবে৷‌ কোচবিহারের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল নিয়ে পুলিসি তদম্ত অনেকটাই এগিয়েছে৷‌ এ বিষয়টিও এস পি-কে খতিয়ে দেখতে বলা হবে৷‌ উদয়ন গুহ জানান, রয়্যাল ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে সি বি আই তদম্তের দাবিতে ফরওয়ার্ড ব্লক আন্দোলন শুরু করবে৷‌ সম্প্রতি রয়্যাল ইন্টারন্যাশনালের সি এম ডি অর্চনা সরকার, ডিরেক্টর নীলিমা সরকার ওড়িশায় পালিয়ে যাওয়ার সময় পূর্ব মেদিনীপুরে পুলিসের জালে ধরা পড়ে৷‌ এখন কোচবিহারে পুলিসি হেফাজতে বন্দী৷‌ রাতের অন্ধকারে সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে যেতেন, দাবি দেবযানীর, মদনকে ডেকে জেরা করবে সিবিআই? প্রকাশ সিংহ, এবিপি আনন্দ Saturday, 30 August 2014 03:19 PM কলকাতা: কানের পর কি এবার মাথা? মদন মিত্রর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিমকে ইতিমধ্যেই দফায় দফায় জেরা করেছে সিবিআই। এবার মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা। কয়েকদিনের মধ্যেই পরিবহণমন্ত্রীকে ডাকা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রের খবর। এদিনই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার হাতে এমন এক নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে যা পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে সারদাগোষ্ঠীর গভীর বোঝাপড়ার দিকেই ইঙ্গিত করছে।সিবিআই জেনেছে, রাতের অন্ধকারে সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে প্রায়ই যেতেন মদন মিত্র।কেন তিনি যেতেন, তাঁকে সে ব্যাপারে ডেকে জেরা করতে চাইছে তারা। মদন মিত্রর প্রাক্তন আপ্ত সহায়কের বাড়িতে হানা এবং তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে দফায় দফায় জেরা করেছে সিবিআই। যা দেখে বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, কান টেনে মাথা ধরতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এই প্রেক্ষাপটে এবার মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, কয়েক দিনের মধ্যেই পরিবহণমন্ত্রীকে ডাকা হতে পারে। গত কয়েকদিনে নানা জায়গায় হানা দিয়ে এবং জেরা করে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মদন মিত্রের যোগাযোগের তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। তার ভিত্তিতেই এ বার পরিবহণমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে সিবিআই। সিবিআইয়ের অভিযোগ, মদন মিত্রর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিম জেরার সময় বেশ কিছু প্রশ্নের অসঙ্গতিপূর্ণ উত্তর দিয়েছেন। অনেক তথ্য লুকোনোরও চেষ্টা করেছেন। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷ বাপি করিমের পাশাপাশি মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই ধোঁয়াশা কাটাতে চাইছে সিবিআই৷ সূত্রের খবর, সিবিআই তদন্তে জানতে পেরেছে, কোনও প্রভাবশালীর টাকা বাপি করিমের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল। বেনামে জমিও কেনা হয়। এই প্রভাবশালী কে, তারও খোঁজ চালাচ্ছে সিবিআই। এ নিয়েও মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এতদিন মদন মিত্র হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শুক্রবার ছাড়া পান। তারপর তিনি জানিয়েছিলেন, সিবিআই তলব করলে দলের সঙ্গে কথা বলেই যা করার করবেন। সারদার একাধিক অনুষ্ঠানে মদন মিত্রকে একসময় দেখা গিয়েছিল। তাঁর গলায় শোনা গিয়েছিল সুদীপ্ত সেনের প্রশাংসাও। সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, সারদা কেলেঙ্কারিতে বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যে সব নেতার নাম সারদাকাণ্ডে উঠে এসেছে, তদন্তে নেমে সিবিআই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কি না, এত দিন সে দিকেই চোখ ছিল বিভিন্ন মহলের। সেই সূত্রেই এবার পরিবহণমন্ত্রীকে ডাকতে চলেছে সিবিআই। আর সিবিআই মদন মিত্রকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি কয়েক গুণ বাড়বে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। বেলাগাম খরচে বেসামাল কোষাগার পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয় বাড়ছে, ঋণের বোঝাও জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় চার্বাক দর্শনের পরামর্শ ছিল, ধার করে ঘি খাও। মানুষ মরে গেলে তার আর দেনা শোধের দায় নেই। একটা রাজ্যের ক্ষেত্রে সেই যুক্তি খাটে না। সরকার বদলালেও ঋণের বোঝা বয়ে যেতে হয় রাজ্যবাসীকে। সম্প্রতি কলকাতায় এসে অর্থনীতির প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘদিন-লালিত রোগটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বলেছেন, ধার করে সরকার চালানোর যে রোগ বামফ্রন্টের ছিল, তৃণমূলও তার থেকে মুক্ত নয়। এবং তাঁর মন্তব্যে যুগপৎ চটেছেন অর্থ দফতরের সাবেক কর্ণধার অসীম দাশগুপ্ত এবং বর্তমান অমিত মিত্র। কিন্তু দেদার বেহিসেবি খরচ, আর তা সামলাতে গিয়ে প্রতি মাসে ধার করার সংস্কৃতিটি যে কেবল অরুণ জেটলিই নজর করেছেন এমন নয়। সরকারি হিসাব পরীক্ষক প্রিন্সিপ্যাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের (পিএজি) দফতরও চলতি আর্থিক বছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, বাজেট বরাদ্দের মাত্র ২৭ শতাংশ পরিকল্পনা খাতে রেখেছে রাজ্য। অর্থাৎ ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে উন্নয়ন খাতে মাত্র ৪২ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা আছে রাজ্য সরকারের। আর ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা তারা খরচ করতে চায় মূলত বেতন-পেনশন দিতে আর ঋণ শোধ করতে। মেলা-খেলা-উৎসব, ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ভাতা, সৌন্দর্যায়ন, নীল-সাদা রঙ করানো, নানা কিসিমের পুরস্কার, শ’য়ে শ’য়ে ক্লাবকে টাকা বিলি ইত্যাদি খাতেও খরচ হবে বিস্তর। যা থেকে রাজ্যের আখেরে লাভ কিছু হবে না। অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাত এমনকী বিহার, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্য যখন পরিকল্পনা বহির্ভূত খরচে ক্রমশ লাগাম টানছে, তখন পশ্চিমবঙ্গ তার বর্ধিত আয়ের আড়াই গুণ খরচ বাড়াতে চলেছে ওই খাতে! নবান্নকে পাঠানো রিপোর্টে পিএজি বলেছে, ২০১৪-’১৫ সালের শেষে রাজ্যের নিজস্ব কর বাবদ আয় বাড়তে পারে ৬৩১৩ কোটি টাকা। অথচ এই সময়কালে অর্থ দফতর পরিকল্পনা-বর্হিভূত খাতে ১৫ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা বাড়তি খরচ করতে চলেছে। পিএজি-র মতে, পরিকল্পনা বর্হিভূত খাতে এই খরচ বাড়ানোটা আর্থিক বিশৃঙ্খলা ছাড়া আর কিছুই নয়। পিএজি নবান্নকে জানিয়ে দিয়েছে, এ ভাবে চললে রাজস্ব ঘাটতি, আর্থিক ঘাটতি এবং ঋণের বহর আরও বাড়বে। বাজেট নথিই বলছে, চলতি অর্থবর্ষের গোড়ায় রাজ্যের ঘাড়ে থাকা প্রায় ২ লক্ষ ৫১ হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা বছর শেষে বেড়ে হবে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি। এখন প্রশ্ন হল, পরিকল্পনা বর্হিভূত খাতের সব খরচই কি বাজে? অর্থ দফতরের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, “পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাতে বেতন-পেনশনের খরচ সবচেয়ে বেশি। এ বছর তার পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৪৭ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এর পর ঋণ শোধ করতে যাবে আরও ৩০ হাজার কোটি। ৫৮টি সরকারি অধিগৃহীত সংস্থা চালাতে বছরে ভর্তুকিও দিতে হচ্ছে ২২৪০ কোটি টাকা। এই সব খরচ এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।” তাঁর প্রশ্ন, “সরকার কি বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেবে? নাকি ঋণ শোধ করবে না? পরিকল্পনা-বহির্ভূত খরচে লাগাম টানতেই তো সুদ-আসল শোধের উপর তিন বছরের স্থগিতাদেশ চাওয়া হচ্ছে।” যার উত্তরে পিএজি-র এক কর্তা জানাচ্ছেন, বৈধ উপায়ে নিযুক্ত কর্মচারীদের বেতন-পেনশন দিতেই হবে। কিন্তু ভিলেজ পুলিশ, সিভিক পুলিশ, গ্রিন পুলিশ, চুক্তিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ, ইমাম-মোয়াজ্জিন ভাতা, যুবশ্রী-বেকার ভাতার জন্য বছরে যে কয়েক হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে, সেই খরচ কি সরকার এড়িয়ে চলতে পারত না? তাঁর বক্তব্য, সরকার পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে এড়িয়ে গিয়ে যথেচ্ছ নিয়োগ করছে। এতেই প্রমাণ হয়, বেতন খাতের বোঝা কমাতে তারা মোটেই আগ্রহী নয়। অর্থ দফতর সূত্রের খবর, ১ লক্ষ ৩০ হাজার সিভিক পুলিশের বেতন বাবদ বছরে ২২১ কোটি, প্রায় ৫০ হাজার ইমাম-মোয়াজ্জিনের ভাতা বাবদ ২০০ কোটি,  ক্লাবের জন্য ৮০ কোটি, জঙ্গলমহল-সুন্দরবনে ফুটবল প্রতিযোগিতার জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এ ছাড়া, মাটি উৎসব,   বঙ্গ সম্মান, ১ লক্ষ বেকারের জন্য যুবশ্রী ভাতা ইত্যাদির পিছনেও খরচ আরও ২০০ কোটির বেশি। বেতন-ভাতা খাতে গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ বেড়েছে ৪৫০১ কোটি টাকা। নিয়োগে রাশ টানলে এই বোঝা চাপত না বলেই অর্থ দফতরের একাংশের দাবি, বিশেষ করে যেখানে ছোট মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রীর ভাতা দিতে হাজার কোটি টাকার মতো খরচ হয়ে যায়। খরচ বাড়ছে অন্যত্রও। গত তিন বছরে মুখ্যমন্ত্রী সপার্ষদ জেলা সফরে গিয়েছেন ৭০ বার। নবান্নের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রতিটি সফরের জন্য মোতায়েন হওয়া এক হাজার পুলিশের টিএ থেকে কয়েকশো গাড়ির তেল, অনুষ্ঠানস্থল তৈরি থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা করা, এলাহি খাওয়াদাওয়া সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে। যদিও বিভিন্ন তহবিল থেকে এই খরচ মেটানোর ফলে জেলা প্রশাসন আলাদা করে এর হিসাব কষে না। এ ছাড়া মেলা-খেলার খরচ তো রয়েছে। গত আর্থিক বছরে মেলা-খেলা-উৎসবের জন্যই ট্রেজারি থেকে ১৮১ কোটি টাকার অগ্রিম (এসি ডিসি বিল) তুলেছেন বিভিন্ন স্তরের অফিসাররা। এর মধ্যে মোটা টাকা খরচ হয়েছে পুলিশের নানা অনুষ্ঠানে। বছর ঘুরলেও যার হিসাব জমা পড়েনি। পিএজি-র কর্তারা জানাচ্ছেন, এ ভাবেই বেহিসেবের কড়ি কোষাগার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর বাড়ছে ঋণের বোঝা। ঋণ শোধের ব্যাপারেও অর্থ দফতরের যুক্তি মানতে নারাজ হিসাব পরীক্ষক সংস্থার বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, খরচ বেঁধে রাখতে পারলে রাজ্যের নিজস্ব আয় এবং কেন্দ্রীয় অনুদান ও করের টাকায় সংসার চালানো অনেকটাই সম্ভব। কিন্তু বেহিসেবি খরচ কমানো যায়নি বলেই প্রতি মাসে ঋণ নিতে হচ্ছে। যার ফলে বছর শেষে সুদ-আসল শোধের পরিমাণও উত্তরোত্তর বাড়ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, ঋণ কম নেওয়ার অবস্থায় পৌঁছতে পরিকল্পনা-বর্হিভূত খাতেই খরচ কমাতে হবে। বাজেটে তার দিশা নেই। অর্থ দফতরের কর্তাদেরও একাংশ জানান, আয় বাড়ানোর পাশাপাশি অনাবশ্যক খরচে লাগাম টানলেই উন্নতি সম্ভব। কিন্তু গত তিন বছরে পরিকল্পনা-বর্হিভূত খাতে লাগাম ছাড়া খরচ হচ্ছে। তার জেরেই আর্থিক কাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে। জেটলি কলকাতায় এসে ঠিক এই দাওয়াই-ই দিয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এক দিকে যেমন রাজ্যের নিজস্ব আয় বাড়াতে হবে, তেমনই কমাতে হবে অনাবশ্যক ব্যয়। সস্তা জনপ্রিয়তার রাজনীতি ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবেই ফিরতে পারে রাজ্যের আর্থিক হাল।” কিন্তু রাজ্যের আয় বাড়বে কী ভাবে? মুখ্যমন্ত্রী জমি অধিগ্রহণ না-করার নীতিতে অনড় থাকায়, শহরে জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন তুলে না দেওয়ায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ ওয়াইয়ের লাল ফিতে বহাল রাখায় রাজ্যে লগ্নিতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না বড় শিল্প। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সিন্ডিকেট রাজ, তোলাবাজি। যার জেরে হয় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, না হয় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে একের পর এক ছোট ও মাঝারি কারখানা। ফলে শিল্পক্ষেত্র থেকে কর বাবদ আয়ের পরিমাণও তেমন ভাবে বাড়ার সুযোগ নেই। গত অর্থবর্ষের বাজেটে কর বাবদ ৮৮ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা আদায় করার কথা বলা থাকলেও বাস্তবে আদায় হয়েছে ৭২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। পাশাপাশি শিল্প না-থাকায় যুবকদের হাতে কাজ নেই। ভোট ব্যাঙ্ক বজায় রাখতে শাসকদল চুক্তিতে বা ঘুরপথে নিয়োগ চালিয়ে যাচ্ছে। যা বাড়াচ্ছে পরিকল্পনা-বহির্ভূত খরচ। আয় তেমন নেই, অথচ খরচ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সাহায্যের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তাই অর্থসঙ্কট নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা, এমনই মত অর্থ দফতরের অন্দরমহলেও। ‘আমিই উপযুক্ত মোদি’ জেনিফার ডি প্যারিস,  আইএএনএস-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম Published: 2014-08-30 15:16:09.0 BdST Updated: 2014-08-30 15:16:09.0 BdST ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জীবনীনির্ভর সিনেমা নির্মিত হতে যাচ্ছে। আর মোদির ভূমিকায় পর্দায় দেখা যাবে বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়ালকে। মোদির ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তার চেয়ে উপযুক্ত আর কেউ নেই বলেই মনে করেন বিজেপির সাংসদ পরেশ রাওয়াল। জানালেন, খুব শিগগিরই শুরু হবে এই সিনেমার শুটিং। “সিনেমাটির ব্যাপারে আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী, মোদির চরিত্রে আমার চেয়ে ভালো কেউ অভিনয় করতে পারবেন না। তিনি একজন ভিন্ন ধরনের মানুষ, আমি খুবই আনন্দিত এই সুযোগ পেয়ে।” চলতি বছর ভারতের জাতীয় নির্বাচনে বিজেপির টিকেটেই লড়েছেন পরেশ। গুজরাটের পূর্ব আহমেদাবাদ থেকে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। নাম ঠিক না হওয়া এই বায়োপিক নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন ‘কামাসুত্রা থ্রিডি’ খ্যাত পরিচালক রুপেশ পল। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুটিং শুরু হবার কথা থাকলেও নানা কারণে এতদিন এগোয়নি সিনেমাটির কাজ। এর আগেও বাস্তবের রাজনীতিবিদের জীবনীভিত্তিক সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাওয়াল। কেতান মেহতা পরিচালিত ‘সর্দার’ সিনেমায় কংগ্রেস নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী বল্লভভাই প্যাটেলের চরিত্র রূপায়ন করেন তিনি। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে পরেশ রাওয়াল অভিনীত ‘রাজা নাটওয়ারলাল’।  সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন এমরান হাশমি এবং পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমায়মা মালিক।   পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন মোদি। ভারতের জনগণের ৪০ শতাংশেরই অথনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার সুযোগ খুব কম এবং তাদের প্রায় সবাই অতি মুনাফালোভী মহাজনদের দয়ার ওপরই নির্ভর করে। মোদির সবার জন্য ব্যাংক একাউন্ট বা ‘জন-ধন যোজনা’ পরিকল্পনার আওতায় কোনো নথি-পত্র ছাড়াই ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে এবং প্রতিটি পরিবারের দুই জন করে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে। অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়ে ‘আর্থিক অস্পৃশ্যতা’ দূর করারই চেষ্টায় নেমেছেন মোদি। শুরুতেই পাঁচ দম্পতির হাতে নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কাগজপত্র তুলে দিয়েছেন তিনি। তাদের মধ্যে আছে রাজমিস্ত্রি মজিদুরের পরিবারও।ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার কথা যারা জন্মেও ভাবেননি। কয়েকদিন আগে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ক্যাম্প দেখে অন্যদের সঙ্গে ব্যাঙ্কের খাতা খুলতে চলে গিয়েছিলেন মজিদুর। সেই ব্যাঙ্কের পাস বই, ডেবিট কার্ড, অন্যান্য কাগজপত্র যে খোদ প্রধানমন্ত্রী তাঁদের হাতে তুলে দেবেন, তা ভাবতেও পারেননি তারা। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, ৭৭ হাজারেরও বেশি জায়গায় এরই মধ্যে নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খেলার কাজ হয়েছে। এক কোটি নয়, এক দিনে দেড় কোটি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে গেছে। “এটাও একটা রেকর্ড”, বলেন মোদি। বারাণসী হবে স্মার্ট সিটি জাপানে চুক্তি সই প্রধানমন্ত্রীর কিওটো, ৩০ আগস্ট (সংবাদ সংস্হা)– জাপানের স্মার্ট সিটি কিওটোর সঙ্গে বারাণসীর সহযোগিতা চুক্তির মধ্যে দিয়ে শনিবার শুরু হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৫ দিনের জাপান সফর৷‌ ঐতিহ্য বজায় রেখে কীভাবে কোনও প্রাচীন শহরকে স্মার্ট সিটিতে রূপাম্তরিত করা যায় সেটাই এই চুক্তির মূল কথা৷‌ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্হিতিতে চুক্তি সই করেন কিওটোর মেয়র দাইসাকু কাদোকাওয়া এবং জাপানে ভারতের রাষ্ট্রদূত দীপিকা ওয়াদভা৷‌ স্মার্ট সিটি নিয়ে সেখানে আর কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে তা খতিয়ে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী৷‌ দেশে তিনি ১০০টি স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে চান৷‌ বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন শহর বলে কথিত, তাঁর নির্বাচন কেন্দ্র বারাণসীতেও এমন নাগরিক প্রযুক্তি আমদানি করতে চান তিনি৷‌ এই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে উপমহাদেশের বাইরে পা রাখলেন৷‌ সফর শুরুর আগে এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ থেকে বোঝা যাচ্ছে ভারতের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির ক্ষেত্রে জাপানকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা৷‌ আমি নিশ্চিত এই সফরের পর এশিয়ার সবচেয়ে পুরাতন দুই গণতন্ত্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন অধ্যায় যুক্ত হবে৷‌ জাপানও যে এই সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সেটা বোঝা গেছে টোকিও থেকে প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের কিওটো উড়ে এসে বিমানবন্দরে মোদিকে সংবর্ধনা জানানো থেকে৷‌ রবিবার কিওটোর বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্হান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখবেন মোদি৷‌ সোমবার টোকিওয় প্রধানমন্ত্রী অ্যাবের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসার কথা তাঁর৷‌ মোদির সফরসঙ্গী হয়েছেন ‘রিলায়েন্স’ কর্ণধার মুকেশ আম্বানি এবং ‘উইপ্রো’ কর্ণধার আজিম প্রেমজি৷‌ দু’দেশের মধ্যে বড়রকমের বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের সম্ভাবনা আছে৷‌ চীনের উন্নতিতে উদ্বিগ্ন ‘বন্ধু’ দেশ আমেরিকাও চায় আরও কাছাকাছি আসুক এশিয়ার এই দুই অত্যম্ত প্রভাবশালী দেশ৷‌ দেশে পরিকাঠামো উন্নয়নে জাপানের সহায়তা চাইবেন মোদি৷‌ রেল বাজেটে প্রস্তাবিত মোদির সাধের হাইস্পিড বুলেট ট্রেন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারে জাপান৷‌ এ ছাড়া দেশের ধুঁকে পড়া রেল পরিষেবা চাঙ্গা করতেও জাপানের সহায়তা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক সূত্র৷‌ এ ছাড়া ওই দেশের সঙ্গে পরমাণু শক্তি বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরও প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনায় আছে৷‌ ২০০৮-এ আমেরিকার সঙ্গে এমনই একটি চুক্তি সই করে ভারত৷‌ চুক্তি অনুযায়ী, দেশের সামরিক পরমাণু প্রকল্পকে অক্ষত রেখেই আমেরিকা থেকে পারমাণবিক জ্বালানি ও প্রযুক্তি আমদানি করে ভারত৷‌ জাপানের সঙ্গে তেমনই চুক্তি চাইছেন মোদি৷‌ পরিবর্তে জাপান চায় পরমাণু শক্তি পরীক্ষার সংখ্যা কমাক ভারত৷‌ পারমাণবিক শক্তি থেকে পরমাণু বোমা বানাবে না ভারত, সেই আশ্বাসও চায়৷‌ দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্রথম শীর্ষ বৈঠকেই এ নিয়ে চুক্তি সই না হলেও আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আশা করছে ভারত৷‌ এ ছাড়া প্রতিরক্ষায় ভারতের শরিক হতে চান শিনজো অ্যাবে৷‌ ভারতীয় নৌসেনাকে অত্যাধুনিক ‘উভচর’ বিমান, যেটা আকাশে এবং জলে চলে, বেচতে চায় জাপান৷‌ জাপান সফরের আগে, সে দেশের মানুষের উদ্দেশে জাপানিতে টুইট করে তাঁদের মনে চমক জাগিয়েছেন মোদি৷‌ পাঁচদিনের সফরে জাপান তাঁকে কতটা আপন করে নেয়, সেটাই দেখার৷‌ সারদা-ঘনিষ্ঠতার কথা মানলেন বিজেপি সাংসদ রাজীবাক্ষ রক্ষিত সিবিআই অফিসে সদানন্দ গগৈ। শৌভিক দে-র তোলা ছবি। পশ্চিমবঙ্গে ধরপাকড়, জেরা ও তল্লাশির পর্ব তো চলছেই। একই সঙ্গে সারদার অসম-সাম্রাজ্যে হানা দিয়ে সেই রাজ্যেও কেলেঙ্কারির কুশীলবদের চিহ্নিত করতে পুরোদমে তৎপরতা শুরু করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত দুই ডিজি-র নাম অসমের সারদা কেলেঙ্কারিতে উঠে এসেছে এবং তাঁদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশিও চালিয়েছে। আর এ বার তেজপুরের বিজেপি সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মা সারদা কেলেঙ্কারিতে তাদের নজরে আছেন বলে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে রামপ্রসাদ শর্মা ছিলেন অসমে সুদীপ্ত সেনের বিস্তারিত সাম্রাজ্যের আইনি উপদেষ্টা। সিবিআই সূত্রের খবর, শর্মাকে যে কোনও দিন জেরা করা হতে পারে। এই আবহে শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি প্রসঙ্গে বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ করেছেন। আনন্দবাজারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময়ে সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মা সারদার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করে শর্মা বলেন, “একটি সংস্থার (সারদা) আইনি উপদেষ্টা হিসেবে যা করার করেছি। ওকালতি আমার পেশা। সারদা থেকে পরিষেবা দেওয়ার বিনিময়ে টাকা পেতাম প্রতি মাসে।” তবে রামপ্রসাদ শমার্র বক্তব্য, “আমি সারদার কর্মী ছিলাম না। সিবিআই এলে যা জানানোর, জানাব।” এই ভাবে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে বিজেপি সাংসদের নাম উঠে আসায় অসমের শাসকদল কংগ্রেস স্বস্তি পেল বলে মনে করা হচ্ছে। এত দিন বিজেপি সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছিল। প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রী, কংগ্রেসের হিমন্তবিশ্ব শর্মার সঙ্গে সারদার ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ ও মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের সম্পত্তির ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত চেয়ে কংগ্রেস তথা রাজ্য সরকারকে চেপে ধরেছিল বিজেপি। ওই হিমন্তবিশ্ব শর্মারই ‘কাছের মানুষ’ বলে পরিচিত গায়ক ও চিত্র নির্মাতা সদানন্দ গগৈকে এ দিন ফের কলকাতায় জেরা করা হয়। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ অবশ্য বলেছেন, “আমার সঙ্গে চিট ফান্ডের যোগ নিয়ে বিজেপির হাতে প্রমাণ থাকলে তারা খোলাখুলি সেই সব প্রমাণ দেখাচ্ছে না কেন?” কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থলগ্নি সংস্থার কাছ থেকে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের বক্তব্য, “হয় অখিল অভিযোগ প্রমাণ করুক, নয়তো এই ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার জন্য অখিলকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় ওঁর বিরুদ্ধে আইনি নোটিস পাঠাব।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের ১৫টি চিট ফান্ডের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে ২০১৩ সালের ৬ মে রাজ্যই চিঠি পাঠিয়েছিল। অসমে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সিবিআই জেনেছে, ২০০৯ থেকে ২০১১এই তিন বছর সুদীপ্ত সেনের সাম্রাজ্য বিস্তারে অনেকটাই সাহায্য করেন প্রবীণ আইনজীবী রামপ্রসাদ শর্মা। সিবিআই সূত্রের খবর, ওই তিন বছরে অসমে অর্থলগ্নি সংস্থা, রিয়েল এস্টেট ও সংবাদমাধ্যমের রমরমা ব্যবসা ফেঁদেছিল সারদা। সেই সময়ে মোটা মাসোহারার ভিত্তিতে রামপ্রসাদ শর্মা সারদার সমস্ত আইনি ঝঞ্ঝাট সামলাতেন বলে খবর। তখন সারদার বিরুদ্ধে অসম ও মেঘালয়ে মামলা রুজু হয়েছিল। আদালতে সারদার আইনজীবী হিসেবে ছিলেন এই রামপ্রসাদ শর্মাই। আর সেই রামপ্রসাদ শর্মা এখন তেজপুর থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ। তদন্তকারীরা জেনেছেন, সারদার সাম্রাজ্যে ভাঙন শুরু হওয়ার পর নিয়মিত মাসোহারা পাচ্ছিলেন না শর্মা এবং প্রধানত সে কারণেই সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরে বলে সিবিআইয়ের দাবি। তবে তাদের বক্তব্য, সুদীপ্ত সেন কী ভাবে অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিলেন, প্রতারণার মামলায় সেই সময়ে পাশ কাটানোই বা কী ভাবে হয়েছিল, রামপ্রসাদ শর্মাকে জেরা করলে সেই ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যেতে পারে। http://www.anandabazar.com/national/bjp-mp-accepts-the-charge-of-closeness-with-sarada-1.64361 নেপথ্য ভাষন -অশোক দাশগুপ্ত ১০০ দিনেই আচ্ছে দিন অস্তগামী? তুমুল গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেই নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীকে বলেছিলেন, আসছে ‘আচ্ছে দিন৷‌’ কিন্তু ১০০ দিনের মধ্যেই প্রশ্ন উঠে গেল, বি জে পি-র ‘আচ্ছে দিন’ কি আর ততটা ‘আচ্ছে’ নেই? বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপর্যয়ে যে মোদি থমকে যাননি, তা আদবানি-যোশিদের কার্যত বিদায়েই প্রমাণিত৷‌ রাজনাথ সিং অভিমানী হতে পারেন, সুষমা স্বরাজ অখুশি হতে পারেন, সরকারের সঙ্গে দলকেও পকেটে পুরে ফেলেছেন নরেন্দ্র মোদি৷‌ সম্প্রতি নানা রাজ্যে ১৮ বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে বি জে পি পেয়েছে ৮ আসন, বিরোধীরা ১০৷‌ বিহার৷‌ কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে, জোট বাঁধলেন লালুপ্রসাদ ও নীতীশ কুমার৷‌ ফল চমকপ্রদ৷‌ ৬-৪৷‌ প্রথমত প্রমাণিত হল, বিরোধী জোট হলে বি জে পি-র জয় সহজ নয়৷‌ দ্বিতীয়, আগামী বছরের বিধানসভা ভোটে বি জে পি-র রাজ্য দখলের স্বপ্ন হোঁচট খেল৷‌ তৃতীয়, লোকসভা ভোটের ঝড় থেমে গেছে৷‌ এন ডি এ লোকসভার তুলনায় ৭ শতাংশ কম ভোট পেয়েছে বিহারে৷‌ রাজ্যের ভোট আলাদা৷‌ বি জে পি-কে জিতিয়েছেন মোদি, সমস্যাও তৈরি করে রেখেছেন তিনিই৷‌ প্রত্যাশার চাপ নিজের ঘাড়ে এতটাই নিয়ে ফেলেছেন, যে, কিছু মোহভঙ্গ অনিবার্য৷‌ সন্দেহ নেই, ইউ পি এ সরকারের দুর্নীতি এবং প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের দুর্বলতা দেখার পর, মোদিকে শক্ত-সমর্থ দেশনেতা হিসেবে দেখছেন অনেকে৷‌ সুন্দর ভবিষ্যতের স্বার্থে আগে কড়া দাওয়াই অনিবার্য, এ কথা হজম করা সাধারণ মানুষের পক্ষে কঠিন৷‌ তবু, মোদি সরকার সম্পর্কে মোহভঙ্গই উপনির্বাচনে খারাপ ফলের জন্য দায়ী, তা বলা যায় না৷‌ লোকসভা ভোটে ঝড় তুলেছিল মোদির প্রচার৷‌ কংগ্রেস তথা ইউ পি এ সরকারের অবসান চাইছিলেন মানুষ এবং বিকল্প নেতা হিসেবে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছিলেন মোদি, অম্তত ৩১ শতাংশ ভোটদাতার কাছে, যা নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠ হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট৷‌ বিধানসভা ভোটে সেই ঝড় নেই, থাকবে না৷‌ এক-একটা রাজ্যে এক-এক রকম বিন্যাস৷‌ সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে ১৮-র মধ্যে ৮ পাওয়াটা বি জে পি-র পক্ষে অপ্রত্যাশিত হওয়ার কথা৷‌ কিন্তু কেন? এর আগেই উত্তরাখণ্ডে ৩ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জিতেছে কংগ্রেস৷‌ স্হানীয় ভোটেও বিপর্যস্ত বি জে পি৷‌ বি জে পি-র ‘আচ্ছে দিন’ কি তাহলে শেষ? না৷‌ এখনও নয়৷‌ বিহার দিয়েই শুরু করুন৷‌ কংগ্রেস এর মধ্যেই বলতে শুরু করেছে, জোট করলে সেই আঞ্চলিক দলের লেজুড় হয়ে থাকতে হবে, আলাদা লড়ার চেষ্টা চাই৷‌ বামপম্হীরা যা ভোট পেয়েছেন, তা কংগ্রেসের জোটে অনুপস্হিতির ফাঁক ভরাট করতেও পারে৷‌ কিন্তু সেখানেও বাধা দ্বিধা৷‌ সবচেয়ে বড় কথা, সামনের বছরের বিধানসভা নির্বাচনে লালু-নীতীশ জোট থাকবেই তো? সন্দেহ নেই, জোটে লড়লেও নীতীশের চেয়ে বেশি আসন তুলবেন লালুপ্রসাদ৷‌ রাবড়ি দেবীকে মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য মরিয়া হলে কী হবে? নীতীশ মেনে নেবেন? এবার বিহারে সাফল্য পাওয়ার পর লালু-নীতীশরা সারা দেশেই বি জে পি-বিরোধী জোট চাইবেন৷‌ প্রথম আবেদন মুলায়ম ও মায়াবতীর কাছে৷‌ কোণঠাসা মুলায়ম বললেন, রাজি৷‌ ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর মায়াবতী সরাসরি ‘না’ বলে দিলেন৷‌ তিনি তো আগেও বি জে পি-র সমর্থনে সরকার করেছেন৷‌ উদাহরণ, পশ্চিমবঙ্গ৷‌ কোনও জোটের গল্প নেই৷‌ ক্ষীণ সম্ভাবনাও নেই৷‌ মহারাষ্ট্রে বি জে পি-শিবসেনার বিরুদ্ধে একটা জোট আছে, সেই জোটে অবশ্য কিছু দল এলেও ছবিটা পাল্টাবে না৷‌ পাঞ্জাবে কংগ্রেস একটু ফিরেছে, প্রকাশ সিং বাদল সরকারের বিরুদ্ধে হাওয়া উঠছে, কিন্তু কংগ্রেসের ভোট ভাঙার মতো দলও তো থাকবে৷‌ সম্প্রতি কিছু সাফল্য পেলেও, কংগ্রেস এখনও ম্রিয়মাণ, রাহুল-প্রিয়াঙ্কা নিয়ে চাপা তর্কেই ব্যস্ত৷‌ উপনির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীরা প্রচার করেন না৷‌ বিধানসভা নির্বাচনে নামবেন মোদি৷‌ ঝড় না হলেও হাওয়া তুলবেন৷‌ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লাগামহীন বক্তৃতা করতে পারবেন না, কিন্তু নতুন পথ খুঁজে নেবেন৷‌ যেখানে যেমন দরকার৷‌ বিরোধী শক্তি এখনও সংহত নয়৷‌ ব্যক্তিগত ও স্হানীয় স্বার্থে বিভক্ত৷‌ তাহলে কি বি জে পি নিরাপদ? এক্ষেত্রেও উত্তর, না৷‌ মানুষ ‘আচ্ছে দিন’-এর আশায় অনম্তকাল বসে থাকবেন না৷‌ দু’বছর বড়জোর, পাল্টা হাওয়াও উঠতে পারে৷‌ এখনও পর্যম্ত মোদি সরকার এমন কিছু করেনি, যা গরিব মানুষকে খুশি করতে পারে৷‌ আম্বানি-আদনানি-বাজাজদের প্রশংসায় ভোটের পেট ভরবে না৷‌ কথা হল, সেই হাওয়াকে ভোটকেন্দ্র পর্যম্ত নিয়ে যাওয়ার মতো ইচ্ছা ও শক্তি থাকবে কি বিরোধীদের? আমরা বিভক্ত থাকতে ভালবাসি৷‌ নেতাদের দেখেই শিখি৷‌ সেটাই শাসকদের বড় ভরসা৷‌ সারদার অতিথিদের খোঁজে মুম্বইয়ের হোটেলে পা গোয়েন্দাদের সব্যসাচী সরকার খোঁজ দিল সেই মিডল্যান্ড পার্কের হিসেবের খাতাই৷‌ খোঁজাখুঁজিতে মিলল মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলের বিল৷‌ বিল মেটানো হয়েছে অতিথিদের৷‌ অতিথির নাম নেই৷‌ বিল তৈরি করা হয়েছে সারদার অডিট সংক্রাম্ত কারণে৷‌ মুম্বইয়ে এমন কে অতিথিরা মাঝেমাঝেই যেতেন৷‌ তাঁদের থাকা-খাওয়া তো বটেই, স্পা, মাসাজের বিলও চুকিয়েছে সারদা গোষ্ঠী৷‌ এমন মহা-তোয়াজের বহর যাঁদের নিয়ে, তাঁদের নাম তো জানতেই হয়৷‌ বৃহস্পতিবারই সারদা তদম্তের কলকাতার সি বি আই দল মুম্বই পৌঁছে, পাওয়া তথ্য অনুযায়ী হোটেলের রেজিস্টার আর বিমাপত্রের খোঁজ নিচ্ছেন৷‌ ম্যানেজারদের ডেকেও বলা হয়েছে, সারদা গোষ্ঠীর বিল-ভাউচার বার করতে৷‌ সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে মনোরঞ্জনা সিং ও তাঁর বাবা এবং ছেলের ঘন ঘন লন্ডন যাওয়ার খরচ দিতে হয়েছে সারদাকে৷‌ কোটি কোটি টাকা গেছে সেই প্রণামী দিতে! শুধু মনোরঞ্জনাই নয়, কলকাতার প্রভাবশালীদের ও তাঁদের দু-চারজন অনুচরকেও তোয়াজ করতে হয়েছে৷‌ মুম্বই নিয়ে গিয়ে তোফা ব্যবস্হা করতে৷‌ সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অফিসার, আমলা, প্রভাবশালী সবাই ওই তালিকায়৷‌ মুম্বইয়ে সারদা গোষ্ঠীর ব্যবসায়িক কাজের জন্য কয়েকজন নামী ব্যবসায়ী ঘন ঘন মুম্বই যেতেন, এমন প্রমাণও মিলেছে৷‌ এ ছাড়াও আছে প্রভাবশালীদের বড় অংশ৷‌ আগামী সপ্তাহে এমনই এক ব্যক্তির হিসেবরক্ষককে সি বি আই জেরা করবে৷‌ নোটিস দিয়ে যে ক’জনকে ডেকে জেরা করবে সি বি আই, তাঁদের তালিকা তৈরি করা হলেও আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যম্ত জেরা করা যাবে না৷‌ সেই প্রক্রিয়া মিটে গেলেই ডাকা শুরু হবে৷‌ শনিবার বাপি করিমকে ফের জেরা করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷‌ সারদা গোষ্ঠীর বিস্কুট উৎপাদনের জন্য যে বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয়েছিল, তার গায়ক ছিলেন আসামের সদানন্দ গগৈ৷‌ বিজ্ঞাপন ও আনুষঙ্গিক সবকিছু দিয়ে খরচ হয়েছিল ৪ কোটি টাকা৷‌ সদানন্দকে নোটিস দিয়েই ডাকেন গোয়েন্দারা৷‌ শুক্রবার বিকেলে গুয়াহাটি থেকে কলকাতা এসে গোয়েন্দাদের প্রশ্নের উত্তর দেন সদানন্দ৷‌ শনিবারও সকালে তাকে ডাকা হয়৷‌ পাশাপাশি, এদিনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল রাজেশ বাজাজকে জেরা৷‌ গুয়াহাটির এই ব্যবসায়ী ঘনিষ্ঠ ছিলেন মাতঙ্গ সিংয়ের৷‌ সারদা গোষ্ঠীর থেকে নেওয়া ২৪ কোটি টাকা মাতঙ্গ সিং ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি তাঁর৷‌ রাজেশ বাজাজের মাধ্যমেই সে টাকা নাকি ফেরত দেওয়া হয়েছিল৷‌ কিন্তু গোয়েন্দারা এই ২৪ কোটি টাকা কীভাবে কোন অ্যাকাউন্টগুলিতে ফেরত এল তা খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন৷‌ ২৪ কোটির হিসেব কোথায়? এমন প্রশ্নে সল্টলেকের সি জি ও কমপ্লেক্সে গোয়েন্দাদের টেবিলের উল্টোদিকে বসে বারে বারে অসংলগ্ন কথা বলছিলেন রাজেশ বাজাজ৷‌ রুমাল বার করে ঘাম মুছছিলেন৷‌ কতগুলো চেকের জের‘ তিনি জমা দেন৷‌ কিন্তু, সি বি আই তাতে সন্তুষ্ট নয়৷‌ সি বি আইয়ের সন্দেহ, টাকার সিংহভাগ সম্ভবত কেউ সরিয়ে ফেলেছে৷‌ তাই রাজেশ বাজাজকে জেরা করা হচ্ছে৷‌ রাজেশ বাজাজ আর সদানন্দ গগৈ একই অঞ্চলের বাসিন্দা৷‌ সি বি আই বাপি (রেজাউল) করিম, রাজেশ বাজাজকে আরও জেরা করতে চায়৷‌ তাদের সন্দেহ কিছুতেই কাটছে না! মুম্বইয়ে সারদার অনেক ‘শুভাকাঙ্খী’রও খোঁজ মিলেছে যারা ব্যবসায়ী৷‌ সি বি আই সূত্রের খবর, তৃণমূল সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে মুম্বইয়েই কিছু কথা বলবে সি বি আই৷‌ ই ডি-কে মিঠুন জানিয়েছিলেন, সারদার একটি অনুষ্ঠানের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন৷‌ কিন্তু সেই চুক্তির কয়েক লাখ টাকা বাকি আছে পেতে৷‌ তিনিই সারদার সঙ্গে জড়িয়ে প্রতারিত হয়েছেন৷‌ সারদার তদম্তে উঠে এসেছে জেলা স্তরের কিছু প্রভাবশালীর নাম৷‌ যারা সারদা গোষ্ঠীর কাজকর্ম জেনেও সে ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিয়ে টাকা নিতেন৷‌ সারদার বড় এজেন্টদের মাধ্যমে সে সমস্ত প্রভাবশালীকে ‘মাসোহারা’ দেওয়ার পাকা বন্দোবস্ত ছিল বলে কাগজপত্রে প্রমাণ রয়েছে৷‌ এদিকে সারদা গোষ্ঠীর দক্ষিণ ধূপঝোড়ার সারদা গার্ডেন রিসর্ট এবং লাটাগুড়ি রে? রিসর্টের সম্পত্তি নিজেদের হেপাজতে নিল ই ডি৷‌ নোটিস লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে৷‌ ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্রের জীবনাবসান আজকালের প্রতিবেদন: দিল্লি, ৩০ আগস্ট– আম্তর্জাতিক স্তরে খ্যাত, ভারতের পুরোধা ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্র আজ ভোরে নিদ্রিত অবস্হায় প্রয়াত হয়েছেন তাঁর গুরগাঁওয়ের বাড়িতে৷‌ ভোর ৬টায় ৮৬ বছর বয়সী বিপান চন্দ্রের প্রয়াণের খবর দেওয়া হয়েছে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে৷‌ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকার, মহাত্মা গান্ধীর জীবনেতিহাসের বিশেষ: বিপান চন্দ্র অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ইতিহাসকে গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরে আম্তর্জাতিক মহলে সুপরিচিত ও নন্দিত হয়েছেন৷‌ আজ দুপুর তিনটেয় দিল্লির লোদি রোডের মহাশ্শানে তাঁর অম্ত্যেষ্টি হয়েছে৷‌ এদেশে বামপম্হী ধারার ঐতিহাসিকদের ভেতর স্বাধীনতা-পূর্ব সময় থেকেই বিপান চন্দ্র ছিলেন অগ্রগণ্য ঐতিহাসিক৷‌ পদ্মভূষণ খেতাবে ভূষিত ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্রের মৃত্যুর খবর আজ সকালে ছড়িয়ে পড়তেই বিদ্যোৎসাহী মহলে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শোকের আবহ সৃষ্টি হয়৷‌ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং-সহ বহু রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, বিদ্বজ্জন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন৷‌ দশকের পর দশক বিদ্যালয় স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যম্ত তাঁর লেখা ইতিহাসের পাঠ্যবইগুলি কোটি কোটি ছাত্রছাত্রী পড়ে চলেছেন৷‌ বিপান চন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ গ্রম্হগুলির মধ্যে রয়েছে ‘দি রাইজ অ্যান্ড গ্রোথ অফ ইকনমিক ন্যাশনালিজম’, ‘ইন দ্য নেম অফ ডেমোক্র্যাসি: দ্য জে পি মুভমেন্ট অ্যান্ড দি এমার্জেন্সি’, ‘ন্যাশনালিজম অ্যান্ড কলোনিয়ালিজম ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’, ‘দ্য মেকিং অফ মডার্ন ইন্ডিয়া: ফ্রম মার্কস টু গান্ধী’৷‌ বামপম্হী ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সুবিখ্যাত ‘এনকোয়ারি’ পত্রিকাটি৷‌ দীর্ঘকাল তিনি এই পত্রিকার সম্পাদকীয় পরিষদের সদস্য৷‌ হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায় ১৯২৮ সালে জন্ম বিপান চন্দ্রের৷‌ তাঁর শিক্ষা লাহোরের ফরম্যান ক্রিশ্চান কলেজ, আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে৷‌ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু কলেজে রিডার ছিলেন, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিলেন ইতিহাসের অধ্যাপক৷‌ পরে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হিস্টোরিক্যাল স্টাডিজের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন তিনি৷‌ ইউ জি সি-র সদস্য ছিলেন বেশ কিছু বছর৷‌ ন্যাশনাল বুক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন দীর্ঘকাল৷‌ এই বয়সেও তিনি ছিলেন প্রখরভাবে সচেতন৷‌ নিয়মিতভাবে লিখতেন৷‌ সাম্প্রতিককালেই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, দার্শনিক বা আদর্শগতভাবে হিন্দুত্ব নয়, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙঘ, বি জে পি-র উদ্দেশ্য হচ্ছে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা৷‌ পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কয়েক মাস ধরে তাঁর স্বাস্হ্য দুর্বল হয়ে গিয়েছিল৷‌ মাঝে মাঝে ভুগছিলেন৷‌ গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিপান চন্দ্রের পরিবারবর্গকে জানিয়েছেন সমবেদনা৷‌ শোক প্রকাশ করে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিক বিবরণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ইতিহাস রচনায় তুলে ধরেছেন বিপান চন্দ্র৷‌ কোটি কোটি ছাত্রছাত্রী দশকের পর দশক তাঁর কাছ থেকেই জেনেছে স্বাধীনতার ইতিহাস৷‌ রাহুল গান্ধী বলেছেন, তিনি গভীরভাবে শোক-উদ্বেল৷‌ শোক প্রকাশ করেছেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী নবাম টুকি, শিল্পপতি কংগ্রেস সাংসদ নবীন জিন্দাল৷‌ পুরনো, প্রকৃত তৃণমূলকর্মীরা বিজেপিতে আসুন, মমতার বামে ঝোঁকার ইঙ্গিতকে কটাক্ষ করে ডাক রাহুল সিংহের দীপক ঘোষ, এবিপি আনন্দ Saturday, 30 August 2014 08:25 PM কলকাতা: পুরনো এবং প্রকৃত তৃণমূলকর্মীরা দল ছাড়ুন, যোগ দিন বিজেপিতে। আজ এই আহ্বান জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। সিপিএম, তৃণমূল জোট সম্ভাবনার যে ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার প্রেক্ষিতেই এই আহ্বান রাহুলের। বিজেপিকে ঠেকাতে প্রয়োজনে বামেদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন,। তৃণমূলনেত্রীর এই ইঙ্গিতের পর এখন ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করতে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, মমতার জোটের ইঙ্গিতে আরও একটি ইঙ্গিত স্পষ্ট, এ রাজ্যে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে বিজেপি। তাই বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূল যে একদিন বামেদের হাত ধরবে তার পূর্বাভাস দিয়েছিল দল। সেটাই আজ বাস্তব হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে, তৃণমূলকর্মীদের প্রতি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সিপিএমের উচ্ছিষ্ট নিয়ে দল ভরাচ্ছে বিজেপি, তৃণমূলনেত্রীর এই কটাক্ষেরও পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপি। সিপিএমের ভূমিকাকেও এদিন সমালোচনা করতে ছাড়েনি বিজেপি। তাদের দাবি, মমতার প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করেনি সিপিএম বরং ঘুরিয়ে শর্ত রেখেছে। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে ধ্বস নামছে বুঝতে পেরেই সিপিএমের হাত ধরার কথা বলছে তারা। এতদিন তৃণমূলনেত্রীর ধারণা ছিল ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট পেলে জয় সুনিশ্চিত। এখন বুঝতে পারছেন, মুসলিম ভোটে থাবা বসিয়েছে বিজেপি। আমি চোর নই, সিবিআই-কে পাল্টা আক্রমণের পথে মদন সৌজন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা Sunday, 31 August 2014 10:34 AM কলকাতা: সারদা-কাণ্ডে তাঁকে জেরা করার সম্ভাবনা যখন প্রবল হচ্ছে, তখন সিবিআইকেই পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। শনিবার তিনি বলেন, “আমাকে সিবিআইয়ের জুজু দেখিয়ে লাভ নেই। আমি চোর নই।” সুদীপ্ত সেনের সংস্থা সারদার তোলা কয়েক হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। তদন্ত যত এগোচ্ছে, তত শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের নাম উঠে আসছে। এই তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীও। সম্প্রতি মন্ত্রীর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক রেজাউল করিম ওরফে বাপির মোমিনপুরের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করার পর বৃহস্পতি ও শুক্রবার বাপিকে নিজেদের দফতরে এনে জেরা করেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বাপিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সারদার সঙ্গে মদন মিত্রের সম্পর্কের ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। তার ভিত্তিতেই মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তাঁরা। শনিবার সিবিআই সূত্রের খবর, মদনবাবুকে জেরা করার ব্যাপারে প্রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তদন্তকারীরা। তবে তার আগে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবী এবং আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই। সিবিআই-জেরার জল্পনাকে তিনি যে গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তা বোঝাতে এ দিন মুখ খোলেন মদনবাবু। গত কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর শুক্রবারই বাড়ি গিয়েছেন তিনি। ‘আক্রমণই আত্মরক্ষার সেরা উপায়’  এই আপ্তবাক্য মাথায় রেখে শনিবার তিনি বলেন, “আমি এখনও অসুস্থ। কড়া অ্যান্টিবায়োটিক চলছে। ডাক্তাররা আমাকে আরও কিছু দিন হাসপাতালে থেকে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি চোর নাকি যে সিবিআইয়ের ভয়ে হাসপাতালে থাকব?” পরিবহণ মন্ত্রীর বক্তব্য, “গুজব ছড়ানো হচ্ছে আমি নাকি সিবিআইয়ের ভয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আমার প্রশ্ন, সিবিআই কি হাসপাতালে গিয়ে জেরা করতে পারে না? পেটে অসহ্য ব্যাথা নিয়েও বাড়িতে চলে এসেছি। দেখি সিবিআই কী বলে!” তবে সিবিআই তাঁকে জেরা করতে চাইলে তিনি দলের সঙ্গে কথা বলেই যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, তা-ও জানাতে ভোলেলনি মদনবাবু। সারদার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করে মদনবাবু কখনও সিবিআইকে ‘ক্রিটিক্যাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন’ বলেছেন, কখনও বলেছেন ‘ক্রিয়েটিভ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন’। বাংলার রাজনীতির ময়দানে নিজেকে কার্যত উত্তমকুমারের সঙ্গে তুলনা করেছেন মদন। কখনও আবার গাঁধীর সঙ্গে নিজের দর্শনের তুলনা টেনেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “চুরি যখন করিনি তখন কাউকেই ভয় পাই না। এখন অবশ্য কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি দল বেঁধে মদন মিত্রের পিছনে লেগেছে। তাতে কোনও লাভ হবে না।” কিন্তু সারদা-কাণ্ডে কেন বার বার তাঁর নাম উঠে আসছে? জবাবে পরিবহণ মন্ত্রীর দাবি, “সিবিআই ভুল পথে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি লাল পাঞ্জাবি পরলাম না হলুদ, তা নিয়ে তো তদন্ত হতে পারে না। সন্ধ্যে বেলা কোন বান্ধবীকে নিয়ে কোন ক্লাবে গেলাম, সেটাও সিবিআই তদন্তের বিষয়বস্তু হতে পারে না।” কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের গতিমুখ কী হওয়া উচিত, তা-ও বাতলে দেন মদন। বলেন, “সারদার ২৬০০ কোটি টাকা কে খেয়ে গেল, শেষে যে ১২০০ কোটি টাকা পড়ে ছিল, সেটাই বা কোথায় গেল, তা খুঁজে বের করুক সিবিআই।” আসল লোকেদের না ধরে সিবিআই ভুল পথে হাঁটছে, এই প্রশ্নের জবাবে মদনবাবু বলেন, “আগরওয়াল-মাগরওয়াল যারা ধরা পড়েছে, সাহস থাকলে তাদের মদতদাতাদের গায়ে হাত দিক সিবিআই। হিম্মত থাকলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিকটাত্মীয়কে ধরুক ওরা।” তাঁর প্রশ্ন, “যাদের হাত ধরে সুদীপ্ত সেন জন্মাল, সেই চক্রবর্তী-ভট্টাচার্য-দেব-বসুদের তো সিবিআই ডাকছে না! তা হলে কীসের তদন্ত?” সিবিআই অবশ্য মনে করে, তাঁদের তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। এ দিন একাধিক তদন্তকারীর বক্তব্য, মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার আগে তাঁর ঘনিষ্ঠ আরও কয়েক জনকে জেরা করা হতে পারে। তাতে আরও কিছু তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, “আরও কয়েকটা কান আমরা টানব। তার পরে জোরালো তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়েই মাথায় হাত দেওয়া হবে।” তদন্তকারীরা জানান, সারদা কেলেঙ্কারিতে ইতিমধ্যেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উঠে এসেছে ময়দানের আরও কয়েক জন ক্লাবকর্তার নাম। বস্তুত, মদন মিত্র রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রীও। সেই সূত্রে তাঁর এবং বাপির সঙ্গে ময়দানের কয়েক জন কর্তাব্যক্তির ঘনিষ্ঠতাও গোয়েন্দারা জেনেছেন। ময়দানের বিভিন্ন ক্লাবে সারদার টাকা ঢালার পিছনে বাপি বা মদনবাবু জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রের খবর, পরিবহণ মন্ত্রীর পাশাপাশি আরও কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সারদা কেলেঙ্কারিতে আর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, তাঁদেরও ডাকা হবে। সারদা কেলেঙ্কারিতে ইডি টাকা পাচারের তদন্ত করছে। আর এই ঘটনায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত করছে সিবিআই। কাজেই দু’ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠেরা একই ব্যক্তি। সেই কারণেই ইডি-র তদন্তে উঠে আসা নামের তালিকা হাতে নিয়েছেন সিবিআই অফিসারেরা। এই তালিকায় তৃণমূলের এক অভিনেতা-সাংসদের নামও রয়েছে বলে খবর। তদন্তে গোয়েন্দারা জেনেছেন, একটি বাংলা সিনেমায় বকলমে টাকা ঢেলেছিল সারদা। বিদেশে সেই সিনেমার প্রিমিয়ারও হয়েছিল। তাতেও সারদার জড়িত থাকার কথা উঠে এসেছে। সাধারণ মানের একটি সিনেমার প্রচারে বিদেশে কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল কেন, সে প্রশ্নেরও উত্তর খোঁজা হচ্ছে। এর সঙ্গে ইতিমধ্যে ধৃত দু’জনের জড়িত থাকার কথা জানা গিয়েছে। এ দিনও রাজেশ বজাজ নামে এক ব্যবসায়ী এবং অসমের গায়ক-চিত্র পরিচালক সদানন্দ গগৈকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। রাজেশ বজাজের ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে সারদার পর্যটন ব্যবসার যোগাযোগ ছিল বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। তৃণমূলের বহিষ্কৃত রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষের একটি পাক্ষিক খবরের কাগজ নিয়েও খোঁজখবর করছেন তদন্তকারীরা। সেই কাগজের সঙ্গে তৃণমূলের অন্য এক সাংসদেরও যোগাযোগ ছিল বলে খবর। সারদা-কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে এ দিন ফের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “অমিত শাহকে তো সিবিআই হেফাজতে নিয়েছিল। চার্জশিটও দিয়েছিল। তার পরেও তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীকে ১৯ ঘণ্টা জেরা করার পরেও তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সিবিআই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই কাজ করে, এ সব তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।” এর পাল্টা বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “সিবিআই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কাজ করছে। আমরা চাই সব দোষীর শাস্তি হোক। একটা দলের ওপর থেকে নীচে পর্যন্ত সবাই দুর্নীতিতে জড়িত, এমন নজির সহজে মেলে না। তৃণমূল সেই নজির গড়েছে।” শুক্রবার ‘উত্তরকন্যা’ অভিযানে শিলিগুড়িতে এসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সারদা নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধলেও এ দিন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক সি পি যোশী বলেন, “সিবিআই সারদা তদন্তে চার্জশিট জমা দিলেই বোঝা যাবে কে বা কারা দোষী। তার আগে মন্তব্য করা উচিত নয়।” এই নিয়ে অধীরবাবুর প্রতিক্রিয়া, “যোশীজি দিল্লিতে থাকেন। আমরা রাজ্যে থাকি। সারদা-কাণ্ডে কী ভাবে, কাদের মদতে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন তা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। সে জন্যই আমরা তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছি।” কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন, “দিদি (মমতা) কি জানতেন না, তাঁর সহকর্মীরা সারদার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন?” ডুয়ার্সে সারদা গোষ্ঠীর রিসর্ট নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল ইডি। এ দিন ইডি-র পক্ষ থেকে সারদার রিসর্টে নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি পর্যায়ে উত্তরবঙ্গে তদন্তে নেমে শিলিগুড়ির একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কার মাধ্যমে কত টাকায় সারদা গোষ্ঠী কিনেছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়েছে। শিলিগুড়ি শহরের কড়াইবাড়ি এলাকার ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি ৫ কোটি টাকায় সারদা সংস্থা কিনেছিল বলে প্রাথমিক ভাবে খবর পেয়েছে ইডি। বদলাচ্ছে দিন, আশা দেখালেন জেটলি উপরের দিকে। পরিষেবা ক্ষেত্রের উন্নতি হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির হার আস্তে আস্তে কমছে। এপ্রিল থেকে জুন, এই তিন মাসে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৭ শতাংশ ছুঁয়েছে। যা গত আড়াই বছরে সব থেকে বেশি। অর্থনীতিতে লগ্নিকারীদের আস্থা ফিরেছে। জেটলি বলেন, “যে সব পদক্ষেপ আমরা করছি, তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আগামী দিনে আরও বেশি করে দেখা যাবে।” মনমোহন-সরকার ক্ষমতায় এসে প্রথম একশো দিনের কাজের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল। নরেন্দ্র মোদী তেমন কিছু করেননি। কিন্তু ২ সেপ্টেম্বর মোদী সরকারের একশো দিন পূর্ণ হওয়ার আগে সরকার কী করে দেখাল, তা জানানোর চাপ তৈরি হয়েছে। মোদী গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সাংবাদিক সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আজ জেটলি তার সূচনা করেছেন। যে হেতু কোনও লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কথা ছিল না, তাই অর্থ মন্ত্রকের কাজের খতিয়ান দিতে গেলেও কোথাও একশো দিনের প্রসঙ্গ টানেননি তিনি। কিন্তু সেই খতিয়ানেও কী কী হয়েছে, তার সঙ্গে না হওয়ার কথাও বলতে হয়েছে জেটলিকে। অর্থমন্ত্রীর দাবি, লোকসভা ভোটে মোদীর জিতে আসাটাই অর্থনীতিকে ঘিরে হতাশার পরিবেশ অনেকটা কাটাতে পেরেছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো গিয়েছে। প্রতিরক্ষা ও রেলে বিদেশি লগ্নির পথ আরও প্রশস্ত করা হয়েছে। সিদ্ধান্তগ্রহণে গতি এসেছে। কর সংক্রান্ত বিবাদ মেটাতে বিশেষ ব্যবস্থা তৈরির চেষ্টা হয়েছে। ব্যবসাবাণিজ্যের প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক উন্নয়নেও খরচ তেমন কিছু কমানো হয়নি। আর না পাওয়া? সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল, মোদী সরকার খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হাত থেকে রেহাই দেবে। মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে এই মূল্যবৃদ্ধিকে বিজেপি হাতিয়ার করেছিল। আজ জেটলি নিজেই বলেছেন, অনেকখানি লাগাম পড়ানো গেলেও মূল্যবৃদ্ধি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। আজও জেটলিকে অল্প বৃষ্টি, এই মরসুমে দাম বাড়ার প্রবণতার দোহাই দিতে হয়েছে। তবে দ্বিতীয়টি যে মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ, সে কথা অন্যরাও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাতে সরকারের দায়িত্ব কমে না বলেই মনে করছে বিরোধীরা। এমনকী, মরসুমি মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে হোর্ডিং ঠেকানোর যে আইন কেন্দ্র করেছে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। অনেক   রাজ্যই বলছে, আইনে মজুতদারদের বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য ধারা দেওয়ায় পরিস্থিতি আগে যা ছিল, তা-ই রয়েছে। বেআইনি মজুতের অভিযোগে কাউকে ধরলেও সে সহজেই ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। ফলে কাজের কাজ কিছুই   হচ্ছে না। আবার মূল্যবৃদ্ধি না কমায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখনও সুদের হার কমায়নি। জেটলি অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, খাদ্যশস্য পর্যাপ্ত পরিমাণেই মজুত রয়েছে। অনাবৃষ্টিতেও কোনও সমস্যা হবে না। আর নিত্যপণ্যের   দাম যে কিছুটা হলেও কমেছে, তা মানছেন অনেকেই। সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে রেলভাড়া বাড়িয়েছে মোদী সরকার। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কা সত্ত্বেও সদানন্দ গৌড়া রেলকে বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে ধীরে ধীরে সুফলও মিলছে। অন্য কয়েকটি ক্ষেত্র, যেমন বিমা বিল পাশ বা পণ্য পরিষেবা কর চালু, এগুলিতে এখনও পিছিয়ে রয়েছে সরকার। জেটলি আজ নিজেই এ কথা মেনে নিয়েছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁরা চেষ্টা করছেন। আশা করছেন, আগামী অধিবেশনেই বিমা বিল পাশ করানো যাবে। সে ক্ষেত্রে আরও লগ্নি আসবে। পণ্য-পরিষেবা কর চালু করতে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই অর্থ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। জেটলি বলেছেন, বছরের শেষে ডিজেলের দাম সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে দেওয়া হবে। কিন্তু ভর্তুকির বহর এক ঝটকায় কমানোর সাহস দেখানো যায়নি। তার জন্য জেটলি এখনও বিমল জালানের নেতৃত্বে তৈরি ব্যয় সঙ্কোচ কমিশনের সুপারিশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। বিলগ্নিকরণের কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েছে। তাতে রয়েছে এনটিপিসি, ওএনজিসি-র মতো কয়েকটি সংস্থা। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যেই এই কাজ শুরু হবে। এপ্রিল থেকে জুন মাসে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৭ শতাংশে পৌঁছনোর তথ্যকে সামনে রেখেই আজ জেটলি প্রমাণ করতে চেয়েছেন, অর্থনীতির হাল শোধরাচ্ছে। কিন্তু তাতে মোদী সরকারের কতখানি কৃতিত্ব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেটলির পূর্বসূরি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম দাবি করেছেন, অর্থনীতির হাল ফেরাতে মনমোহন জমানার শেষ পর্বে কারখানার উৎপাদন বাড়াতে শুল্ক ছাড়, বিদ্যুৎ ও খনি ক্ষেত্রে যে সব পদক্ষেপ করা হয়েছিল, তার জন্যই বৃদ্ধির হার বেড়েছে। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এপ্রিল থেকে জুন, এই তিন মাসে ২৬ মে পর্যন্ত মনমোহন সরকারই ক্ষমতায় ছিল। চিদম্বরমের যুক্তি, “আমরা তো বলেইছিলাম, অর্থনীতির অধোগতি আটকানো গিয়েছে। এ বছরের শুরুতে তা ঘুরে দাঁড়াবে। সেটাই হয়েছে। আমরা তাই এর কৃতিত্ব দাবি করতেই পারি। আমি খুশি যে অর্থ মন্ত্রক মেনে নিয়েছে যে এটাই আশা করা হয়েছিল।” চিদম্বরমের এই দাবি শুনে জেটলির কটাক্ষ, “এখন ফল ভাল হয়েছে বলে যে কোনও ভারতীয়ই তাতে খুশি হতে পারেন!” কিন্তু সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিও অভিযোগ তুলেছেন, “নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে অর্থনীতির বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি। বৃদ্ধির হার বা লগ্নির পরিমাণ বাড়ার মতো জেটলি যে সব যুক্তি দিচ্ছেন, তা আর্থিক সমীক্ষাতেই বলা হয়েছিল। যে আর্থিক সমীক্ষা আদতে মনমোহন জমানারই পর্যালোচনা। জেটলি যে বাজেট পেশ করেছিলেন, তা র্কাযত চিদম্বরমের অন্তর্বর্তী বাজেটেরই প্রতিলিপি।” একই সঙ্গে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সুদিন আসছে’ বলে যে প্রচার ভোটের সময় চালিয়েছিল বিজেপি, তা কোথায়? স্মার্ট সিটি.বা বুলেট ট্রেনই বা কত দূরে? পাঁচ বছরে এ সব আদৌ সম্ভব হবে তো? জবাবে বিজেপি নেতারা বলছেন, একশো দিনে এত কিছু সম্ভব নয়। কিন্তু জন-ধন প্রকল্প শুরু করে মোদী অন্তত বুঝিয়ে দিয়েছেন, উন্নয়নে ধনী-গরিব সকলকে যোগ করতে চান তিনি। সুতরাং সুদিন আসবেই। http://www.anandabazar.com/national/financial-condition-of-india-will-soon-recover-jaitley-indicates-in-statement-1.64373 একনায়ক ভাবমূর্তির বাইরে বেরনোই নয়া চ্যালেঞ্জ মোদীর নিজস্ব সংবাদদাতা একশো দিন হতে চলল। সরকারে হিন্দুত্বের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে নিজের ‘একনায়ক’ ভাবমূর্তির বদনাম ঘোচানোও এখন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদীর কাছে। গোড়া থেকেই মোদী তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য ও সাংসদদের স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বিপুল জনমত নিয়ে জেতার পর মানুষের প্রত্যাশা মেটানোই তাঁর সরকারের লক্ষ্য। আর তা শুধু উন্নয়ন ও সুশাসনের ভাবনাচিন্তা, প্রয়াসের মাধ্যমেই হতে পারে। সঙ্ঘের ‘কোর অ্যাজেন্ডা’ পূরণ করা যে তাঁর আশু লক্ষ্য নয়, তা-ও তিনি আরএসএস নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। সে কারণেই নতুন সরকারের জন্মলগ্নেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ যখন ৩৭০ ধারা বিলোপের প্রসঙ্গকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন, মোদী তাঁকে ধমক দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। পরের মন্ত্রিসভার বৈঠকে মোদী সকলকে জানিয়ে দেন, মনমোহন সিংহ সরকার সিদ্ধান্তহীনতা, নীতিপঙ্গুত্বের শিকার ছিল। তাকে বদলে, বিপুল ভোট দিয়ে মানুষ একটি স্থায়ী সরকার তৈরি করেছে এই আশায়, যাতে এই সরকার দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকারিতন্ত্রের খোলনলচে বদলে তাই দিনরাত মানুষের স্বার্থে কাজ করে যেতে হবে। কিন্তু দল ও সরকারের রাশ মোদী যে ভাবে নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, তা নিয়েও সমালোচনার মুখোমুখি তিনি। বিরোধী দলের নেতারা মোদীকে ‘হিটলার’ উপাধি আগেই দিয়েছেন। তার উপর লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশীদের ‘বৃদ্ধাশ্রমে’ পাঠানো, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে উঠতে-বসতে বিবাদ নিয়ে রোজই মোদীকে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। মোদীর ভয়ে তটস্থ তাঁর মন্ত্রীরাও। সম্প্রতি এক মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ নিয়ে যাননি বলে তাঁকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মোদী। রাতে তাঁর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে মোদী বলেন, ‘কাল সকালে নথি নিয়ে যেতে না পারলে ইস্তফা দিন।’ মোদীর ভয়ে মন্ত্রীরা এখন প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও পারছেন না। বিরোধীরা যে ভাষায় কটাক্ষ করছেন মোদীকে, ঘরোয়া স্তরে প্রায় একই সুরে বক্তব্য রাখছেন নিজের দলের নেতারা। সরকারের একশো দিনের মাথায় এই একনায়কের বদনাম ঘোচানো মোদীর কাছে চ্যালেঞ্জ। আজ মোদী সরকারের অন্যতম সেনাপতি অরুণ জেটলি যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, তাঁকেও এই প্রশ্ন শুনতে হয়। প্রশ্ন করা হয়, ইউপিএ জমানায় মনমোহন সিংহকে বলা হত, তিনি রিমোট কন্ট্রোলে চলতেন, আর নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর হাতে অনেক বেশি ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে! জেটলি বলেন, “নরেন্দ্র মোদীর হাতে অনেক বেশি ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে, এটি আদৌ কোনও বিতর্কের বিষয় নয়। আমি নিজেও বিভিন্ন মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছি। সেখানে অনেক বেশি বিকেন্দ্রীকরণের স্বাধীনতা উপভোগ করি।” জেটলির যুক্তি, “প্রধানমন্ত্রী যদি অতিসক্রিয় থেকেও বিভিন্ন মন্ত্রককে এমন স্বাধীনতা দেন, তা হলে সকলের মধ্যে দায়িত্ববোধ চলে আসে। মন্ত্রকই সেই সিদ্ধান্তই নেয়, যা প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর সচিবালয় অনুমোদন করে।” মোদীর আর এক চিন্তা হিন্দুত্বের ভাবনা থেকে সরকারকে বাঁচানো। লোকসভার আগে দ্বিমুখী কৌশল নিয়ে এগিয়েছিল সঙ্ঘ ও বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী তুলে ধরেছেন উন্নয়নের প্রসঙ্গ, আর সঙ্ঘ বলেছে হিন্দুত্বের কথা। কিন্তু সরকারের একশো দিনের মাথায় মোদী বুঝতে পারছেন, তাঁর সরকারেও হিন্দুত্বের আঁচ পড়তে শুরু করেছে। সঙ্ঘের সঙ্গে বিজেপি নেতারাও কখনও ধর্মান্তকরণ নিয়ে সোচ্চার হচ্ছেন, কখনও উগ্র হিন্দুত্ব উস্কে দেওয়া কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে বিজেপি সাংসদের মুখে। কেন্দ্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী নাজমা হেফতুল্লাও সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সুরে ভারতের সব নাগরিককে ‘হিন্দু’ বলতে শুরু করেছেন। বিজেপি সূত্রের মতে,  দলের সভাপতি অমিত শাহকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, হিন্দুত্ব নিয়ে সঙ্ঘ নেতারা যা-ই বলুন না কেন, দল ও সরকারকে তার থেকে দূরে রাখতে হবে। নাজমাকে মোদীই সাফাই দিতে বলেছেন। আর সঙ্ঘ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে বিজেপিকে হিন্দুত্ব থেকে দূরে রাখার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন মোদী। বিজেপি সূত্রের মতে, আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতাদের মোদীর এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন অমিত শাহ। http://www.anandabazar.com/national/%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%A8-%E0%A7%9F%E0%A6%95-%E0%A6%AD-%E0%A6%AC%E0%A6%AE-%E0%A6%B0-%E0%A6%A4-%E0%A6%B0-%E0%A6%AC-%E0%A6%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC-%E0%A6%B0%E0%A6%A8-%E0%A6%87-%E0%A6%A8%E0%A7%9F-%E0%A6%9A-%E0%A6%AF-%E0%A6%B2-%E0%A6%9E-%E0%A6%9C-%E0%A6%AE-%E0%A6%A6-%E0%A6%B0-1.64364 মালিবাগ-তেজগাঁও রেললাইনের শত বিঘা জমি ॥ ১৫ সন্ত্রাসীর দখলে ০ মাদক স্পট আর অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য! ০ ক্লাবঘর মানেই টর্চার সেল ০ খুনোখুনি বস্তির নিত্য ঘটনা ০ পুলিশ এদের পকেটে রাজন ভট্টাচার্য ॥ ১৫ সন্ত্রাসীর দখলে রেলের শত বিঘারও বেশি জমি। তাদের কাছে জিম্মি এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। এদের পরিচয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বিভিন্ন মামলার দাগী আসামি। জমি দখল করে ভাড়া দেয়া, ছিনতাই, রাহাজানি, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে সকল অপরাধের নিয়ন্ত্রক এরা। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশ প্রশাসনও তাদের পকেটে। সরকারের এক ব্যক্তিদের পরিচয়ে এরা অপকর্ম করে বেড়ায়। অভিযোগ রয়েছে তাদের নেতৃত্বে মালিবাগ রেলগেট থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় তিন সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা। যেখানে রয়েছে দোকান আর বস্তি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে ৫০টির বেশি স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে গত ৬ মাসে। বছরে এসব স্থাপনা থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ভাড়া তোলা হচ্ছে। এদিকে স্থাপনা মাদকেরহাট আর অপরাধীদের আশ্রয়কেন্দ্র। মালিবাগ রেলগেট বস্তির দক্ষিণ যুবলীগের কার্যালয়, টর্চার সেল হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। এদিকে মগবাজার এলাকায় খাসজমি ও রেলওয়ের জমি দখল নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। জমি দখল নিয়ে হামলা ও পাল্টাহামলার ঘটনাও ঘটছে। খাসজমি দখল কেন্দ্র করে সম্প্রতি মগবাজারে তিন খুনের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা গেছে। মালিবাগ থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত রেলের জমি রক্ষায় দেয়ালের স্মৃতিচিহ্ন এখন আর নেই। অর্ধশতাধিক বাড়ি রেলের জমিতে নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়েছে শতাধিক অনুমোদনহীন লেদ কারখানাকে। অবৈধভাবে বস্তিগুলোতে দেয়া হয়েছে বিদ্যুত ও পানি সংযোগ। দখলদাররা কাউকে পরোয়া করে না ॥ মালিবাগ থেকে তেজগাঁও স্টেশন পর্যন্ত রেল লাইনের দু’পাশের জমিতে চলছে দখলের মহোৎসব। দিন দিন নতুন নতুন জায়গা দখল হচ্ছে। রাতারাতি গড়ে উঠছে নানা ধরনের স্থাপনা। সবই হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয়ে। দখলদাররা কাউকে পরোয়া করে না। পুলিশ-প্রশাসন আর রাজনৈতিক নেতা-সবাই তাদের হাতে। কখনও পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে রাজনৈতিক তদ্বিরে অল্প সময়ের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে আসে। রেল লাইনের পাশে বিভিন্ন বাড়ির মালিক অবৈধভাগে দোকান ভাড়া দিয়ে আসছেন যুগের পর যুগ। ওয়্যারলেস গেটের পাশে ভা-ারী ভোলা হোটেল গড়ে উঠেছে রেলের জমিতে। ৪১৬/এ, বড় মগবাজার বাড়ির পেছনের অংশের রেলের জমিতে ভাড়া দেয়া হয়েছে অনুমোদনহীন ওয়েল্ডিং কারখানা। ৬০২/ই, বাড়ির পেছনের অংশে আছে একই ধরনের কারখানা। ৩০১/জে বাড়ির পেছনের অংশে রেলের জমিতে রয়েছে আশা/ আকাশসহ একাধিক ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা। আছে হাবিব মেটাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ভাঙ্গাড়ির দোকানসহ প্রায় শতাধিক স্টিল ও ওয়েল্ডিং কারখানা। এর বেশিরভাগই ভাড়া নেন বাড়ির মালিকরা। স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল রেলের জমিতে হোটেল ভাড়া দিয়ে মাসপ্রতি আদায় করছেন তিন হাজার টাকা। এখানেই আছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রমনা থানা কমান্ডের ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়। একই রুমে আছে আনন্দ স্কুল, ব্র্যাক স্কুল। ঘরটির বাইরের দিকে তালা ঝোলানো দেখা গেলেও ভেতরে কেরাম খেলা চলতে দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে এই ঘরটিতে কি হয় এ ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ক্লাবের পাশে আছে মদিনা ট্রেডার্সের দোকান। সিদ্দিকীয়া ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মচারীরা জানালেন, প্রতিমাসে ঘর ভাড়া আট হাজার টাকা। কারা ভাড়া নেন এ ব্যাপারে তাঁদের কিছুই জানা নেই। এর একটু সামনে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের আরেকটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয় রয়েছে। বিশাল জায়গা নিয়ে ৩৫নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নতুন কার্যালয় বানানো হয়েছে। এই ক্লাবগুলোতে কি হয় এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর থেকে ক্লাব সরগরম হয়। মধ্যরাত পর্যন্ত চলে মানুষের আনাগোনা। ক্লাবের পাশেই রেলের জমিতে বাড়ি বানিয়ে রাব্বিসহ বেশ কয়েকটি ইঞ্জিনিয়ারিং দোকান ভাড়া দিয়েছেন এক মালিক। অন্তত চার কাঠা জমি দখল করে একটি ঘরেই রয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিটি ক্লিনিকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও যুবলীগসহ ইমারত নির্মাণ শ্রমিকদের কার্যালয়। মালিবাগ বস্তিতে যুবলীগের টর্চার সেল ॥ মালিবাগ রেলগেট বস্তির বাসিন্দা আবুচাঁনের দুঃখের কাহিনী কে শুনবে? তেমন কেউ নেই বস্তিজুড়ে। যারা আছে তারা শুধু শোনার সাথি। প্রতিকার বা প্রতিরোধের সাথি নেই। চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেমঘটিত ঘটনায় শিকার হন তিনি। অন্য মহিলাকে প্রেমের প্রলোভনে ফেলে নিয়ে আসার অপরাধে রাতে তাঁর ডাক পড়ে ক্লাবঘরে। গজারির লাঠি দিয়ে চলে অমানুষিক নির্যাতন। তাঁকে বাঁচাতে ভয়ে স্থানীয়দের কেউ এগিয়ে আসেনি। শত-আর্তনাদ আর আকুতিতেও আবুচাঁন নিজেকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি। এক পর্যায়ে তাঁর কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা ক্লাবের লোকদের হাত-পা ধরে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে আবুচাঁনকে ছাড়িয়ে নেয়। প্রশ্ন জাগতেই পারে কারা এই ক্লাবের নিয়ন্ত্রক? সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বস্তির রেললাইন ঘেঁষে স্থাপন করা হয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ (রমনা)-এর ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়। বস্তিবাসীর কাছে এটি ক্লাবঘর হিসেবে পরিচিত। কারও কারও কাছে ক্লাবঘর মানেই আতঙ্কের নাম। অনেকেই এটিকে টর্চার সেল হিসেবে জানেন। ক্লাবঘরের নাম শুনলেই চমকে ওঠেন স্থানীয়দের অনেকে। দিনের বেলায় এখানে কেউ থাকে না। রাতে ক্লাব খোলা হয়। শুরু হয় বিচার সালিশের কাজ। বস্তির তথ্য সংগ্রহে নিয়োজিত আছে অনেকে। রাতে তারা নেতাদের তথ্য সরবরাহ করে। তবে তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। খালেক নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এই ক্লাবের নিয়ন্ত্রক। বলা হয় তিনি ৩৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা। কারও মতে সভাপতি তিনি। তাঁর সঙ্গে আছেন আরও ১০ প্রভাবশালী সন্ত্রাসী। যারা এখন সরকারদলীয় নেতা হিসেবে পরিচিত। তার অনুসারী আছে ৫০ জন। এদের বেশিরভাগের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। বর্তমান স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক এমপি শাওনের দোহাই দিয়ে এরা এলাকায় দাবড়ে বেড়ায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। বস্তির এক মহিলাকে দিয়ে তাঁর কাছে চিকিৎসবার জন্য চার হাজার টাকা পাঠানো হয়। তিনি সুস্থ হয়ে ফেরার পর ক্লাবে ডাক পড়ে। বলা হয়, তাঁর চিকিৎসার জন্য ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছিল। পুরো টাকা দাবি করা হয় অসহায় এক ব্যক্তির কাছে। অবশেষে গ্রামের বাড়িতে জমি বিক্রি করে এই অর্থ পরিশোধ করা হয়। তিন মাসের ভাড়া বকেয়া পড়ায় নির্মমভাবে পেটানোর ঘটনাও আছে এই ক্লাবঘরে। টাকার বিনিময়ে বসে বিচার সালিশ। যে কোন ঘটনা ঘটলেই জোর করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হয়। কারও কিছু বলার নেই। যাঁরা প্রতিবাদ করতে যান তাঁদের পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হয়। দেয়া হয় প্রাণনাশের হুমকিও। ১০ সন্ত্রাসীর হাতে জিম্মি বস্তি আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ॥ মালিবাগ রেলগেট থেকে ওয়্যারলেস রেলগেট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রেলের জমিতে মাসে প্রায় কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে ১০ চিহ্নিত সন্ত্রাসী। বস্তি, দোকান থেকে শুরু করে বসবাসকারী মানুষ-সবাই তাদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের ইশারা ছাড়া এই এলাকার গাছের পাতাও নড়ে না। কেউ কথাও বলে না। মুখ খুললেই বিপদ নেমে আসে। ওরা মুকুটহীন সম্রাট। পুলিশ, প্রশাসন, রাজনীতি-সবই তাদের নিয়ন্ত্রণে। যুগের পর যুগ তাদের শাসনেই চলছে পুরো এলাকা। যখন যে দল ক্ষমতায় আছে তখন সেই দলের নেতা এরা প্রত্যেকেই। ওয়্যারলেস গেট সংলগ্ন রয়েছে শতাধিক ছোট ছোট চায়ের দোকান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাসপ্রতি দোকান ভাড়া তিন হাজার টাকা। ভাড়া হিসেবে শুধু জমির জায়গাটুকু দেয়া হয়। ছোট টং তৈরির ব্যয় ব্যবসায়ীদের। বস্তিতে রয়েছে সহস্রাধিক ঘর। প্রতিটি ঘরের ভাড়া দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। রেলেও জমিতে আছে অন্যান্য কিছু দোকানপাট। বস্তির ঘর ভাড়া নিতে হলে যোগাযোগ করতে হয় ক্লাবঘরে। ভাড়া তোলা হয়ে ঘরে বসেই। প্রতিটি ঘরে অবৈধভাবে দেয়া হয়েছে বিদ্যুত ও পানির সংযোগ। মাসপ্রতি ঘরপ্রতি বিদ্যুত খরচ আদায় করা হয় ২৫০-৪০০ টাকা পর্যন্ত। পানির খরচ দিতে হয় ১৫০ টাকা। অথচ সরকারের বিদ্যুত ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার। অভিযোগ আছে, তারাও মাসপ্রতি মাসোয়ারা পান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নূরু মিয়া, শফিক, আখতার মিয়া, শওকত আলী, বিল্লাল, আলী, জলিল, মঞ্জুর কাদের, খালেক সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। এর মধ্যে নুরু মিয়ার দখলে থাকা দোকানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সময়মতো দোকান ভাড়া না দিলে নির্যাতন করা হয় ভাড়াটিয়াদের। সব মিলিয়ে এই এলাকা থেকে মাসে প্রায় কোটি টাকা ভাড়া তোলা হয়। বছরে ১২ কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য রয়েছে এখানে। এ ছাড়া মাদকসহ নানা ধরনের ব্যবসা তো আছেই। বস্তিজুড়ে রয়েছে একাধিক ক্লাবঘর। পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মালিবাগ বস্তির আশপাশ জুড়ে ৩০টির বেশি স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। রাতারাতি টিনের চালা ভেঙ্গে দেয়াল তুলে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দখল পাকাপোক্ত করতে লেংটা বাবাসহ একাধিক মাজারে ২৪ ঘণ্টাই চলে ক্যারম আর জুয়া খেলা। রাতে বসে মাদকের হাট। সেই সঙ্গে ক্লাবের লোকদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ তো আছেই। অর্থাৎ অপরাধীদের আড্ডাস্থল বা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সরকারী দলের পরিচয়ে গড়ে ওঠা ক্লাবগুলো। তেজগাঁও বস্তির নিয়ন্ত্রক জামাই রফিক ও বাবু ॥ তেজগাঁও রেল স্টেশনের ঠিক উত্তর পাশে রেলের জমিতে আছে পাঁচ শতাধিক বস্তিঘর। প্রতিটি ঘর থেকে মাসপ্রতি ভাড়া নেয়া হয় দুই হাজার টাকা। মাসে দশ লাখ টাকারও বেশি আয় রেলের এই জমিকে কেন্দ্র করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শেখ রাসেল ক্লাবের বাবু ও জামাই রফিকসহ স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নামধারী লোকজন এই বস্তির নিয়ন্ত্রক। অঘোষিত অভিভাবক। নানা অপরাধ আর অপকর্মের সঙ্গে জড়িত এরা প্রত্যেকেই। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুলিশের ইনফরমার হিসেবে পরিচিত জামাই রফিক। তাই পুলিশ প্রশাসন তার পকেটে। সম্প্রতি রায়পুরা সেলিম ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর এলাকায় উত্থান ঘটে জামাই রফিকের। বাদশা-আলী-রাজু ও মিন্টুর নিয়ন্ত্রণে মগবাজার এলাকা ॥ বাদশা-আলী ও রাজু এরা তিন ভাই। স্থানীয়ভাবে এদের পরিচিতি সন্ত্রাসী হিসেবে। ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ে তারা এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। রেলের জায়গা-জমি দখল থেকে শুরু করে, ছিনতাই-রাহাজানি-সব কিছুর সঙ্গেই এদের নাম জড়িত। এদের বিরুদ্ধে রমনাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক মামলা। পুলিশ ধরে নিয়ে গেলেও ক্ষমতার প্রভাবে দ্রুত ছাড়া পায় তারা। সম্প্রতি স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী সুভাষের কাছ থেকে আট লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় আলী। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও তিন মাস পর আবারও ছাড়া পায়। সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেলের পক্ষ থেকে মগবাজার রেল গেট এলাকার সাইনবোর্ডে ব্যানার টানাতে গেলে চাঁদা দাবি করায় বাদশাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কয়েকদিনের মধ্যে ছাড়া পায় বাদশা। তাদের গডফাদার আছেন তিনজন। সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মগবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তার, মনু ও ভুট্টু মিয়া। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিন থেকে চার মাস আগে মগবাজার এলাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনতাই করে রাজু-বাদশা ও আলী এরা তিন ভাই। মানুষের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায়, মোবাইল রেখে দেয়া তাদের নিয়মিত কাজ। রেল লাইন ঘেঁষে তাদের নেতৃত্বে ক্লাব করা হয়েছে একাধিক। পানির ব্যবসার আড়ালে এসব ক্লাবে চলে জুয়া, মদ আর অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার কাজ। ভাড়া না দিলে দোকান থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মগবাজার মোড়ে রেলের জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে অনিন্দিতা এন্টারপ্রাইজ এ্যান্ড সিকিউরিটি। এ ছাড়াও আছে- এভারসাইন সিএনপি অটোপার্টস, সিনিএজি গ্যারেজ, আজমেরী মোবাইল, রশিদ অটো, বিসমিল্লাহ মেকানিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং, সার্টিফায়েড সার্ভিস পয়েন্টের মতো অসংখ্যা প্রতিষ্ঠান। স্থানীয়রা জানিয়েছে, ২০ থেকে ২৫ বছর আগে রেলওয়ের পক্ষ থেকে দেয়াল তুলে জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছিল। স্থানীয় প্রভাবশালীরা দেয়াল ভেঙ্গে জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়েছে। অথচ জমি উদ্ধারে নির্বিকার কর্তৃপক্ষ। রেল ও খাসজমি নিয়ে কাড়াকাড়ি ॥ মগবাজার এলাকা এক সময় ছিল ডোবা-নালায় ভরপুর। এর মাঝখান দিয়ে রেল লাইন। ডোবা-নালার আশপাশের জমির কোন মালিকানা নেই। খাসজমি হিসেবে পরিচিত। এসব জমি নিয়ে এখন বিরোধের শেষ নেই। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন সে দলের স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে খাসজমি নিয়ে শুরু হয় কাড়াকাড়ি। বিরোধ। দু’পক্ষের মধ্যে সহিংসতার ঘটনাও আছে। সর্বশেষ মগবাজারে গুলি করে তিনজন হত্যাকা-ের নেপথ্যে খাসজমি নিয়ে বিরোধের তথ্য উঠে এসেছে। রেলের জমির দিকে ভূমিদস্যুদের আছে লোলুপ দৃষ্টি। এক কথায় এই এলাকার রেলের জমি নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি আর বাণিজ্য চলছে। যে যার মতো করে জমি দখল করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে। এ নিয়ে আছে কোন্দল আর উপকোন্দল। http://allbanglanewspapers.com/janakantha/ একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও খুনীদের আর উত্থান ঘটবে না সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে ‘খুনী’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, এত খুন করেও বিএনপি নেত্রীর (খালেদা জিয়া) রক্তের নেশা মেটেনি। মানুষকে হত্যা করে রক্তের হোলিখেলা তাঁরা পছন্দ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনদিন একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও খুনীদের উত্থান ঘটবে না, দেশের মানুষ তা ঘটতে দেবে না। বাংলাদেশের মাটিতে খুনীদেরও ঠাঁই হবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। কেউ-ই তা রূখতে পারবে না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অনেকেই আছেন যাঁদের কোন কিছুই ভাল লাগে না। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন না বলেই তাঁরা পাকিস্তানের দাসত্ব করতেই ভালবাসেন। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া তাঁদের একজন প্রধান দোসর। তিনি পাকিস্তানের দোসর। বাংলাদেশের মানুষ ভাল থাকলেই বিএনপি নেত্রীসহ তাদের অন্তর্জ¦ালা বাড়ে। পরাজিত শক্তির দোসর বলেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণ দেখলেই তাঁরা যাতনায় ভোগেন। যাঁরা পাকিস্তানের দাসত্ব করতে ভালবাসেন, তাঁদের বলব- সে দেশেই চলে যান। কেন বাংলাদেশে থেকে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন? এত মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছেন? শনিবার বিকেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিনের নামে উল্লাস প্রকাশ করায় খালেদা জিয়ার কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিকৃত চরিত্র ও নিকৃষ্ট মানসিকতাসম্পন্ন না হলে কেউ রক্তাক্ত ১৫ আগস্টের শোকাবহ দিনে মিথ্যা জন্মদিন পালনের নামে উল্লাস করতে পারে না। ১৫ আগস্টে উল্লাস করে বিএনপি নেত্রী (খালেদা জিয়া) একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসরদের বুঝিয়ে দেন তিনি এখনও তাদের সঙ্গে আছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন না। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হলেও হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকের উপস্থিতিতে তা রীতিমতো বিশাল জনসভায় রূপ নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে নগরীর শতাধিক থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে অসংখ্য মিছিলে বিশাল প্যান্ডেল ছাপিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অধিকাংশ জায়গা লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঘোষিত মাসব্যাপী কর্মসূচীর আজ রবিবার সমাপ্তি দিনে একই স্থানে ছাত্রলীগ আয়োজিত বিশাল ছাত্র গণজমায়েতে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, একেএম রহমতউল্লাহ এমপি, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, শেখ ফজলুর রহমান, মকবুল হোসেন, হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি, সাঈদ খোকন ও শাহে আলম মুরাদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নগর নেতা আবদুল হক সবুজ। ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় বঙ্গবন্ধুর খুনীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, স্বাধীনতাবিরোধীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার। জানতাম আমি দেশে ফিরলে আমার ভাগ্যে কী হবে। কিন্তু মৃত্যুকে পরোয়া না করে শুধুমাত্র দেশের মানুষের কল্যাণের চিন্তা করে আমি দেশে ফিরে এসেছিলাম। এরপর আমার ওপর বারবার হামলা করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২১ আগস্ট আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে। একটি সরকারের প্রত্যক্ষ মদদ ছাড়া এমন হামলা হতে পারে না। কিন্তু আমি মৃত্যুকে ভয় করি না, মৃত্যু ভয়ে ভীতও নই। আমার হারানোর কিছু নেই। বাবা-মাসহ সব হারানোর বেদনা বুকে পাথর চেপে রেখে দেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দেশের মানুষের এই অগ্রযাত্রা কেউ রোধ করতে পারবে না। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনপূর্ব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শত ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছি, বিচারের রায়ও কার্যকর করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, রায়ও কার্যকর হচ্ছে। আর এতেই ভীষণ মনোকষ্টে রয়েছেন বিএনপি নেত্রী (খালেদা জিয়া)। আর সে কারণেই আন্দোলনের নামে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে শত শত মানুষকে উনি পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। রাস্তাঘাট, গাছপালা কেটে উজাড় করে দিয়েছেন। অবলা গরুও তাঁর প্রতিহিংসা থেকে রেহাই পায়নি। একাত্তরের কায়দায় খালেদা জিয়া ও তাঁর পুত্ররা এদেশে রক্তের হোলি খেলেছে। কারণ মানুষের রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় তাঁর পছন্দ। কিন্তু এত রক্ত নিয়েও তাঁর (খালেদা জিয়া) রক্তের নেশা কাটে না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খুনী-বেইমান মোশতাকের দোসর ছিল জিয়াউর রহমান। আত্মস্বীকৃত খুনী রশিদ-ফারুকরা বিবিসিতে সাক্ষাতকার দিয়ে বলেছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ব্যাপারে তারা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছে এবং জিয়া তাদের গ্রীনসিগন্যাল দিয়েছে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর খুনী মোশতাক জিয়াকে সেনাপ্রধান করে। খুনীর সঙ্গে খুনীর মিল না থাকলে জিয়াকে সেনাপ্রধান করত না। এর জবাব কি দেবেন বিএনপি নেত্রী? আর মুক্তিযুদ্ধের সময়ও পাকিস্তানের হানাদারদের সঙ্গে জিয়ার যে সম্পর্ক ছিল তা খালেদা জিয়াকে লেখা এক পাকিস্তানী সামরিক অফিসারের চিঠিই তার প্রমাণ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত এবং ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে রক্ষা করেছে জেনারেল জিয়া। স্বাধীনতাবিরোধী ও একাত্তরের গণহত্যাকারী রাজাকার-আলবদর নেতাদের প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী ও উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন। আর তার স্ত্রী খালেদা জিয়া গণহত্যাকারী রাজাকার-আলবদর নেতাদের গাড়িতে লাখো শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী রশিদ-হুদাকে এমপি বানিয়ে সংসদে বসিয়েছিলেন এই খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, যারা আত্মস্বীকৃত খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পুরস্কৃত করে তারা যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানের সামরিক অফিসার হিসেবে জেনারেল জানজুয়া বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছিল। সেই জানজুয়ার মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া শোকবার্তা পাঠিয়েছিলেন। এতেই প্রমাণ হয় একাত্তরের পরাজিত শক্তির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কত গভীর। দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন- খালেদা জিয়া কি আদৌ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন। স্বাধীনতায় বিশ্বাস করলে একাত্তরের গণহত্যাকারী, স্বাধীনতাবিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের এভাবে মদত, আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পুরস্কৃত করতে পারতেন না। আসলে তিনি চান না স্বাধীন বাঙালী জাতির উন্মেষ ঘটুক। জিয়া-খালেদা জিয়ারা বাংলাদেশকে পাকিস্তানের একটি প্রদেশ বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু দেশের জনগণ তা হতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও ত্যাগের মহিমায় শিক্ষা নিয়ে দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্যাগ সবচেয়ে মহৎ কাজ। বঙ্গবন্ধু আমাদের ত্যাগের আদর্শ শিখিয়ে গেছেন। ভোগে নয়, ত্যাগের মাধ্যমে মহৎ অর্জন করতে হবে। আমি সেই জাতির পিতার সন্তান, সবচেয়ে বড় কথা আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক। জনগণের সেবক হয়ে তাদের কল্যাণ সাধনই আমার প্রধান ব্রত। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। কারণ দেশের জন্য এত আত্মত্যাগ কখনই বৃথা যেতে পারে না। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ করে বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলবই। তোফায়েল আহমেদ একাত্তরের মতো সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ১৫ আগস্টের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে এবং তারেক জিয়া ও তার হাওয়া ভবন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে খালেদা জিয়া বেসামাল হয়ে পড়েছেন। একজন খোকাকে (সাদেক হোসেন খোকা) সরিয়ে কিশোরকে (মির্জা আব্বাস) এনেও হালে পানি পাচ্ছেন না। আর তাঁর পোলা ফেরারি আসামি হয়ে বিদেশে বসে আবোল-তাবোল বকছে। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, জিয়া হত্যার পর পুত্র হয়েও তারেক জিয়া পিতার লাশ দেখেনি, যেস্থানে নিহত হয়েছিলেন সেই সার্কিট হাউসে কোনদিন যায়নি। স্বামী হত্যার পর খালেদা জিয়া যাকে নিজে স্বামীর হত্যাকারী বলেছেন তার কাছ থেকে বাড়ি-গাড়ি, অর্থ আদায়ের হিসাব-নিকাশেই ব্যস্ত ছিলেন। আসলে যাদের জন্মের ঠিক নেই তারাই ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করে। শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেই হত্যাকা-ের পর সাত দিনের মাথায় জিয়াকে সেনাপ্রধান করা হয়েছিল। আসলে জিয়া ছিল পাকিস্তানের সাইলেন্স (নীরব) এজেন্ট, আর তার পুত্র তারেক জিয়া প্রকাশ্য এজেন্ট। তিনি অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হলেও নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারী জিয়াউর রহমানের বিচার হয়নি। আর জিয়া কখনোই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। পাকিস্তানের আইএসআই’র এজেন্ট হয়েই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। http://allbanglanewspapers.com/janakantha/ রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন, পাক সেনাবাহিনীকে নওয়াজ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে সেনাবাহিনীর কাছে তার সরকারের দূরত্ব বজায় রেখেছেন। তিনি শুক্রবার বলেছেন, সেনাবাহিনী রাজনীতিতে নাক গলাক সেটি তিনি চান না। এর আগে বৃহস্পতিবার সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘাত মেটাতে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নেয় সেনাবাহিনী। খবর ডিএনএ অনলাইনের। সম্প্রতি শরীফের সঙ্গে কথা বলেছেন সেনাপ্রধান রাহিল শরীফ। তিনি বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন ইমরান খান ও তাহির-উল-কাদরির সঙ্গে। এদিনের এই বৈঠকে চলতি সঙ্কট কাটানোর কৈান রফা সূত্র বেরিয়ে আসার কিছুটা সম্ভাবনা তৈরি হলেও জামায়াতসহ অন্যান্য বিরোধী দল এতে সন্তুষ্ট হয়নি। তারা রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হওয়ার নিন্দা করেছেন। এরই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার কথা বলেন শরীফ। তিনি পার্লামেন্টে বলেন, সেনাবাহিনী রাজনৈতিক সঙ্কটে মধ্যস্থতা করার কথা বলেনি। তবে সেনাবাহিনী মধ্যস্থতা করুক অথবা না করুক বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা থামার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। শুক্রবারও বিরোধীরা বিশাল জনসমাবেশ করে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে। পাকিস্তানে গণতন্ত্র বার বার ব্যাহত হয়েছে সামরিক অভ্যুত্থান ও সেনা শাসনের কারণে। সেনাবাহিনী অবশ্য দাবি করেছে, অভ্যুত্থান তাদের লক্ষ্য নয়। রাজনৈতিক সঙ্কট কাটাতে মধ্যস্থতাই লক্ষ্য। বিশেষ সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা নেই একেবারেই।

APPEAL TO SHRI RAJNATH SINGH TO ARREST AND PROSECUTE   YOGI  ADITYANATH  FOR MAKING INFLAMMATORY STATEMENTS TO    VITIATE PEACE AND COMMUNAL HARMONY IN THE COUNTRY. 

        (CITIZENS FOR DEMOCRACY              
   D-7/2 Vasant Vihar, New Delhi 110057                                              
  Dt.31st August, 2014      
  PRESS STATEMENT
  APPEAL TO SHRI RAJNATH SINGH TO ARREST AND PROSECUTE   YOGI  ADITYANATH  FOR MAKING INFLAMMATORY STATEMENTS TO    VITIATE PEACE AND COMMUNAL HARMONY IN THE COUNTRY. 

Citizens For Democracy strongly condemns  the communal sensitive remarks made by Yogi Adityanath in a programme ‘Aap ki Adalat’  on ‘India TV’ on Saturday the 30th August,2014.  In that programme which is reported in various newspapers, he has publicly blamed the Muslim community for being responsible for instigating the riots.  He has publicly declared that where there are more than 35 persons Muslims, there is no place for non-Muslims.  He has publicly justified his provocative speeches in the past in which he said that if a Hindu is killed 10 Muslims will be killed in retaliation. He has publicly said  that if he has a ‘mala’ (rosary) in one hand, he also carries a ‘bhala’ (javelin) in the other and that as a ‘Sanyasi’  he has no qualm in punishing the evil elements.  He has publicly charged that ‘love jihad’ is a part of the strategy to turn India into a Muslim country. He has publicly said, casting aspersions on the loyalty and integrity of the Muslim community as well as giving a veiled threat to it,  “if you want to live here, you will have to respect Indian culture and traditions.  You cannot have your body here but mind in Pakistan .”   All the aforesaid statements made by Yogi Adityanath are  criminal offences   amounting  to generate hatred and enmity against the Muslim community.   He is straight away liable to be prosecuted  under  Section 153A of the Indian Penal Code which provides punishment of imprisonment which may extend to 3 years or with fine or with both to anyone who by words, either spoken or written promotes or attempts to promote , on grounds of religion, race or community or any other ground whatsoever, disharmony or feelings of enmity, hatred or ill-will between different religious, racial, language or caste or communities, and who commits any act which is prejudicial to the maintenance of harmony between different communities and which disturbs and is likely to disturb the public tranquility. Yogi Adityanath must be knowing that India has a Constitution and is meant to be governed by the  Rule of Law . As per  Indian Constitution nobody is entitled to take the law in his own hands in order to teach “other side” in the so called “language they understand”  or use “bhala’” (javelin)  in retaliation to punish the “supposedly” evil elements.  It is obvious that Yogi Adityanath is trying to polarize communities for electoral gains in view of the forthcoming elections in UP to serve narrow political interest for his party  that is BJP. Citizens For democracy  hopes  that Shri Rajnath Singh, the Home Minister,  will rise above the narrow sectarian political interests, and will prove true  to the oath he has taken to uphold the values and principles of the  Indian Constitution. Citizens For Democracy , therefore,   appeals to him  to take immediate action against Yogi Adityanath  by arresting  and prosecuting him as per law in the interest of maintenance of peace and communal harmony in the country.                                                                                         N.D.Pancholi                                                                       General Secretary   (M) 9811099532 Peoples Media Advocacy & Resource Centre- PMARC has been initiated with the support from group of senior journalists, social activists, academics and intellectuals from Dalit and civil society to advocate and facilitate Dalits issues in the mainstream media. To create proper & adequate space with the Dalit perspective in the mainstream media national/ International on Dalit issues is primary objective of the PMARC. You are receiving this message because you are a member of the community Dalits Media Watch. View this contribution on the web site A reply to this message will be sent to all members of Dalits Media Watch. Reply to sender | Unsubscribe

Sunday, 31 August 2014

मेरी कल्पना का भारत:

मेरी कल्पना का भारत:
आनंद तेलतुंबड़े
Posted by Reyaz-ul-haque on 8/22/2014 06:09:00 PM

आनंद तेलतुंबड़े
‘…मेरा आदर्श समाज एक ऐसा समाज है जो आजादी, बराबरी और भाईचारे पर आधारित हो।’–बाबासाहेब आंबेडकर यह एक अजीब विडंबना है कि अपने प्राकृतिक संसाधनों के मामले में भारत दुनिया का सबसे समृद्ध देश है लेकिन वही दुनिया के सबसे गरीब लोगों का घर है. एंगस मेडिसन के मुताबिक, सन 1600 के आसपास पूरी दुनिया के सकल घरेलू उत्पाद (जीडीपी) में भारत की हिस्सेदारी करीब एक चौथाई थी लेकिन इसके बाद उसमें गिरावट आने लगी. 1870 आते आते यह फिसल कर 12.2 फीसदी पर आ गई और आज दुनिया के जीडीपी में भारत की हिस्सेदारी महज 6 फीसदी पर आ पहुंची है. मेडिसन ने भारत के इस पतन के लिए, यहां औद्योगिक क्रांति के न होने को जिम्मेदार ठहराया. यह सही है, लेकिन अर्थव्यवस्था के सबसे बेहतर दिनों में भी, भारतीयों की बहुसंख्यक आबादी के हालात दूसरों के मुकाबले किसी भी तरह बेहतर नहीं रहे होते. क्योंकि उसे जाति व्यवस्था ने अनेक तरह से बहिष्कृत कर रखा था. अगर मेडिसन के अनुमान सही थे तो इससे सिर्फ इसी बात की पुष्टि होती है कि जीडीपी किसी देश के विकास का एक घटिया पैमाना है.  जाति व्यवस्था भारत की सबसे नुकसानदेह बीमारी है, जो उसे संयोग से लगी लेकिन जिसे उसके कुलीन तबके ने पूरी तरह सोच-समझ कर बढ़ावा दिया. पुराने दिनों में देशों की फौजी ताकत सीधे-सीधे अपनी आबादी पर निर्भर करती थी, जिसे एक संभावित सेना के रूप में देखा जाता था. लेकिन भारत में जाति व्यवस्था ने सिर्फ क्षत्रियों की एक छोटी सी आबादी को ही सेना के रूप में संगठित होने की इजाजत दी, भले ही उनमें लड़ने की क्षमता या प्रेरणा हो या न हो. दूसरी तरफ इसने बाकी सारे लोगों के हथियार रखने पर पाबंदी लगा दी. इस तरह भारत बाहरी लोगों के लिए एक आसान शिकार बना रहा कि कोई भी यहां आए, और इसे गुलाम बना दे. शुक्रिया जाति व्यवस्था का कि भारत का दर्ज इतिहास पराजय और गुलामी का इतिहास रहा है. जाति व्यवस्था ने सिर्फ अपनी और अपनी जरूरतों की परवाह करने वाली उच्च जातियों के कुलीनों के स्वार्थी चरित्र को और मजबूत बनाया. समकालीन समय में पूंजीवादी तौर-तरीकों ने इसे और भी उभार दिया है. इस आत्म-केंद्रिकता ने लोकतांत्रिक राज व्यवस्था के तहत एक स्टेट्समैन की भूमिका निभाने की उनकी काबिलियत को पूरी तरह नष्ट किया. ब्रिटिशों से सत्ता हस्तांतरण के बाद, यही कुलीन तबका शासक वर्ग बनकर जनता के खिलाफ साजिश करने लगा और इसने ऐतिहासिक गलतियों को सुधारने का मौका गंवा दिया. उन्होंने संविधान के बुनियादी औपनिवेशिक चरित्र को छुपाने के लिए उसे लोगों को अच्छी लगने वाली बातों से सजाया. संविधान की अगर कुछ अपनी पहचान है तो वह है उसका भाग चार, जिसमें राज्य के नीति निर्देशक तत्व दिए गए हैं. लेकिन उनको लागू करना अदालतों के अधिकार क्षेत्र में नहीं आता. इसी वजह से ये अब तक अनुपयोगी बने हुए हैं. औपनिवेशिक शासन के आइपीसी जैसे सब संगठनों और क्रियागत ढांचे को बरकरार रखा गया. जातियों के मामले में संविधान ने अस्पृश्यता को गैरकानूनी करार दिया लेकिन औपनिवेशिक समय से ही चली आ रही अनुसूचित जातियों के पक्ष में सकारात्मक भेदभाव की नीतियों के बहाने उसने जातियों को कानूनी शक्ल दे दी. असल में शासक वर्ग ने जाति के कीड़ों का एक पिटारा बनाया, ताकि जब वो चाहे, उसे खोला जा सके. हम देखते हैं कि यह पिटारा उन्होंने 1990 में खोल दिया. नए शासकों ने बड़े ही व्यवस्थित रूप में बुर्जुआ के हितों में नीतियां बनाईं और उन्हें बड़ी कुशलता से क्रांतिकारी लफ्फाजी में लपेट कर पेश किया. मिसाल के लिए, एक तरफ तो प्रधानमंत्री नेहरू ने सार्वजनिक रूप से भारत के अग्रणी पूंजीपतियों द्वारा तैयार किए गए बॉम्बे प्लान से अपने को अलग कर लिया था, लेकिन असल में जब उन्होंने पंचवर्षीय योजना का ऐलान किया, तो पहली तीन योजनाओं में इसी बॉम्बे प्लान के आंकड़ों को अपनाया. याद रहे यह योजना 15 वर्षीय निवेश की रूपरेखा थी. दुनिया को यह दर्शाया गया कि भारत समाजवादी रास्ते पर जा रहा है लेकिन असल में उसे पूंजीवाद के पक्ष में धकेला जा रहा था. इसी तरह जनता ने सबसे लंबे समय से जिस भूमि सुधार की उम्मीद लगा रखी थी, उसे बहुत सफाई से इस तरह लागू किया गया कि उससे केवल बड़ी आबादी वाली शूद्र जातियों के तबके से धनी किसानों का एक वर्ग तैयार हो सके. हरित क्रांति को अनाज की समस्या के समाधान के रूप अपनाया गया, लेकिन अनाज के अलावा उसने अमीर किसानों के इस वर्ग को मालामाल बनाया, पूंजीवादी रिश्तों का ग्रामीण भारत में प्रसार किया और दलितों को ग्रामीण सर्वहारा के स्तर पर गिरा दिया. बदकिस्मती से शासक अभिजात तबके की साजिशें बिना किसी रुकावट के अब भी जारी हैं. पिछले दो दशकों से सरकार नवउदारवादी आर्थिक नीतियों पर चल रही है, जिसने बुनियादी तौर पर राज्य के कल्याणकारी मुखौटे को उतार फेंका है और सारी प्रचलित सामाजिक सेवाओं को बाजार की निजी पूंजी के हवाले कर दिया है. आबादी के बहुसंख्यक हिस्से को नुकसान पहुंचाते हुए स्वास्थ्य सेवाओं और शिक्षा जैसी बुनियादी सेवाओं का भारी पैमाने पर व्यावसायीकरण हुआ है. पूरा का पूरा ग्रामीण भारत, जहां हमारी 70 फीसदी आबादी रहती है, गुणवत्तापरक शिक्षा से पूरी तरह कट गया है. तथाकथित विकास केवल थोड़े से ऊपरी वर्ग को फायदा पहुंचा रहा है और इसे देख कर तेजी से बढ़ रहा मध्य वर्ग उत्तेजित हो रहा है. निम्न वर्ग तक नवउदारवाद के फर्जी सिद्धांतों के मुहावरे के मुताबिक बस कुछ बूंदें ‘रिसते हुए’ पहुंच रही हैं. जबकि सरकार हर साल अमीरों को हजारों करोड़ रुपए बांट देती है, वहीं वह जनता को महज ‘कल्याणकारी’ योजनाओं और नए अधिकारों के नाम पर बहलाए रखती है, जो असल में उनको अधिकारहीन और अधिक निर्धन बनाए रखता है. ऊपर से जाति और संप्रदाय की पहचान को भी बढ़ावा दिया जाता है, ताकि उन्हें और भी कमजोर किया जा सके. एक ओर जबकि शहरी कुलीन तबके का इंडिया तेजी से अमेरिका बनता जा रहा है, जनता की व्यापक बहुसंख्या वाले भारत के हालात रसातल को छू रहे हैं. पूरी की पूरी नवउदारवादी व्यवस्था अपनी कल्पना के भारत के लिए काम करती है, जिसको मीडिया में काफी जोर शोर से पेश किया जाता है. व्यापक जनता की नजर से भारत की कल्पना शायद ही कोई करे. व्यापक जनता के लिए, भारत की कल्पना को महज एक दिवास्वप्न या खयाली पुलाव नहीं होना चाहिए, वरना वे यह भरोसा खो देंगे कि इसको व्यवहार में लाया जा सकता है. इस कल्पना को ठोस और व्यापक जनता की जरूरतों के मुताबिक जमीनी होना होगा. आज भारत की कल्पना बाबासाहेब आंबेडकर के आदर्श समाज के रूप में करने का कोई फायदा नहीं है. उनकी बात राह दिखाने वाली रोशनी हो सकती है, एक आदर्श जो हकीकत से इतना दूर है कि उसकी कल्पना भी करना मुश्किल हो.  मेरी कल्पना के भारत को अपने नजरिए में कुछ बदलाव करना होगा, जो वास्तव में आर्थिक वृद्धि और समृद्धि के मौजूदा लक्ष्यों का विरोधी नहीं है. मेरी कल्पना का भारत इस बात को समझेगा कि कंगाली और निर्धनता के दूर दूर तक फैले हुए समुद्र में इन लक्ष्यों पर बने रहना एक बिंदु के बाद नामुमकिन हो सकता है. इसलिए उस बिंदु तक पहुंचने से पहले इन बाधाओं को हटाना बेहद जरूरी है. इसलिए मेरी कल्पना का भारत लोगों को इस तरह बुनियादी रूप से सशक्त बनाने के लिए कदम उठाता कि वे नवउदारवाद की गाड़ी को उलट न दें, बल्कि वे इसे आगे धकेल सकें. इस बुनियादी सशक्तीकरण में निजी सशक्तीकरण, सामाजिक-आर्थिक सशक्तीकरण, सामाजिक-राजनीतिक सशक्तीकरण और सामाजिक-सांस्कृतिक सशक्तीकरण शामिल हैं. इनको क्रमश: साध्य के लिए जरूरी कदम ये हैं: स्वास्थ्य तथा शिक्षा; भूमि सुधार और रोजगार; न्यूनतम लोकतंत्र की बहाली; तथा रूढ़िवाद पर अंकुश लगाने और आधुनिकता को बढ़ावा देने की नीतियां. अगर भारत इन चार में से पहले दो पर भी ध्यान दे तो भी उसकी पूरी कायापलट हो जाएगी. स्वास्थ्य के मामले में मेरा भारत सार्वजनिक साफ सफाई रखेगा, सबको पीने का पानी प्राथमिकता के आधार पर मुहैया कराएगा और यह एक सार्वभौमिक सार्वजनिक वितरण प्रणाली स्थापित करेगा ताकि नियंत्रित मूल्यों पर अनाज तथा दूसरी खाद्य सामग्री की जरूरतें पूरी की जा सकें. इससे स्वास्थ्य संबंधी समस्याओं में अपने आप में भारी कमी आएगी. स्वास्थ्य बुनियादी देखभाल सभी भारतीयों के लिए मुफ्त होगी, जिसे सभी इलाकों में स्वास्थ्य केंद्रों की एक श्रृंखला के जरिए मुहैया कराया जाएगा. इन केंद्रों के पास आपातकालीन एंबुलेंस भी होगी. जटिल बीमारियों के इलाज के लिए समुचित दूरी पर स्थापित अस्पताल होंगे जिनके पास जरूरी उपकरण होंगे. ये सभी का मुफ्त इलाज करेंगे, जिसे आसान किस्तों वाली एक स्वास्थ्य बीमा योजना के तहत मुहैया कराया जाएगा. राज्य यह सचेत रूप से यकीनी बनाएगा कि किसी भी बच्चे पर अपने मां-बाप की अक्षमताओं का ठप्पा न रहे. यह सभी गर्भवती महिलाओं को पूरा पोषण और जन्म से पहले जरूरी सारी देखरेख मुहैया कराएगा, जिन्हें इसकी जरूरत है. यह सुनिश्चित करेगा कि सभी बच्चे स्वस्थ पैदा हों. वे अपने जन्म के बाद अठारह साल तक पड़ोस के स्कूलों में एक अनिवार्य, मानक शिक्षा की व्यवस्था के जरिए शिक्षा हासिल करेंगे, जिसे पूरी तरह राज्य चलाएगा. कथित ‘शिक्षा का अधिकार’ के तहत केजी से लेकर पीजी तक खड़े हुए, अनेक स्तरों वाले शिक्षा के बाजार को पूरी तरह बंद कर दिया जाएगा. उच्च शिक्षा की गुणवत्ता को कायम रखा जाएगा और यह मुफ्त में दी जाएगी या फिर राज्य भारी रियायतों के साथ उचित मूल्य पर इसे उपलब्ध कराएगा. लोगों के सामाजिक-आर्थिक सशक्तीकरण के लिए सारी भूमि का राष्ट्रीयकरण कर दिया जाएगा. एक तरफ जहां खेती योग्य जमीन को किसानों की सहकारी समितियों को दे दिया जाएगा जो वैज्ञानिक खेती के लिए जरूरी उपकरणों से लैस होंगी. दूसरी तरफ बाकी की जमीन को गैर खेतिहर आधारभूत संरचना तथा उद्योगों के विकास के काम में लाया जाएगा. स्थानीय लोगों की बुनियादी ऊर्जा जरूरतों को पूरा करने के लिए देश भर में सौर तथा पवन ऊर्जा जैसी कभी खत्म न होनेवाली ऊर्जा की व्यापक परियोजनाएं शुरू की जाएंगी. ग्रामीण बैंकिंग व्यवस्था के जरिए किसानों की सहकारी समितियों को उचित कर्जे मुहैया कराए जाएंगे. अपनी उपज से उपयोगी वस्तुएं बनाने के लिए इन समितियों को साथ मिल कर कृषि-आधारित और अन्य उद्योगों की स्थापना करने के लिए प्रोत्साहित किया जाएगा, जिनमें खेती की पैदावार के हर हिस्से से तरह तरह की उपयोगी वस्तुओं का उत्पादन किया सके. इसमें गैर खेतिहर आबादी को रोजगार दिया जाएगा. निर्माण उद्योग को इस तरह विकसित किया जाएगा कि इसमें शिक्षा व्यवस्था से निकले नौजवानों को लाभकारी तरीके से रोजगार दिया जा सके. सेवा क्षेत्र जनता के जीवन स्तर के भीतर से ही, उससे जुड़ कर विकसित होना चाहिए. एक बार जनता का बुनियादी सशक्तीकरण हो जाए और उसे अपनी लाभकारी गतिविधियों के लिए जरूरी बुनियादी ढांचा हासिल हो जाए तो जाति, वंश, धर्म, लिंग वगैरह के आधार पर होने वाले भेदभावों की ज्यादातर गुंजाइश खत्म हो जाएगी. इसी के साथ सकारात्मक भेदभाव की उस व्यवस्था का आधार भी खत्म हो जाएगा, जिसने केवल शासक वर्गों के हितों की ही सेवा की है और जनता को कमजोर किया है. खास तौर से जातियों को बनाए रखने वाले ढांचों और संस्थानों की व्यवस्थित रूप से पहचान करके उनको नष्ट करते हुए जातियों का पूरी तरह उन्मूलन किया जाएगा और जनता में प्रबोधन के लिए व्यापक शैक्षिक कार्यक्रम चलाए जाएंगे. जातियों को बरकरार रखने वाले मुख्य अपराधियों में से एक हमारी मौजूदा चुनावी व्यवस्था भी है, जिसमें सबसे ज्यादा वोट पाने वाले उम्मीदवार को विजेता घोषित किया जाता है. यह व्यवस्था इन जातीय पहचानों पर बड़े पैमाने पर निर्भर करती है. जनता का प्रतिनिधित्व यकीनी बनाने के लिहाज से यह पूरी तरह बेकार साबित हुई है और इसलिए इसको हटा कर यहां की जरूरतों के मुताबिक बनाई गई आनुपातिक प्रतिनिधित्व की व्यवस्था को स्थापित किया जाएगा. जनता का यह बुनियादी सशक्तीकरण भारत को विकास की एक दूसरी ही दुनिया में ले जाएगा जिसके बारे में हमारा अंधा शासक वर्ग कल्पना तक नहीं कर सकता. संसाधनों की कमी का हमेशा बनाया जानेवाला बहाना एक झूठ है. इसका इस्तेमाल करते हुए, हमारे शासक वर्ग ने साम्राज्यवादी हितों को पालने-पोसने वाली एक दलाल संस्कृति को बनाए रखा है. सरकार ने पिछले महज नौ सालों में 36 ट्रिलियन (36000000000000) रुपए कॉरपोरेट कंपनियों को बांटे हैं और उससे भी ज्यादा काला धन देश के बाहर जाने दिया है. भारत के पास सभी संसाधन हैं; कमी बस राजनीतिक इच्छा की है. उन्हें यह समझना चाहिए कि ये कदम कतई क्रांतिकारी नहीं है, बल्कि वे सब बुर्जुआ दायरे में ही आते हैं. यह हमारी बदकिस्मती ही है कि भारत की यह साधारण सी कल्पना भी आज क्रांतिकारी लगती है जो किसी को भी माओवादी कह कर जेल भिजवा देने के लिए काफी हो. (हिंदी अनुवाद आउटलुक साप्ताहिक में प्रकाशित. अनुवाद: रेयाज उल हक)

Mamata's minority vote bank becomes trump card for BJP

Mamata's minority vote bank game becomes BJP's trump card.
Excalibur Stevens Biswas
West Bengal power politics has been all about  minority vote bank for every party .Every party plays open to embrace the communal equation as key to power here whether it is Congress or Communists, but no one took this minority vote bank as a political agenda,as MK Gandhi used hindutva  in politics.Key to power in Bengal always remained the agenda of securing  28% muslim vote bank. Even before partition,long before the introduction to two nation theory,muslims played key role and led all the three interim governmnts supported by dalits.It was the original Dalit Muslim combine as we are aware of the set in the cow belt these days. Since the demographic readjustment,dalit population has been the victim of the partition and the dalit refugees have been scattered nationwide,the combination was broken. Muslims or Dalits in Bengal may not govern Bengal anymore and it reduced muslim politics as well as Dalit politics to subordination predestined and it made Bahujan Politics in Bengal quite irrelevant. Side effects of this communal identity politics turned Bengal into a communal furnace which further fuelled the traditional anti muslim sentiments amongst hindu communities. Simply,this communal politics is the trump card for extreme rightist, Sangh Pariwar and BJP,all of which have deep roots in Bengal since pre partition Hindu Mahasabha days which shattered the only existing Bahujan Samaj of combined Dalits,OBC,ST and minorities sustained for centuries until Hindu Mahasabha and Muslim league jointly broke it. Thus, without any effective wide ranged cadre based activism  Bengal is under Hindutva tsunami. Hindu Rastra was always the mission of the ruling castes and class in Bengal,underplayed during Marxist rule and now Sangh Pariwar is getting the passive support  of the  majority, dominant hindu voters who had been quite annoyed with Muslim Vote Bank politics. West Bengal was already a centre of communal tension till pre independence as well as post independence time and the undercurrents of monopolistic racial and communal discrimination has always been active under over displayed Bengali Nationalism. Every  politician misused  this 28% Muslim vote bank without doing anything in Muslim favor, but highlighting the age old communal racial divide. During Marxist rule secular Bengali nationalism just  kept  on the demographic balance which incidentally  aborted  communal tension and classes for thirty five years. Muslim vote bank was captured by the Marists all the way since late sixties. Mamata adopted ultra communal tools to dethrone the Marists and succeeded to set yet another political equation high voltage based on ultra communal identity. As soon as Mamata came to power, she tried her best  to woo the muslim voters skipping the much needed economic empowerment of the people.Her politics is all about the sustenance of the subordinate  28% muslim vote bank and her rhetorics also annoyed the thinking Muslim intelligentsia not to mention the dominant Hindu psyche. IPS writer Nazrul Islam exposed her fraud for the first time as  she broke all the limits. The way she was throwing away subsidies for muslims and the way she started salary system for Imams in Masjid it enraged many Hindus as well as a conscious section of the muslims as they discovered that Muslims are being misused and getting nothing. Hindus in Bengal openly began asking,"What crime did our Purohits  that they were deprived of this system!!!!". Mamata did sense it but tried to  show off aggressive secular stance. The way she declared 5 days` holiday for Durga Puja purpose. The chief minister personally, all her ministers,MPs and MLAs and other top party leaders became ultra religious. Invoking the religious icons Mamata made politics mixed with religion. She tried her best to attend the opening ceremonies at puja mundops, trying to show that she is hardcore Hindu.It did not please either Hindus or the Muslims anyway. But her propaganda as being secular was exposed and she claimed the popular title of Mamata Begum among the hindus. Right now in Bengal, Mamata's muslim vote bank politics has  enraged the Hindus so much so that it polarised the entire population on communal line which is the advantage for the rightist Sangh Pariwar and it is in harvesting mode as they always  want to convert Bengal as a Hindu land long before Sangh Pariwar accomplished the Hindu Nation agenda. It is so much so worsened that  people openly explain how unhappy they  are with the muslims. It is all time echoes of the Hindutva voice which claim that mostly  Muslim communities are involved in criminal acts. The  well known Muslim  areas in kolkata are specifically marked hostile as Beckbagan,Topsia, Metiabrudge,Park Circus and made well known for criminal background.Induction of criminal element in power corridor worsened the communal harmony. Eventually,the entire cadre base of the Left,ruling TMC and Cogress crossed the fence and joined the Hindutva band wagon as BJP arrived in a position where it may challenge anywhere any party all over the 282 assembly seats. It did further influence the people on communal line and people got simply shforonized. Everyone knows BJP's hardcore politics targeted  against the muslims and its goal for Hindu Rashtra.Mamata reduced the majority Hindu population in Bengal as much as communal as they look forward to BJP as their saviour who would bring justice to the deprived Hindus. As people are now in totally in dilemma  why they brought her to the power because after her arrival Bengal's conditions got worsened, Job Ratio fell, criminal activities rose, law and order totally dissolved and most importantly, it`s the Mafia syndicates which do control the things in the streets as well as day today life. People do know about BJP's policy of hard state, and the facts of Gujarat Genocide during lok sabha but they feel helpless under Mamata regime. Thus,people are now joining BJP, and also those who weren't appraised in TMC ,who were the initial members while building up the party and later  became underdogs while the newcomers got the promotion. Same thing happens with the progressive  communists as they were afraid of TMC ruling terror and feel insecure everywhere. Simply  they all,cadres as well as leaders are joining BJP as they know BJP is a national party and it can provide them protection as they are in the central government. So the game that Mamata played totally turned against her and it became trump card for BJP and TMC is on its way towards extinction. What Mamata is trying to survive is a proposed alliance of LEFT TMC which eventually would enhance BJP`s chances in the next elections and would divide Bengal further on Communal lines.